বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের ১৩টি কেন্দ্রে আ.লীগ-বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও মৃদু সংঘর্ষের কারণে কিছু সময়ের জন্য ভোটগ্রহণ স্থগিত থাকলেও একটি কেন্দ্রে এখনো পুরনায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়নি। দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের কলাউড়া ডিগ্রি মাদ্রাসা কেন্দ্রে জামায়াত-বিএনপির সঙ্গে স্থানীয় আ.লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের পর ভোটগ্রহণ স্থগিত আছে। তবে অন্য কেন্দ্র গুলোতে কিছুক্ষণ পর থেকেই ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
রবিবার সকাল ৮টা থেকে জেলার ৬৬৮ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হয়। সকালে ভোটারের উপস্থিতি কম থাকলেও দুপুরের দিকে কিছুটা বাড়ে। তবে শুরু থেকেই নারী ভোটারদের উপস্থিতি বেশি ছিল।
এদিকে ভোট চলাকালে সুনামগঞ্জ-১ আসনের ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইর রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের গোলকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে আ.লীগ বিএনপির নেকার্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বেলা ১১ টার দিকে কিছুক্ষণ ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকার পর আবারও শুরু হয়েছে।
সুনামগঞ্জ-২ আসনে সুজানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আনোয়ারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাটিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে সকাল ১১টার দিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতার্কীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় অন্তত ১০জন আহত হন। পরে পুলিশ, বিজিবিসহ স্ট্রাইকিং ফোর্স গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় ৩০ মিনিটের মতো ভোটগ্রহণ স্থগিত থাকলেও পরে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। সুনামগঞ্জ-৫ আসনের দোয়ারাবাজার উপজেলার কলাউড়ার ডিগ্রি মাদ্রাসা কেন্দ্রে আ.লীগ-বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো ভোটগ্রহণ বন্ধ আছে। পুলিশ, বিজিবিসহ অন্যান্য বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এই আসসের চরমহল্লা কয়েদির চর মাদ্রাসা কেন্দ্রে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের হামলায় আওয়ামী লীগের ৫জন নেতাকর্মী আহত হয়ে সিলেট ওসমানীতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই আসনের লামাসানিয়া মাদ্রাসা, নরসিংপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও টেংরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় ভোটগ্রহণ স্থগিত করার আধা ঘন্টা পর আবারও চালু হয়েছে।
সুনামগঞ্জ-৩ আসনের জিবদারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুরাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ধনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় কেবল ধনসপুরে দুপুর ১২ থেকে ১টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ স্থগিত ছিল। এছাড়া নির্বাচনী এলাকার আর কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ জানিয়েছেন কয়েকটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটনায় উত্তেজনা থাকায় সাময়িক ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল। কিছুক্ষণ পরেই আবার ভোটগ্রহণ শুরু হয়। তবে দোয়ারাবাজারের একটি কেন্দ্রে এখনো পুনরায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়নি বলে জানান তিনি।
সুনামগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান বলেছেন আমাদের নেতাকর্মীরাই নয় নিরপেক্ষ মানুষও বলছেন আমাদের এখানে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হচ্ছে। কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। শেষ পর্যন্ত নির্বাচন শানিন্তপূর্ণই শেষ হবে বলে জানান তিনি।
সুনামগঞ্জের ৫টি আসনের ১৬ লাখ ৪৭ হাজার ৫১১ জন ভোটার ৬৬৮ ভোটার ভোট দিচ্ছেন। হাওরের দুর্গ, ৩৫০ কেন্দ্র ও ঝূকিপূর্ণ ৪১৬ কেন্দ্রেসহ জেলায় ৬৬৮ টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে।
১২০টি মোবাইল টিম ও ১৩টি স্ট্রাইকিং ফোর্সসহ ১০০০ পুলিশ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় নিয়োজিত রয়ছে। তাছাড়া ৫টি আসনে ৩২জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১২জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ ১১৪ জন র্যাব, ১৪ প্লাটুন বিজিবিসহ সেনাটহল জোরদার করা হয়েছে।