দিরাই প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মানে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পি আই সি) গঠনে অনিয়ম দূর্নীতির প্রতিবাদ করায় যুবলীগ নেতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দফায় দফায় হামলা ও ভাংচুর করেছে উপজেলা চেয়ারম্যানের লোকজন। শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে দিরাই পৌর সদরের থানা রোডস্থ উপজেলা যুবলীগ নেতা মোহন চৌধুরীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পপুলার এন্টারপ্রাইজে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় পৌরশহরের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। দিরাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা যায়, দিরাই উপজেলায় চলতি বছরের বোরো ফসল রক্ষায় হাওর এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্ষতিগ্রস্থ ডুবন্ত বাঁধ মেরামতের জন্য প্রকল্প কমিটি গঠনের কাজ শুরু করে উপজেলা প্রশাসন। শুরুতেই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে নিয়ম-নীতির তোয়ক্কা না করে এক এলাকার লোককে অন্য এলাকায় নিয়ে নিজের পছন্দমত লোক দিয়ে প্রকল্প কমিটি গঠন করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এর প্রতিবাদ করেন উপজেলা যুবলীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহন চৌধুরী। প্রতিবাদ করায় তাকে শায়েস্থা করার জন্য নিজের লোক দিয়ে মোহন চৌধুরীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করানো হয়। এসময় কেউ আহত না হলেও ভাঙ্চুর ও ক্যাশের টাকা লোট করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মোহন চৌধুরী। তিনি বলেন, বিএনপি থেকে নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যন হাফিজুর রহমান তালুকদার আওয়ামী লীগে যোগদান করে লুটপাটের মহোৎসবে মেতেছেন। গতবছর হাওর রক্ষা বাধের পিআইসি গঠনে অনিয়মের মাধ্যমে আর্থিক ফায়দা হাসিল করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান। এবছরও উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তালুকদার আর্থিক স্বার্থ আদায়ের মাধ্যমে একাধিক হাওর রক্ষা বাঁধের কমিটি গঠনে অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি এক রক্ষা বাঁধের নিকটবর্তি এলাকার লোকজনকে কমিটিতে না রেখে দুরবর্তি অন্য এলাকার লোকজনকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। আমার গ্রামের বাড়ী তাড়ল গ্রামেও তিনি একই কাজ করেছেন, বিষয়টি জানতে পেরে এই ইউনিয়নের একজন কৃষক হিসেবে মোবাইল ফোনে এর কারণ জানতে চাইলে তিনি আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। এর কিছুক্ষণ পর উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাই শামসুজ্জামান ও চাচাতো ভাই আইবুর রহমান এর নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক লোক আমার দিরাই থানা রোডস্থ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পপুলার এন্টার প্রাইজে ডুকে সন্ত্রাসী হামলা চালায়। আমি কোন রকমে আত্মরক্ষা করি। মোহন চৌধুরী আরো বলেন, আক্রমণকারীরা আমার দোকানের মালামাল নষ্ট করে এবং ক্যাশবাক্স থেকে নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। আশপাশের ব্যবসায়ী ও বাজারের লোকজন ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন। আমি দলীয় নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে আইনের আশ্রয় নেবো।
এবিষয়ে দিরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তালুকদার বলেন, আমি পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) গঠনের বিষয়ে কিছুই জানিনা। পিআইসি’র বিষয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায় ও সহ-সভাপতি অ্যাড. সোহেল মিয়া দায়িত্ব পালন করছেন। মোহন চৌধুরী আমার সাথে খারাপ আচরণ করেছে। এখানে হাওর রক্ষা বাঁধের প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি গঠন সংক্রান্ত কোন বিষয় নেই। মোহন চৌধুরী দলীয় বিষয়াদি নিয়ে মোবাইল ফোনে আমার সাথে অশোভন ভাবে বেদায়বের মতো কথা বলে। এসময় উপজেলা আওয়ামীলীগ সহসভাপতি অ্যাড. সোহেল আহমদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. অভিরাম তালুকদার সহ আমি দিরাই গণমিলনায়তনে একটা অনুষ্ঠানে ছিলাম। এবিষয় আমার ভাই ভাতিজা জানতে পেরে কিছুটা উত্তেজিত হয়ে পড়ে, তবে হামলার কোন ঘটনা ঘটেনি। ঘটনার সত্যতা স্বিকার করে দিরাই থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (দায়িত্ব প্রাপ্ত, ওসি তদন্ত ) দেলোয়ার হোসেন বলেন, পুলিশ ঘঁনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। কোন ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এখ নও কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গস্খহণ করা হবে।