ডেক্স রিপোর্ট::
গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার ঘটনায় ‘সন্দেহভাজন’ জাকির হোসেন শাওন মারা গেছেন। আজ শুক্রবার বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে জাকির ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বলে হাসপাতাল সূত্র নিশ্চিত করেছে। অবশ্য জাকিরের বাবা আবদুস সাত্তার বলেছেন, দুপুর ১২টার পরপর তাঁর ছেলে মারা গেছেন।
তবে পুলিশ দাবি করেছিল, জাকির বেঁচে আছেন। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। অবশ্য দুপুরের দিকে জাকিরের ভাবি ফাতেমা বেগমও দাবি করেন, তিনি নিশ্চিত তাঁর দেবর জাকির মারা গেছেন। তাঁদের জাকিরের কাছে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
৪ জুলাই জাকিরের মা-বাবা ছেলেকে খুঁজতে আর্টিজানের সামনে ছবি নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁরা বলেন, হামলার পর থেকে জাকিরকে তাঁরা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। তাঁর (জাকির) খোঁজে অভিভাবকেরা কয়েকবার গুলশান থানার পুলিশের কাছে গেছেন। পুলিশ ইউনাইটেড হাসপাতালে জাকিরকে খোঁজার কথা বলে। সেখানে গিয়েও তাঁরা ছেলেকে পাননি। ৩ জুলাই রাত দেড়টা পর্যন্ত তাঁরা গুলশান থানায় বসে ছিলেন। কিন্তু পুলিশ জাকিরের কোনো খোঁজ দিতে পারেনি।
মা-বাবার কাছে থাকা জাকিরের ছবি দেখে ঘটনাস্থলে থাকা সাংবাদিকেরা রক্তাক্ত অবস্থায় এক তর”ণকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ে যাওয়ার ছবিটি দেখান।
পরে ওই দিন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহীদুল হক জানান, হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন দুই জঙ্গি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে তিনি কারও নাম-পরিচয় প্রকাশ করেননি।
এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাকিরকে ৩ জুলাই রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল সূত্র বলেছে, তাঁকে হাতকড়া পরিয়ে আনা হয়। তবে জাকিরের বাবা আব্দুস সাত্তার ও মাহমুদা বেগম দাবি করেছেন, তাঁদের ছেলে হলি আর্টিজানে বাবুর্চির সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি কোনো জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।
রেস্তোরাঁর হিসাবরক্ষণ বিভাগের ব্যবস্থাপক সাজেদুর রহমান বলেন, জাকিরকে তাঁরা হাসপাতালে শনাক্ত করেছেন। তাঁকে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গিরা গত শুক্রবার রাতের বিভিন্ন সময় তিন বাংলাদেশিসহ ২০ জন জিম্মিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭ জন বিদেশি নাগরিক। এর মধ্যে জাপান সরকার তাদের সাত নাগরিকের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে। ইতালির নাগরিক নিহত হয়েছেন নয়জন। নিহত ব্যক্তিদের একজন ভারতীয়। শুক্রবার রাতে অভিযান চালাতে গিয়ে মারা গেছেন পুলিশের দুই কর্মকর্তা। আর শনিবার সকালে অভিযানে মারা গেছে ছয় সন্ত্রাসী। গ্রেপ্তার হয়েছে একজন। অভিযানে একজন জাপানি, দুজন শ্রীলঙ্কান ও ১০ জন বাংলাদেশিসহ ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।