হাওর ডেস্ক::
বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতকে এগিয়ে নেওয়ার অন্যতম অগ্রপথিক আইয়ুব বাচ্চু আর নেই। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে অচেতন অবস্থায় ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জরুরি বিভাগের নার্স হাবিবুর রহমান জানান।
ব্যান্ড দল এলআরবির লিড গিটারিস্ট ও ভোকালিস্ট আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন একাধারে গীতিকার, সুরকার এবং প্লেব্যাক শিল্পী। বাংলাদেশে তার বিশাল ভক্তগোষ্টী রয়েছে।
চার দশক বাংলাদেশের তরুণদের গিটারের মূর্ছনায় মাতিয়ে রাখা রকস্টারের বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। গিটার বাদনে তার খ্যাতি ছিল পুরো ভারতীয় উপমহাদেশেই।
আইয়ুব বাচ্চুর কণ্ঠে ‘সেই তুমি কেন এত অচেনা হলে’, ‘ফেরারী এই মনটা আমার’, ‘আমি কষ্ট পেতে ভালোবাসি’, ‘একদিন ঘুমভাঙা শহরে’, ‘চল বদলে যাই’, ‘এখন অনেক রাত’, ‘হাসতে দেখ গাইতে দেখ’র মত বহু গান শ্রোতাদের হৃদয়ে বাজবে বহুদিন।
সকালে তার মৃত্যুর খবরে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেমে আসে শোকের ছায়া। ভক্ত শ্রোতাদের পাশাপাশি সংগীত শিল্পীদের অনেকেই ছুটে আসেন হাসপাতালে।
এলারবির সদস্য শামিম বলেন, বাচ্চু বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। হৃদরোগের কারণে সপ্তাহ দুই আগেও একবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। বাসায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে সকালে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
স্কয়ার হাসপাতালের মেডিকেল সার্ভিসের পরিচালক মির্জা নাজিমউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, “সকালে উনার হার্ট অ্যাটাক হয়। সকাল সোয়া ৯টার দিকে তার ড্রাইভার তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তার আগেই তার মৃত্যু হয়।”
গত ১৬ অগাস্ট নিজের জন্মদিনে আইয়ুব বাচ্চু গ্লিটজকে বলেছিলেন, চার দশকের সংগীত জীবনে তার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি শ্রোতাদের উচ্ছ্বাস, মানুষের ভালোবাসা। বলেছিলেন একটি আত্মজীবনী লেখার পরিকল্পনার কথা।
“ঈদের পরে কাজটা শুরু করব। ঢাকা ছেড়ে কোথাও চলে যাব যেখানে কোনো ফোন থাকবে না, ইন্টারনেট থাকবে না। নদীর মাছ খাব, ভাত খাব, পানি খাব-এমন জায়গায় চলে যাবো। লেখার কাজ শেষ করে ঢাকায় ফিরব।”
নানা উত্থান, পতন পেরিয়ে জীবনের এই পর্যায়ে এসে জীবন নিয়ে এই শিল্পীর উপলব্ধি জানতে চেয়েছিল গ্লিটজ। বাচ্চু সেদিন বলেছিলেন, বহুদূর যেতে হবে। এখনো পথের অনেকটা বাকি।
সাংস্কৃতিক সংগঠক নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, শুক্রবার জুমার পর জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে আইয়ুব বাচ্চুর জানাজা হবে। তারপর মরদেহ রাখা হবে হিমঘরে।
সন্তানরা বিদেশ থেকে ফিরলে শনিবার চট্টগ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে জনপ্রিয় এই ব্যন্ড শিল্পীকে।