স্টাফ রিপোর্টার::
তুমুল টেনশনে ফেলে দেওয়া মহাজোট প্রার্থী এডভোকেট পীর মিসবাহর প্রতিদ্বন্ধি দুই প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মতিউর রহমান ও মেজর ইকবাল পুত্র ইনান ইসমাম চৌধুরী তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এই দুইজন নির্বাচনে থাকলে মহাজোট প্রার্থী পীর মিসবহার বিজয়ের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ ছিল বলে মনে করেন পর্যবেক্ষকরা। এখন এই দুই জনপ্রিয় প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় অনেকটা নির্ভার পীর মিসবাহ। নানাভাবে দুই প্রার্থীকে বসাসে শীর্ষস্থান থেকে ‘প্রেসার’ দিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করানো হয় বলে জানা গেছে।
তবে তার সঙ্গে এখন প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে আছেন বিএনপি মনোনীত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী এডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ। ফজলুল হক আসপিয়া এই আসনে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত। গত চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে তিনি নির্বাচনী আসনে নানা উন্নয়নের পাশাপাশি জেলা মন্ত্রী হিসেবে তিনি ওই সময় জেলার অবকাঠামো উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন।
এডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে নানা কাঠখড় পুড়িয়ে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে তাকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি মতিউর রহমান ও সাবেক প্রভাবশালী নেতা ও মন্ত্রী প্রয়াত মেজর ইকবালের পুত্র ইনান ইসমাম চৌধুরী। দুই প্রার্থীরই নিজস্ব ভোট ব্যাংক থাকায় তাদের নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তায় ছিলেন পীর মিসবাহ। তাই তাদেরকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করাতে ব্যক্তিগত যোগাযোগ বাড়ান তিনি। কিন্তু এতে কাজ না হওয়ায় তিনি ঢাকা থেকে শীর্ষ রাজনীতিবিদ দিয়ে চাপ সৃষ্টি করে মনোনয়ন প্রত্যাহার করাতে বাধ্য করেন বলে জানা গেছে। এই দুই প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় এখন চাপমুক্ত পীর মিসবাহ নতুন করে শক্তিশালী প্রার্থী এডভোকেট ফজলুল হক আসপিয়াকে নিয়ে টেনশনে আছেন। ফজলুল হক আসপিয়ার হাজার হাজার নেতাকর্মী আছে নির্বাচনী এলাকার তৃণমূলে। দুইবারের নির্বাচিত সাংসদ থাকায় এখনো তার বিশ্বস্থ কর্মী বাহিনী রয়েছে। যারা তার পক্ষে কাজ করতে মাঠে নেমেছে। অন্যদিকে এখনো মহাজোটের শরিকদল আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠণগুলো মহাজোট প্রার্থী এডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ’র পক্ষে মাঠে নামেনি। যুবলীগ কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল প্রস্তুতিসভা করেছে। এই সভায় উপস্থিত ছিলেন পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ। আওয়ামী লীগ মাঠে আন্তরিকভাবে কাজ না করলে এডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহকে নির্বাচনী বৈতড়ণি পাড়ি দিতে সমস্যা হবে বলে মনে করেন রাজনিতিকরা। তাছাড়া ক্ষমতায় থাকার ৫ বছরের মধ্যেও এডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ তৃণমূল আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে কোন ভূমিকা রাখেননি বলে অভিযোগ আছে। অনেক দরিদ্র পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সহায়তা চেয়েও তার কাছ থেকে সহায়তা পাননি বলে তাদের অভিযোগ ও ক্ষোভ রয়েছে।
মতিউর রহমানের প্রার্থিতা প্রত্যাহার প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম সাবেরিন সাবু বলেন, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মতিউর রহমান মহোদয়ের পক্ষে মনোনয়ন প্রত্যাহারের আবেদন করেছি আমরা। আওয়ামী লীগ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ তাকে ডেকে নিয়ে স্বান্তনা দিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন।
অপর মনোনয়ন প্রত্যাহারকারী ইনান ইসমাম চৌধুরী প্রিয় বলেন, মহাজোটের স্বার্থে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশে আমি মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছি। তবে এ বিষয়ে আমার অনেক কিছু বলার থাকলেও ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও বলতে পারছিনা।