অনলাইন:
২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হওয়ার পর দলের নেতারা তাকে দল থেকে সরে দাঁড়াতে দলের মহাসচিবের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছে। মূলত আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার জন্যেই তারেককে অপসারণ চাইছে নেতারা।
এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা চাপও দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ড. আব্দুল মঈন খান, লে. জে. (অব) মাহবুবুর রহমানসহ খালেদাপন্থী নেতারা। তারা সরাসরি স্বাক্ষাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের সঙ্গে পরামর্শ করে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তও দিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নেতা জানায়, গত ১০ অক্টোবর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের পরে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে মাহবুবুর রহমান বলেছেন, ‘এই রায় নিয়ে যে সমালোচনা বিএনপি করছে তা ঠিক আছে। তবে যেহেতু আইনী লড়াইয়ে বিএনপি অংশগ্রহণ করেছিল এবং প্রতিযোগিতা করে হেরেছে, তাই আপাতত তারেক রহমানকে বিএনপির চেয়ারপারসনের পদ থেকে সরানো যুক্তিযুক্ত হবে’। যুক্তি হিসেবে দলের মহাসচিবকে তিনি বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে এটা গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা যে কথাগুলো বলছি, বিচার নিরপেক্ষ হয়নি কিংবা আদালত পক্ষপাতভাবে রায় দিয়েছে- সেটা আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না। এজন্য বিএনপির ভাবমূর্তির স্বার্থেই তারেক রহমানকে এখন আপাতত নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত’।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান ভারতীয় দূতাবাসের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকে ব্যক্তিগত মতামত হিসেবে কূটনৈতিকদের বলেছেন, তিনিও মনে করেন এখন তারেকের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান থাকা উচিত নয়। এর দুটি কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, প্রথমত- ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলার রায়। অন্যটি হলো- দীর্ঘদিন ধরে তারেকের বিদেশে অবস্থান। তিনি মনে করেন, এই সংকটকালীন সময়ে এমন একজন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দরকার যাকে সার্বক্ষণিক পাওয়া যায়।
আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় পর্যায়ে তারেককে নিয়ে যে অস্বস্তি ও আপত্তি তৈরি হয়েছে তা কারো অজানা নয়। তবে দলের অন্যান্য নেতাদের মতো মির্জা ফখরুল, মওদুদ আহমেদের মতো নেতারাও আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা পেতে দলীয় প্রধানের ভূমিকা থেকে তারেক রহমানের অপসারণ চায়। এখন শুধু তারেকের কাছে এ প্রস্তাব পৌঁছানো বাকি।