হাওর ডেস্ক::
হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের সদর উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক আজাদ মিয়াকে নৃশংস কায়দায় হত্যার প্রতিবাদে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মানববন্ধনে হত্যাকান্ডে জড়িতদের আগামী ৭ দিনের মধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন হাওর আন্দোলন নেতারা।
শনিবার দুপুরে শহরের ট্রাফিক পয়েন্টে অনুষ্ঠিত এ প্রতিবাদ মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সমবেত হন হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ ও নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। একসময় কর্মসূচীস্থল জনসমুদ্রে রূপ নেয়।
মানববন্ধনে বক্তরা বলেন, ‘হাওরের বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় আজাদ মিয়াকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আজাদ মিয়া ছিলেন একজন প্রতিবাদী মানুষ। তাকে দমিয়ে রাখতে এলাকার ঐসকল হাওর দুর্নীতিবাজরা ধারাবাহিক ভাবে হুমকি ধুমকি দিয়ে আসছিলো। এই সংঘবব্ধ চক্র মাস্টার প্লানের মাধ্যমে আজাদকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেন বক্তারা।
বক্তরা বলেন, আজাদ হত্যার সাথে জড়ির অন্যতম আসামি শহরে প্রকাশ্যে চলাফেরা করছে। যা প্রশাসন দৃষ্টি করছেন না। এমন অবস্থায় প্রশাসনের তৎপরতার সমালোচনা করে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন বক্তারা।
নির্মম এই ঘটনার পেছনে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। অন্যথায় অব্যাহত কঠোর প্রতিবাদ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্তয় করেন আন্দোলনকারীরা।
এদিকে, আজাদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল হককে চেয়ারম্যান পদ থেকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে অপসারণের দাবি জানান বক্তারা।
সংগঠনের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরুর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালেহীন চৌধুরীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- সহ সভাপতি চিত্তরঞ্জন তালুকদার , সুকেন্দু সেন, সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়, সিনিয়র সদস্য রবিউল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম হেলাল, এমরানুল হক চৌধুরী, একে কুদরত পাশা, বাঁধ বিষয়ক সম্পাদক ওবায়দুল হক মিলন, সদর উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহব্বায় মনির উদ্দিন, সদস্য সচিব শহীদনুর আহমেদ, নিহতের ভাই আজিজ মিয়া, আফরোজ রায়হান, মোল্লা পাড়া ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আল-আলীন, সাংগঠনিক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন, আব্দুল লতিফ, যুব নেতা আসাদ মনি, দুর্জয় প্রমুখ।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের উপদেষ্টা রমেন্দ্র তালুকদার দে, মানব চৌধুরী, বিজয় চৌধুরী, সদর উপজেলা কমিটির সভাপতি চন্দন রায়, যুগ্ম আহব্বায়ক দুলাল মিয়া, কৃষক নেতা আবুল কাসেম, আব্দুল কাইয়ূম, সমাজসেবী আব্দুস সুবহান, ব্যবসায়ি নরুল হাসান আতাহের, কৃষক নেতা জামাল উদ্দিন, আব্দুল কুদ্দুস, শহীদুল ইসলাম রিপন, হাবিবুর রহমান, আসাদ প্রমুখ।
পরে আজাদ হত্যার প্রতিবাদে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ মার্চ রাত সাড়ে ১০টায় শহরের পিটিআই এলাকা গুপ্ত ঘাতকের অতর্কিত হামলায় গুরুতর আহত হন হাওর আন্দোলন নেতা আজাদ মিয়া। মাথায় গুরুতর জখম নিয়ে তিন দিন জীবন-মৃত্যুর সদ্ধিক্ষণে থাকার পর ১৭ মার্চ রাত সাড়ে ৮টায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। হত্যার ঘটনায় স্থানীয় মোল্লাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান নূরুল সহ ১২ জনকে আসামি করে সুনামগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেছেন নিহতের বড়ভাই। পুলিশ উকিল আলী নামের এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে।