শহীদনুর আহমেদ::
জেলার বৃহত্তম ফসলি হাওর দেখার হাওরে এবার আবাদ করা হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমি। বৃহত্তম এই হাওরে ফসলের উপর নির্ভর জেলার সদর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলার অন্তত ১০ টি ইউনিয়নের কয়েক লক্ষাধীক কৃষক। হাওর এলাকায় অকাল বন্যা প্রতিরোধ ও ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ নির্মাণের আওতায় কাবিটা নীতিমালার আলোকে বাঁধ নির্মাণ কাজ চলমান থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ এই হাওরের বিশাল এলাকা জুড়ে নেয়া হযনি কোনো প্রকল্প। মহাসিং নদীর তীরবর্তি আব্দুল্লাহপুর থেকে আসামপুর পর্যন্ত বিশাল এলাকা জুড়ে উন্মুক্ত অবস্থায় রয়েছে । হাওরের ওয়াবদার বাঁধ ও ডুবিকোনার মুখ খোলা থাকায় অরক্ষিত রয়েছে পুরো হাওরের বোরো ফসল। মহাসিং নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেই বাঁধের আফাল উপছে ও ঝুঁকিপূর্ণ একাধিক ক্লোজার দিয়ে দেখার হাওরে পানি ঢুকার শঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে মহাসিং নদীর ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধে প্রকল্প গ্রহণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন স্থানীয় কৃষকরা। কিন্তু বিগত বছরের এই হাওরে অনিয়ম দুর্নীতি করার দায়ে হাইকোর্টে করা মামলা চলমান থাকায় চলতি বছরে কোনো প্রকল্প নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। যা স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।”পাউবোর রোষানলে দেখার হাওর, হাওর ডুবি হলে দায় কার” এই শ্লোগানে সদর উপজেলার বেতগঞ্জ বাজার বুধবার প্রতিবাদী মানববন্ধন করে হাওর বাঁচাও, সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন মোল্লাপাড়া কমিটি। এই মানবন্ধনে দেখার হাওর পারের কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। মোল্লাপাড়া ইউনিয়ন কমিটি সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মনির উদ্দিন এর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তারা বলেন, দেখার হাওর জেলার বৃহত্তম হাওর। অতচ এই হাওরের ফসল সুরক্ষায় পাউবো কর্তৃপক্ষ উদাসীন। মহাসিং নদীর তীরবর্তি আব্দুল্লাহপুর থেকে আসামপুর পর্যন্ত বিশাল এলাকায় কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা হয়নি। মহাসিং নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেই এই পানি দেখার হাওরে ঢুকে ফসল তলিয়ে যাবে। বক্তারা বলেন, বিগত বছর ফসলরক্ষা বাঁধের নামে অপ্রয়োজনীয় বাঁধ নির্মাণ করায় স্থানীয় কৃষকরা হাইকোটে মামলা করেছেন। এই মামলা চলমান থাকায় হাওরে বেড়িবাঁধের কাজ করছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। মামলার অযুহাতে বাঁধ নির্মাণ না করায় হাওর ডুবির ঘটনা ঘটলে এই দায় কে নিবে। বক্তারা হুঁশিযারি করে বলেন, প্রকল্প গ্রহণ না করার ফলে হাওর ডুবি হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। প্রয়োজন হলে আইনী লড়াই করবেন বলে জানা তারা। অনতিবিলম্বে ঝুঁকিপূর্ণ ক্লোজার ভরাটসহ আফালে বাঁধ নির্মাণের তাগাদা জানান তারা। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল আমীনের সঞ্চালনায় মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন হাওর বাঁচাও, সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালেহীন চৌধুরী শুভ, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরানুল হক চৌধুরী, একে কুদরত পাশা, সদর উপজেলার কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আজাদ মিয়া, সচিব শহীদনূর আহমেদ, মোল্লাপাড়া ইউনিয়ন কমিটির সহ সভাপতি জামাল উদ্দিন, আব্দুল কুদ্দুস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অমর চাঁদ দাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন, গণসংযোগ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম রিপন, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন, বাঁধ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল করিম, ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল মিয়া প্রমুখ। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিশিষ্ট শালিস ব্যক্তিত্ব লীলু মাস্টার, আব্দুল আউয়াল, হাজী সিতারা মিয়া, মো. মনির উদ্দিন, আজিজুর রহমান, মিরাস আলী, খলিলুর রহমান, আব্দুল ওয়াদুদ, মো.তারা মিয়া, বাতির আলী, সিরাজ আলী, মাজর আলী, আব্দুল মুকিত প্রমুখ।