দিরাই-শাল্লা প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের শাল্লায় সেতু নির্মান কাজে অনিয়ম দূর্ণীতির অভিযোগে এলাকাবসীর ধাওয়া খেয়েছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম। ধাওয়া থেয়ে একটি বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেন তিনি। ঘন্টাখানেক অবরুদ্ধ থাকার পর থানা পুলিশ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার এবং সমোঝতা করা হয়েছে।
জানা যায়, প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিনে উপজেলার শাল্লা ইউনিয়নের ইসহাকপুর ও শংকরপুর গ্রামের মধ্যবর্তী খালে ৩২ লক্ষ ৪৩ হাজার নয় শত বাহাত্তর টাকা ব্যায়ে সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করে কুমিল্লা অঞ্চলের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জুয়েল এন্টার প্রাইজ। অভিযোগ রয়েছে নিজ এলাকার এ ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠানের মালিক দিরাই ও শাল্লা উপজেলার দায়িত্তপ্রাপ্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম। শুরুতেই সেতু নির্মানের জন্য নিম্নমানের মালামাল সংগ্রহ করে প্রতিষ্ঠানটি। এ নিয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে গেলে তিনি তা গ্রহণ করেননি। শনিবার সকালে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে সেতু’র ঢালাইয়ের কাজ শুরু করতে গেলে নিন্মমানের মালামাল দিয়ে সেতু নির্মান শুরু না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু তিনি উল্টো এলাকাবসীকে ধমক দিয়ে বলেন এই বালু পাথর দিয়েই ব্রীজ নির্মান করা হবে। যারা বাধা দিতে আসবেন সবাইকে পুলিশ দিয়ে জেলে নেয়া হবে। এক পর্যায়ে এলাকাবাসী বিক্ষোব্ধ হয়ে উঠে, অবস্থা বেগতিক দেখে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নজরুল ইসলামসহ নির্মান শ্রমিকরা দৌড়ে পার্শবর্তী ইসহাকপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুজন তালুকদার বলেন, উনারা দৌড়ে স্কুলে আসেন। পরে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও থানা পুলিশ এসে গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে সঠিকভাবে কাজ করার শর্তে সমোঝতা করা হয়। তবে অবরুদ্ধের কথা অস্বীকার করেছেন শাল্লা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফুল ইসলাম এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম। ওসি শরীফুল ইসলাম বলেন, সেতুর কাজে নিম্নমানের মালামাল ব্যবহারের অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। এনিয়ে ঠিকাদারের লোকজন ও এলাকাবাসীর মধ্যে সামান্য উত্তেজনা দেখা দেয়ায় পুলিশ গিয়ে সবাইকে শান্ত করে। অবরুদ্ধের ঘটনা ঘটেনি। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, এলাকাবাসীর সাথে ঠিকাদারের লোকজনের একটু ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়ে ছিলো, এখন সমাধান হয়ে গেছে। স্কুলে মাস্টারের সাথে কথা বলতে গিয়েছিলাম। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিকের বাড়ী কুমিল্লা, আর আমি কুমিল্লার ছেলে না। আমি সরকারী চাকরী করি, ঠিকাদারী করবো কিভাবে। আমি এখন ব্যস্থ আছি বলে ফোনের লাইন কেটে দেন। এর পর বার বার তার মোবাইলে (০১৭১৫০৩২৩৬৫) ফোন দেয়া হলেও আর রিসিভ করেননি। শঙ্করপুর গ্রামের বাসিন্দা আঞ্জু মিয়া বলেন, সেতুর কাজে নি¤œমানের বালু, পাথর ব্যবহার করা হচ্ছিলো, গ্রামবাসী অভিযোগ নিয়ে গেলেও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা গ্রামবাসীর লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেননি। আজ সকালে তিনি নিজে উপস্থিত থেকে নি¤œমানের মালামাল দিয়ে কাজ শুরু করেন। প্রতিবাদ করলে গ্রামের লোকজনকে জেলে দেয়ার হুমকি দেন। এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে দৌড়ে স্কুল ঘরে গিয়ে আশ্রয় নেন। পরে ইউপি চেয়ারম্যান ও পুলিশের মাধ্যমে সঠিক কাজ করার শর্তে এবং এলাকাবসীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে সমোঝতা হয়। শাল্লা ইউপি চেয়ারম্যান জামান চৌধুরী ফুল মিয়া বলেন, ঠিকাদারের লোকের সাথে এলাকাবসীর সামান্ন কথা কাটাকাটি হয়েছে। আমি গিয়ে সমাধান করে দিয়েছি। পুলিশ হয়তো সমস্যা হতে পারে মনে করে সেখানে গিয়েছে। এর চাইতে বেশী কিছু হয়নি বলে ফোন কেটে দেন তিনিও।