বিশেষ প্রতিনিধি::
হাওরের পানি দ্রুত কমছে। ফলে সংকুচিত হয়েছে মাছের চলাচল। গ-িবদ্ধ পথ দিয়ে মাছ এখন নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করছে। এ কারণে কৌশলী মৎস্যজীবিরা মাছের বংশ নিধনকারী কারেন্ট জাল পেতে মাছ ধরছে। এতে গণনিধন হচ্ছে মাছের। এই অবস্থায় একশনে নেমেছে জেলা মৎস্য বিভাগ। গতকাল মঙ্গলবার চার উপজেলায় প্রায় ৮ লক্ষ টাকার ৩ লাখ ২ হাজার ৫০০ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে তা আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এখন থেকে কয়েকদিন একটানা অভিযান চলবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে এতদিন বিস্তৃত হাওরে পানি বেশি ছিল। মাছের যাতায়াত পথও ছিল বিশাল। বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করতো মাছ। ফলে হাওরের জেলেরা মাছ তুলনামূলক কম পেতো। কিন্তু এখন পানি কমতে শুরু করায় মাছের চলাচল পথ সংকুচিত হয়ে পড়েছে। নির্দিষ্ট এলাকায় অবস্থান করছে মাছ। যে কারণে চতুর জেলেরা নির্দিষ্ট স্থানে কারেন্ট জাল পেতে মাছের গণনিধনযজ্ঞ চালাচ্ছে। তাছাড়া স্থানীয় বাজারগুলোতেও কারেন্ট জালের বিক্রি বেড়ে গেছে। এভাবে প্রতিদিন মৎস্য নিধন হলে হাওরে মাছের উৎপাদন ব্যাহত হবে বলে সংষ্টিরা জানান। এ কারণে উদ্বিগ্ন মৎস্য বিভাগ প্রতিটি উপজেলা মৎস্য অফিসকে নির্দিষ্ট এলাকায় মৎস্য নিধনবিরোধী অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছে। তারা হাট বাজারে জালের দোকানে অভিযান পরিচালনাসহ হাওরেও মৎস্য নিধন বিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে।
জানা গেছে গতকাল মঙ্গলবার তাহিরপুা, জামালগঞ্জ, শাল্লা ও বিশ্বম্ভরপুরে বিভিন্ন স্থানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে মৎস্য নিধন অভিযানে নামে মৎস্য বিভাগ। অভিযানে সবচেয়ে বেশি কারেন্ট জাল জব্দ করায় শাল্লা থেকে। শাল্লায় প্রায় দুই লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়। তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর ও ধর্মপাশা থেকেও এক লাখ মিটারেরও বেশি জাল পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৮ লক্ষ টাকা। এভাবে বিভিন্ন স্থানেই অভিযানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল হক বলেন, হাওরের পানি কমতে শুরু করায় মাছের চলাচলও সংকুচিত হয়ে গেছে। এই সুযোগে মাছের গণনিধন যজ্ঞ চালানো হচ্ছে। এভাবে চললে হাওরের মৎস্য উৎপাদনে বিরাট প্রভাব পড়বে। তাই আমরা এখন মাছ রক্ষায় বিশেষ অভিযান চালাচ্ছি। একটানা কয়েকদিন এই অভিযান চলবে বলে জানান তিনি।