বাঙালির সংস্কৃতি বাঙালির কৃষ্টি হাজার বছরের। চিরায়ত বাংলার সুর ও সংস্কৃতির সন্ধানে যুগেযুগে নিয়োজিত ছিলেন বাংলার অজস্র সাধক। গুরুসদয় দত্ত সেই ধারারই অনন্য নক্ষত্র। তাঁর কর্মময় জীবন, ব্রতচারী ভাবাদর্শ বাংলার সংস্কৃতি ও বাঙালির জীবনে যুক্ত করেছে অন্যরকম দ্যুতি। যা শিক্ষার্থিদের মনে স্বদেশপ্রেম জাগিয়ে তুলতে অত্যন্ত কার্যকর। মানুষের শারিরীক ও মানসিক বিকাশের জন্য ব্রতচারী কার্যক্রম সহায়ক ভূমিকা রাখে। ব্রতচারী জাগলে জেগে উঠবে সোনার বাংলা। জেগে উঠবে সোনার বাংলার সন্তানেরা।
৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, মঙ্গলবার ব্রতচারী কার্যক্রমে আমন্ত্রিত অতিথিরা বলেন, প্রতিটি স্কুল-কলেজে ব্রতচারী কার্যক্রম ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন। এই কার্যক্রম ছড়িয়ে দিলে শিক্ষার্থিদের মধ্যে জ্ঞান, শ্রম, সত্য, ঐক্য ও আনন্দের সাথে জীবন-যাপনের পথ তৈরি হবে। জাগ্রত হবে দেশপ্রেম। ১৯৭৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ব্রতচারী প্রশিক্ষণ ক্যাম্প পরিদর্শনে এসেছিলেন। তিনি কামরুল হাসানকে বলেছিলেন-“কামরুল তোমার কোনো চিন্তা করতে হবে না। আমি সমস্ত স্কুলে এই ব্রতচারী আন্দোলন চালু করে দেবো। এবং বাঙালী, একদম মনেপ্রাণে যাতে সকলে বাঙালী হয়, তোমাকে সেই মতো কাজ করতে হবে। আমি আছি তোমার পিছনে।”
তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে ১৯৭৫-এ তাঁকে হত্যার পর এই কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। ফলে নতুন প্রজন্মে ব্রতচারী সম্পর্কে খুব একটা ধারণা রাখে না। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য অতিথিরা আহ্বান জানান।
মঙ্গলবার দুপুরে শহরতলীর বিমান বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ব্রতচারী অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্রতচারী বিমান তালুকদার জাতীয় সঙ্গীত, ভূমিপ্রেমের তিন উক্তি, পঞ্চব্রত অনুসরণ, ছোট ব্রতচারীর বারো পণ, ব্রতচারী ক্রমবৃদ্ধি কামনা, ছড়ার সাথে শরীরচর্চা, কোদাল চালাই, সারি নৃত্যের গান পরিবেশন করেন। এসময় তাকে সহযোগিতা করেন মেকদাদ মেঘ, অসীম সরকার, সম্পা তালুকদার, জুই পাল, চৈতি গোয়ালা, দীপা সরকার। শতাধিক শিক্ষার্থি এ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে।
বাংলাদেশ ব্রতচারী সমিতি সিলেট জেলা শাখার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে ও নিগাত সাদিয়ার উপস্থাপনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কবি ও গবেষক নৃপেন্দ্রলাল দাশ, সিলেট জেলা উদীচী সভাপতি, কবি এ কে শেরাম, সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (সদর) মো: কামরুল আমীন, রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রাণা কুমার সিন্হা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, দৈনিক যুগান্তর-এর সিলেট ব্যুারো প্রধান সংগ্রাম সিংহ, ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন (ইমজা) এর সভাপতি দেশটিভি-র ব্যুরোপ্রধান বাপ্পা ঘোষ চৌধুরী, দৈনিক সংবাদের বিশেষ প্রতিনিধি আকাশ চৌধুরী, ডিবিসি-র ব্যুরো প্রধান প্রত্যুষ তালুকদার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কবি তুষার কর, আবৃত্তিকার অম্বরীষ দত্ত, কবি ও গীতিকার এনায়েন হাসান মানিক, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গীতিকবি শামসুল আলম সেলিম, চিত্রশিল্পী মিজানুর রহমান মিলন, ছড়াকার চন্দ্রশেখর দেব, সিলেট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: ওবায়দুল্লাহ, সিলেট বিমান বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো: হাফিজ আহমেদ, সম্মিলিত নাট্যপরিষদ সিলেটের সভাপতি মিশফাক আহমদ মিশু, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম, নৃত্যশৈলীর পরিচালক নীলাঞ্জনা যুঁই, গণজাগরণ মঞ্চ সিলেটের মুখপাত্র চ্যানেল নাইন-এর ব্যুরো প্রধান দেবাশীষ দেবু, বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ এস এম শাহাদত হোসেন, সদর উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার সুভাষ চন্দ্র চক্রবর্তী, ভারত নাকতলা থেকে আগত অতিথিশিল্পী রূপকার চক্রবর্তী, বিমান বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুলতানা খানম সাথী, সহকারী শিক্ষিকা বাবলী রাণী ধর, সাহানারা বেগম, ফাল্গুনী দাস, শিপা আক্তার, হালিমা বেগম, গায়ত্রী রাণী দেব, নাট্যকর্মী রকিবুল হাসান রুম্মন, নৃত্যশিক্ষক শাহজাদা নাহিয়ান চৌধুরী, কামরুল আহবাব টিপু, হাছন রাজার স্মৃতিসমৃদ্ধ যাদুঘরের মিউজিয়াম সহকারী জাহাঙ্গীর আহমেদ, সংবাদিক শাকিলা ববি, মামুন হোসেন, দোলন তালুকদার, উত্তমকাব্য প্রমুখ।