স্টাফ রিপোর্টার::
জয়কলস উজানী গাও স্কুল ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ তিন যোদ্ধার বদলে দুই যোদ্ধাকে বাদ দিয়ে এক যোদ্ধার সমাধীসৌধ সংরক্ষণের প্রতিবাদে সুনামগঞ্জ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি পরিষদ নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে। শুক্রবার রাতে সংগঠনের পৌরবিপণিস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে এক জরুরিসভায় তিন যোদ্ধার স্মৃতি সংরক্ষণে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে স্মারকলিপি প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ গুলোকে সম্পৃক্ত করে তিন যোদ্ধা শহীদ তালেব, কৃপেন্দ্র ও জ্ঞাতনামা আরেক যোদ্ধার স্মৃতি সংরক্ষণ ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সংরক্ষণে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। বক্তারা বলেন, যারা জয়কলস উজানীগাও শহীদ সমাধীসৌধে শায়িত অন্য ধর্মের যোদ্ধার স্মৃতি মুছে ফেলতে চায় তারা মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা বিরোধী শক্তি। তাদের চিহ্নিত করে রাখতে হবে। তাদের এই চেষ্টা মুক্তিযুদ্ধের বিকৃতি ও সঠিক ইতিহাস মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র।
মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি পরিষদের আহ্বায়ক যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এমরানুল হক চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত জরুরি সভায় সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা মালেক হুসেন পীর, অ্যাডভোকেট সালেহ আহমদ, দেওয়ান ইমদাদ রেজা চৌধুরী, অ্যাডভোকেট কল্লোল তালুকদার চপল, ওবায়দুর রহমান কুবাদ, প্রভাষক এনামুল কবির, শামস শামীম, শাহেদ আহমদ, গাজী আফজাল, জাকির হোসেন, সুফি সুফিয়ান, শামীম আহমদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, জয়কলস উজানীগাও স্কুল ক্যাম্পাসের গোরস্তানে তিন শহীদ শুয়ে আছেন। মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতিনিধিত্ব করছে এই তিন যোদ্ধার সমাধীসৌধ। সম্প্রতি তিন যোদ্ধার বদলে দুই যোদ্ধাকে বাদ দিয়ে একজনের স্মৃতিসংরক্ষণ করায় মুক্তিযুদ্ধের প্রতিষ্ঠিত সত্য ইতিহাসটি বিকৃত ও মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। একটি চিহ্নিত স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠী একজন যোদ্ধার অস্তিত্ব স্বীকার করে অন্য দুইজনের স্মৃতি মুছে ফেলার চেষ্টা করছে। তাদের এই অপচেষ্ঠা আইনীভাবে মোকাবেলা করার প্রত্যয় করেন নেতৃবৃন্দ। একই সঙ্গে সুনামগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদকেও এই প্রতিষ্টিত সত্যটি রক্ষায় তিন যোদ্ধার অনন্য সমাধীসৌধ সংরক্ষণ ও সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।
পাশাপাশি সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জের রূপাবালি গ্রামে পাকিস্তানের নেতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ’র নামে প্রতিষ্টিত মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ মেমোরিয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনে প্রশাসনের বিভিন্ন স্থরে যোগাযোগ স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। স্বাধীনতাবিরোধী দেশের নেতার নামের বদলে মুক্তিযোদ্ধাদের নামে বিদ্যালয়টি নতুন করে নামকরণের জন্য সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে আহ্বান জানানো হয়। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে স্মারকলিপি প্রদানেরও সিদ্ধান্ত নেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।