হাওর ডেস্ক ::
বছরের প্রথমদিন সারাদেশে একযোগে বই উৎসব পলন করা হয়ে থাকে। তবে এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে নির্ধারিত দিনে এই উৎসব পালনের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয় চায় বছরের প্রথম দিনেই (১ জানুয়ারি) বই উৎসব পালন করতে। এরই মধ্যে ১ জানুয়ারি বই উৎসব এবং ২৬ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে নতুন বই উদ্বোধনের প্রস্তাব করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব আবু আহমদ ছিদ্দীকী জানান, প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো বই উৎসব সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন হলে, ১ জানুয়ারি বই উৎসব করা হবে। অথবা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেদিন উৎসব পালন করতে চান, সেদিনই সারাদেশে একযোগে বই উৎসব করা হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর একদিন পর ১ জানুয়ারি বই উৎসবের দিন। নির্বাচনের পরের দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তবে ২ জানুয়ারি খোলা থাকবে। ফলে প্রধানমন্ত্রী চাইলে সেদিনও উৎসব করা সম্ভব।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দেশে বই উৎসব কবে হবে, তা ঠিক করতে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সরকার যেদিনই বই উৎসব করুক না কেন, কোনও সমস্যা হবে না।’ আগামী ১৪ ডিসেম্বরের আগেই সব বই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে যাবে বলেও জানান নারায়ণ চন্দ্র সাহা।
রেওয়াজ অনুযায়ী প্রতিবছর ৩০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বই উৎসের উদ্বোধন করেন। এরপর ১ জানুয়ারি দেশব্যাপী বই উৎসব পালন করা হয়। বছরের প্রথম দিন শিক্ষামন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে এই উৎসবের সূচনা করেন। আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী বই উৎসব পালনের অনুমোদন দিলেও, ১ জানুয়ারি উৎসবের উদ্বোধন কে করবেন, তা নিশ্চিত হতে পারেনি শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী এর আগে জানিয়েছিলেন, ক্ষমতায় যে-ই আসুক ১ জানুয়ারি বই উৎসব পালন করতে কোনও সমস্যা হবে না। যদিও এখনও এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনও নির্দেশনা জারি করেনি শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ শিক্ষাবর্ষের চার কোটি ২৬ লাখ ১৯ হাজার ৮৬৫ শিক্ষার্থীর জন্য ৩৫ কোটি ২২ লাখ কপি পাঠ্যবই ছাপার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বিনামূল্যে এসব বই বিতরণ করা হবে। আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে ৯৯ শতাংশ বই ছাপার কাজ শেষ হবে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা যায়, প্রাক-প্রাথমিকের জন্য ৬৮ লাখ ৫৬ হাজার ২০ কপি, প্রাথমিকের জন্য ৯ কোটি ৮৮ লাখ ৮২ হাজার ৮৯৯ কপি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষায় ২ লাখ ৭৬ হাজার ৭৮৪ কপি, ইবতেদায়ির জন্য ২ কোটি ২৫ লাখ ৩১ হাজার ২৮৩ কপি, দাখিল মাদ্রাসার জন্য ৩ কোটি ৭৯ লাখ ৫৮ হাজার ৫৩৪ কপি, মাধ্যমিক (বাংলা ভার্সন) ১৮ কোটি ৫৩ হাজার ১২২ কপি, ইংরেজি ভার্সনের ১২ লাখ ৪৭ হাজার ৮২৬ কপি, কারিগরির শিক্ষার্থীদের জন্য ১২ লাখ ৩৫ হাজার ৯৪৮ কপি, এসএসসি ভোকেশনালের জন্য ১ লাখ ৪৩ হাজার ৮৭৫ কপি, ব্রেইল বই ৫ হাজার ৮৫৭ কপি ও সম্পূরক কৃষির জন্য (ষষ্ঠ থেকে নবম) ১ লাখ ২৪ হাজার ২৬১ কপি বই ছাপা হচ্ছে।