ভারতের আসাম রাজ্যের গোহাটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার ড. শাহ মোহাম্মদ তানভির মনসুর বলেছেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সমূহে বাংলাদেশী পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি এবং আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সমতা আনয়নে কাজ করছে হাই কমিশন। তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে বিবেচনা করে ভারত। ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক ভাইয়ের মত। বিশেষ করে আসামের সাথে আমাদের সম্পর্কের নিবিড়তা বাড়ছে।
শনিবার (৬ এপ্রিল) রাতে চেম্বার বোর্ড রুমে দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ।
ড. শাহ মোহাম্মদ তানভির মনসুর বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে ভারতও আগ্রহী। এসওপি চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ মংলা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর উন্মুক্ত করে দিয়েছে। এটি বাস্তবায়নের জন্য কাজও চলছে। এছাড়া জয়েন্টলি ট্যুরিজম ডেভেলপের জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। শীঘ্রই এব্যাপারে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করবে।
গোহাটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার সিলেটের ট্যুর অপারেটরদের গোহাটি সফরের আমন্ত্রণ জানান। এছাড়াও ইন্ডিয়ান চেম্বার ও তরুণ উদ্যোক্তারা সিলেট চেম্বারের সাথে মতবিনিময়ের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে, তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী।
তিনি বলেন, গোহাটিতে হোটেল, কাপড়ের দোকান ও জামদানি কাপড়ের চাহিদা রয়েছে। ভারতের পর্যটন কর্পোরেশন গোহাটিতে জামদানির আউটলেট স্থাপনের জন্য একটি স্থান বরাদ্দ করেছে। এব্যাপারে ব্যবসায়ীদের আসাম সফর ও ব্যবসার উদ্যোগ গ্রহণের আহবান জানান তিনি।
সভায় সিলেট চেম্বারের সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ বলেন, ভারত শুধুমাত্র বাংলাদেশের প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্রই নয় বরং ভারতের সাথে বাংলাদেশের শক্তিশালী বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে। প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ পণ্য সামগ্রী ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি হয়ে থাকে। তবে ভারত থেকে আমদানির তুলনায় বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি অত্যন্ত কম। এ অসমতা দূর করার জন্য তিনি আহবান জানান। এক্ষেত্রে ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশী মিশনগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। বাংলাদেশী পণ্যকে সরকারীভাবে সেখানে মার্কেটিং ও প্রমোট করতে হবে।
তিনি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে ব্যবসায়ী সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তাব করেন। চেম্বার সভাপতি আরো বলেন, সিলেটে এখন বেসরকারি উদ্যোগে অনেকগুলো দৃষ্টিনন্দন রিসোর্ট, হোটেল, আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল স্থাপিত হয়েছে। যেগুলোতে ভারতের তুলনায় অনেক কম খরচে বিভিন্ন সেবা পাওয়া যায়। এসব প্রতিষ্ঠান ও সিলেটের দর্শনীয় স্থান সমূহকে ভারতীয়দের কাছে তুলে ধরতে পারলে সিলেট তথা বাংলাদেশে পর্যটন বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও দুইদেশের যৌথ উদ্যোগে পর্যটন খাত, শিক্ষা খাত ও পরিবহন খাতে পরিকল্পিত বিনিয়োগ করতে পারলে দুই দেশের বিনিয়োগকারীরা লাভবান হতে পারবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। এব্যাপারে সরকারের পাশাপাশি আমরা দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানে আগ্রহী বলে জানান তিনি।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাসুদ আহমদ চৌধুরী, পরিচালক মুশফিক জায়গীরদার, এহতেশামুল হক চৌধুরী, আব্দুর রহমান, চন্দন সাহা, ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, মো. আব্দুর রহমান (জামিল), সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের সভাপতি আমিনুল ইসলাম চৌধুরী লিটন, ওকাস সভাপতি খালেদ আহমদ, সাংস্কৃতিক সংগঠক আমিরুল ইসলাম চৌধুরী বাবু, শ্রী নীলাঞ্জন দাস, শ্রী গৌতম চক্রবর্তী, সিলেট চেম্বারের সদস্য শ্রী শান্ত দেব, মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ।