হাওর ডেস্ক::
১৯৯৭ সালের আগে কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিনস দ্বীপের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল বিজিবি (তখনকার বিডিআর)। ২২ বছর পর গতকাল রবিবার থেকে ফের বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে বাংলাদেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপটির নিরাপত্তায়।
এখন থেকে অন্যান্য বাহিনীর পাশাপাশি সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবিও বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকা এ দ্বীপটির নিরাপত্তায় থাকবে।
বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহসিন রেজা গতকাল বিকেলে জানান, সরকারি নির্দেশ মোতাবেক রবিবার থেকে ভারী অস্ত্রসহ বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে সেখানে।
বিজিবির এক কর্মকর্তা জানান, ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত সেন্ট মার্টিনস দ্বীপের নিরাপত্তায় বিজিবি মোতায়েন ছিল। পরে কোস্ট গার্ডকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেন্ট মার্টিনসের নিরাপত্তায় বিজিবির যত সদস্য দরকার, ততজনই মোতায়েন করা হবে। সেখানে কোস্ট গার্ডও দায়িত্ব পালন করছে।
তিনি আরো জানান, এটি বিজিবির দায়িত্বপূর্ণ এলাকা এবং দায়িত্বের অংশ হিসেবে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। তারা নিয়মিত চোরাচালান প্রতিরোধ, মানবপাচার রোধ ও সীমান্ত পাহারায় নিয়োজিত থাকবে।
উল্লেখ্য, রোহিঙ্গা ইস্যুসহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে প্রতিবেশী মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে।
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ আহ্বান জানাচ্ছে মিয়ানমারকে। মিয়ানমারও ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে কাগুজে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ঠিকই; কিন্তু এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাকেও তারা ফিরিয়ে নেয়নি। ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের সম্পর্কের টানাপড়েন দিন দিন বাড়ছে।
অন্যদিকে আজ সোমবার মিয়ানমারের নেপিডোতে দুই দেশের সীমান্ত বাহিনী প্রধানদের সীমান্ত সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ সম্মেলনে বাংলাদেশের ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম। আর ১৭ সদস্যের মিয়ানমার প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে আছেন দেশটির চিফ অব পুলিশ জেনারেল স্টাফ, পুলিশ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মায়ো থান (বিজিপি প্রধান)।
এদিকে বিজিবি সূত্রের বরাতে আমাদের টেকনাফ প্রতিনিধি জানান, বিজিবি সদস্যরা রবিবার সকালে টেকনাফের দমদমিয়া পর্যটক জাহাজ ঘাট থেকে কেয়ারি ডাইন ক্রুসে করে সেন্ট মার্টিনসে যান। পরে সেখান থেকে অস্থায়ী ক্যাম্পে মালপত্র ও সরঞ্জাম নিয়ে যাওয়া হয়।
দ্বীপে বিজিবির একটি বিওপি (বর্ডার অজারভেশন পোস্ট) স্থাপন করা হয়েছে। আপাতত তারা দ্বীপের আবহাওয়া অফিস কার্যালয়ে উঠেছে বলে জানা গেছে।
গত বছর বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনসকে নিজেদের অংশ বলে মিয়ানমার দাবি করেছিল। গত ৬ অক্টোবর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত উ লুইন ওকে তলব করে এর প্রতিবাদ জানায়। এরপর মিয়ানমার মানচিত্র থেকে সেটি সংশোধন করা হয়।