1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৪৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

সীমিত স্বাস্থ্যসম্পদ নিয়ে যেভাবে সরকারি হাসপাতাল চলছে।। ডা. নূরুল ইসলাম

  • আপডেট টাইম :: বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০১৯, ৬.০৪ এএম
  • ৬২৬ বার পড়া হয়েছে

খুব ভোরেই আজ বিছানা থেকে উঠি। ঘুম নাই চোখে, তাই বেড়িয়ে পরি নির্জন নিসঙ্গ অতি ভোরকে সঙ্গী করে। হেঁঠে চলে যাই একেবারে হাসপাতালে। দিনের অধিকাংশ সময়টুকু যদিও এখানেই কাটাই, তারপরও মন চাইলো তাই চলে গেলাম। নিচতলা থেকে ৫ম তলা সবগুলো ফ্লোরেই এক এক করে হাঁঠতে থাকি। কোন ওয়ার্ডের ভিতরেই যাইনি। জানি প্রতিটা ওয়ার্ডই বিভিন্নপ্রকার রোগি নিয়ে একেবারে ঠাসা। কিন্তু হাসপাতাল ও ওয়ার্ডগুলোর বারান্দা, যেগুলো রাখাই হয়েছে হাঁঠা-চলার জন্য, সেগুলোতেও পা ফেলার জায়গা নাই। বাংলাদেশের মতো একটি জনাকীর্ণ দেশে সীমিত সংখ্যক স্বাস্থ্যসম্পদ নিয়ে কিভাবে যে এতো এতো রোগিদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা চালিয়ে নেয়া সম্ভব হচ্ছে, তা প্রায় সময় মাথায় চিন্তায় আসলে অস্থির না হয়ে থাকাটাই অসম্ভব।
সরকারী হাসপাতালে জ্যামিতিক হারে বেড়ে চলেছে রোগির সংখ্যা। কোন কোন ক্ষেত্রে ২-১০গুণ। কিন্তু সে অনুপাতে বাড়ছে না অবকাঠামো, চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারী ও চিকিৎসা সংক্রান্ত নানা প্রকার সুযোগ সুবিধা। তার উপর আছে অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং চিকিৎসকদের তাদের প্রাপ্য নূণ্যতম অধিকারটুকু নিশ্চিত করার জন্য সিন্দাবাদের কাঁধে চেপে বসার মতো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা।
মরার উপর খড়ার ঘাঁ হচ্ছে, তথ্য প্রুযুক্তির অাধুনিকায়ন ও স্যোসাল মিডিয়া। মানুষ এসব অাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে নিমিশেই যেনে যাচ্ছে পৃথিবীর কোন জায়গায় কি হচ্ছে এবং প্রয়োগক্ষেত্রে নিজের জন্যও ঐ একইরকম প্রত্যাশা নিয়ে সরকারী হাসপাতালগুলোতে আসে। নিজের সীমাবদ্ধতা ও সীমিত সম্পদের কথা ভুলে অনেকেই তখন আবেগতাড়িত আচরণ এবং কোন কোন ক্ষেত্রে অতিমাত্রার আচরণ চিকিৎসকের উপর নিক্ষেপ করে।
দূর্নীতিবাজ, কালো টাকারর মালিক ও ক্ষমতার অপব্যবহারকারী এদেশের একটা অংশ যাদের পরিমান মোট জনগোষ্ঠীর তুলনায় ১০% ও হবে না, তারা সময়ে-অসময়ে বিদেশী চিকিৎসায় তৃপ্তির ঢেকুর তুলে জানান দেয় যে, তারা বিত্তশালী হতে চলেছে। কোন কোন মিডিয়া এবং ব্যাক্তিবর্গ দালালী করে সেই ঔপনৈশিক সময়ের মতো এদেশের স্বাস্থ্যে ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় বিদেশী শক্তির মার্কেটে পরিনতো করার জন্য নানান রকম অভিযোগ, সমস্যা তুলে ধরার জন্য মুখে ফেনা তুলতে থাকে এবং চিকিৎসক ও রোগিদের সম্পর্ক নষ্ট করে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত থাকে। এইসব দেশ বিরোধী ও বিশ্বাসঘাতকদের সম্পর্কে আমাদের সকলকেই সচেতন থাকা অতীব জরুরী।
এদেশে সাধারনত স্কুল-কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থীরাই প্রথম পেশা হিসেবে চিকিৎসা পেশা বেঁচে নেয় সৎপথে নিজের ভিতরের আত্নসন্মাণটুকু বাঁচিয়ে রাখার মৌন উদ্যেশ্য নিয়ে। ক্লাশের সবচেয়ে সেরা ছাত্রটি কিন্তু কথার চেয়ে কাজে যেমন পরীক্ষার মাধ্যমেই শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করে সুখি হয়, ঠিক তেমনি সেই ছাত্রটি যখন চিকিৎসা পেশার মতো এতো বড় একটি মহান পেশাকে নিজের পেশা হিসেবে বেঁছে নেয়, তখন কথার তুবরী ওড়ানোর চেয়ে কাজই তার কাছে মুখ্য হয়ে উঠে। সে কি কাজ করতেছে, তা মনে না রেখে, সামনে আর কোন কাজটা করলে একজন রোগির জীবন বাঁচবে সেটা আগে চিন্তা করে। আর এটাকেই দূর্বলতা ভাবে এদেশের একশ্রেণীর অতি চালাক বাক্তিবর্গ। যারা জীবনের শেষ সময়ে কিংবা মাঝপথে এসে বুঝতে পারে যে, জীবন তাদের বারো আনাই মিছা হতে চলেছে। বেঁচে থাকার জন্য তখন কর্মের চেয়ে কথা আর দক্ষতা ও মেধার চেয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার ছাড়া তার আর কোন পথ খোলা থাকে না।
সৃষ্টির সেরা জীবকে রোগমুক্ত জীবন দাও প্রভু। রোগাক্রান্ত ব্যাক্তিকে দ্রুত সেফা দান করো প্রভু। তাদের সেবা করার সুন্দর মানসিকতা দান করো প্রভু। সমোলোচনাকারী ও ফায়দালোটকারীদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনো প্রভু।
(লেখক: ডাক্তার নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ।)

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!