কোথায় আমার সেই মাটি
খাঁটি সোনার দেশ
এই প্রশ্নের ফুলকি উড়িয়ে এক কবি তাঁর কবিতার
রূপোলি রুমাল উড়িয়ে দিলেন
কী অবাক!
কবির পা তো দেখছি তাঁর দেশের মাটিতেই
এবং আরও অবাক
তাঁর পায়ের নীচের মাটিটা ভীষণ খাঁটি ভুবনে বিখ্যাত
এর নাম বাংলা বহুব্রীহি
রবীন্দ্র-নজরুলের সোনার বাংলা
আমার সোনার বাংলা মুজিবের
এবং একজন জীবনানন্দ ‘আবার আসিব ফিরে এই বাংলায়’
এমন রূপসী গান গাইতে গাইতে এক্কেরে পাগল পারা
কেউ কেউ দেশের ভেতরে থেকে দেশকে হারিয়ে ফেলে
এইভাবে কীভাবে যেনো কউ কেউ স্বদেশে নির্বাসিত
স্বেচ্ছা নির্বাসনে গিয়ে ঘোড়ায় চড়িয়া মর্দ হাঁটিয়া চলিল
চড়ে সেই বখতিয়ারের ঘোড়া
কী বিচিত্র দেশ, সিলোকাস !
প্রত্যাবর্তনের মরমিয়া পথ দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয় কেবলম
কী ভীষণ কেরদারিসমা বড় বেশি বোধাতীত
ইরান তুরান কিংবা ফাঁকিস্তান হতে মনে মনে তারা
কখনও ফেরে না
এবং একাত্তরের রাজাকার হতে কসুর করে না বাস্তবিক
ত্রিশ লক্ষ প্রাকৃতকে এই মাটিতেই পুতে দিয়ে
এই মাটিতে দাঁড়িয়ে থেকেই প্রশ্নকাতর হয়
কোথায় আমার সেই মাটি
দেশের বাতাস থেকে প্রাণের রসদ টেনে নিয়ে দেশ
কেমন অচেনা হয়ে গেলে পর
এমন প্রশ্নের ভেতরে শুয়ে থাকে আদি মৌলবাদ
গর্তের ভেতরে যেমন সাপ শুয়ে থাকে
বখতিয়ারের ঘোড়ায় আরোহী কবি
এই সজল শ্যামল মাটি কখনও হয় না তার
অথচ অবাক তিনি পথে পথে নালন্দা পুড়ায় বখতিয়ার নন
এ কেমন বখতিয়ারের অবাক উত্তরাধিকার
আসলেই কেউ কেউ
নির্বাসত জীবনের ফুলে ফুলে মধু খায় ভ্রমর মৌ-লোভী
মনে মনে ইরান আরব তুরানের মাটি মনপছন্দ খুব
দেশের মাটিতে পরদেশী
পথহারা বেপথু পথিক
একদা যেমন কেউ কেউ ফাঁকিস্থানি হয়ে গিয়েছিল
এখনও তো কেউ কেউ ফাঁকিস্থানের দিকেই হাঁটে
কেউ কেউ জাত বদলের বজ্জাতিতে বড় বেশি দড়
ফাঁকিস্তানি ওয়াতনের ক্যারিসমা দারুণ
নৈবচ বাঙালি তার মনের গহীনে নাও বায় মাঝি
জনাব কবির এই প্রশ্ন যতোটুকু খাঁটি
দেশ ততোটা আর খাঁটি নেই
মীর জাফরের ঔরসেরা দঙ্গলে দঙ্গলে এসে
এই জনজঙ্গল দখল করে নিয়েছে সেই কবে
সোনা ফলা মাটি এখন এমন অচেনা ভীষণ
কবির কাছে কী করে এমন হয় সে এক ক্যারিসমা বটে