জামালগঞ্জ সংবাদদাতা :
জামালগঞ্জে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি থেকে মাটিতে টানা তারে বিদ্যুৎ ষ্পৃষ্টে ১০ম শ্রেণীর স্কুল ছাত্র মো: শাবেজ মিয়ার মর্মান্তিক মৃত্যুর সংবাদ বিভিন্ন পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে প্রকাশের পর দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জামালগঞ্জ সরকারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র মো: শাবেজ মিয়ার মর্মন্তিক মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করতে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও জামালগঞ্জ সরকারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কে দিয়ে তদন্ত কমিঠি গঠন করে দ্রুত প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন। পরিবারের একমাত্র ভবিষ্যৎ ভরসা শিক্ষার্থী শাবেজ মিয়া কে হারিয়ে এখনো কান্না থামছেনা তার পিতা-মাতা ও স্বজ্জনদের।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৬ সেপ্টেম্বর আনুমানিক বেলা ১১ ঘটিকায় মো: শাবেজ মিয়া তার গ্রামের বাড়িতে ছোট নৌকা নিয়ে বাড়ির পাশের নিজস্ব একটি ছোট ডোবায় মাছ থাকার বাঁশ-কাঠা দিতে যায়। দিন গড়িয়ে বিকেল হলেও শাবেজ ঘরে ফিরছেনা দেখে ঘরের লোকজন তাকে খুঁজতে থাকে। গ্রামের কোন বাড়িতে তার সন্ধান না পেয়ে বাড়ির পাশের ডোবায় তাদের ছোট নৌকাটি বিদ্যুতের খঁটির পাশে দেখে লোকজনের মনে সন্ধেহ জাগে। গ্রামের লোকজন নিয়ে তার বড় ভাই কোমর পানি ভেঙ্গে বিদ্যুতের খুঁটির কাছে নৌকা ধরতে গেলে তাকে বিদ্যুৎ শক করলে আহত অবস্থায় শাবেজের বড় ভাইকে উদ্ধার করে গ্রামবাসী জামালগঞ্জ স্বস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দেন। এ ঘটনায় নিহতের অপর ভাই আবার নৌকার কাছে যেতে চাইলে তিনিও বিদ্যুতের শকে আহত হলে তাকেও গ্রামবাসী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দিয়ে জামালগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে ফোন দেন। এলাকায় অভিযোগ উঠেছেছিল স্থানীয় বিদ্যাুৎ অফিসের সময় ক্ষেপন করে ওই গ্রামের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করলে গ্রমবাসী বিদ্যুতের খুঁটির টানা তারের কাছে পানিতে নেমে শাবেজ কে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন। পল্লী বিদ্যুতের লোকজন গিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে তাদের দায় এড়াতে রাতেই লাশ দাফন করে। ঘটনাটি ব্যাপক ভাবে জানা জানি হলে এলাকার ও নিহতের বিদ্যালয়ের সহপার্টিদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। নিহতের বড় দুই ভাই জামালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিলেও বিদ্যুৎ বিভাগের কোন লোকজন তাদের খোঁজ খবর নেয়নি বলে জানিয়েছেন তারা।
এদিকে নিহতের স্কুলের সহপাঠিসহ শিক্ষার্থীরা চরম ক্ষোব্ধ হয়ে বিদ্যালয়ের প্রাত্যহিক সমাবেশে প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ শিক্ষার্থীদের নিয়ে মৃতের রূহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতের পর নিহতের সহপাটি ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিলে প্রধান শিক্ষক তাদের কে ধৈর্যসহকারে শান্ত থাকতে বলেন। এছাড়াও জামালগঞ্জ পল্লী বিদ্যুত বিভাগের লোকজনের উপর দায়ীত্ব অবহেলাসহ নীতিমালা কে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে বিভিন্ন বাসা বাড়ি থেকে সাইট লাই দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে স্থানীয়দের মুখে মুখে অভিযোগ উঠেছে। অবশ্য বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন তাদের কোন গাফিলতি নেই বলে অস্বীকার করেছেন।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম আল ইমরান বলেন, বিভিন্ন মিডিয়ায় অমি বিষয়টি জেনে শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবরে মর্মাহত হয়েছি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও জামালগঞ্জ সরকারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কে দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে বলেছি। প্রতিবেদনের পর পরবর্তি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
তদন্ত কমিটির প্রধান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহবুবুল কবীর বলেন, ইউএনও স্যারের লিখিত নির্দেশে বিদৃ্যুৎ ষ্পৃষ্ঠে শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনা তদন্তের কাজ চলছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবো। প্রতিবেদন দাখিলের পর বিস্তারিত জানতে পারবেন।