ছাতক প্রতিনিধি::
ছাতকের গোবিন্দনগর ফজলিয়া ফাজিল মাদ্রাসার এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি রাজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার বিকেলে ছাতক থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে দুপুরে রাজিবুলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করে ছাত্রী। এর আগে সকালে কু প্রস্তাব ও শারিরীকভাবে লাঞ্চিতের ঘটনার বিচার না করায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে ক্লাসরুমে লাঞ্চিত করেছে যৌন হয়রানির শিকার মাদ্রাসা ছাত্রী। শনিবার সকালে উপজেলার গোবিন্দনগর ফজলিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় ক্লাস চলাকালিন সময়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মামলা রেকর্ড করেছে পুলিশ।
এ নিয়ে মাদ্রাসায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করেন। এ ঘটনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিলেট মহানগর জামায়াতে ইসলামীর কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আব্দুস সালাম আল মাদানী ও আলিম পরিক্ষার্থী যৌন হয়রানির শিকার মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবেদা আফসারীর কার্যালয়ে ডাকা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে অধ্যক্ষ ও শিক্ষার্থী পৃথকভাবে বক্তব্য দিয়েছেন। বক্তব্যে ওই ছাত্রী বলেন, মাদ্রাসার ইংরেজী শিক্ষক সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি রাজিবুর রহমানকে অভিযুক্ত করেছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের ব্যাপারে অধ্যক্ষের কাছে দু’দফা বিচার প্রার্থী হলে জামায়াত নেতা অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম আল মাদানী কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো ছাত্রীকে শাসিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। বিচার চাওয়ায় ওই ছাত্রীকে পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ আছে।
এদিকে অধ্যক্ষ জামায়াত নেতা মাওলানা আব্দুস সালাম আল মাদানী দু’দিন মোবাইল ফোনে তাঁকে নির্যাতিত মেয়েটি বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন। বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য চেষ্টা করা হয়েছে বলে তিনি জানান। এ বিষয় নিয়ে গত ২৮ মার্চ মাদ্রাসায় একটি সভাও অনুষ্টিত হয়েছে। যৌন হয়রানির শিকার ছাত্রী বলেন, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে শিক্ষক রাজিবুর রহমানের বাসায় কোচিং পড়তে যায় তিনি। এ সময় তার সাথে অশালীন আচরণ করে ছাত্র শিবির নেতা ওই শিক্ষক। নানাভাবে তার সাথে তাকে শারিরীকভাবে লাঞ্চিত করার চেষ্টা করেছেন এবং বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়েছে ওই শিক্ষক। সে ৬ দিন প্রাইভেট পড়ে এ শিক্ষকের কাছে পড়া বন্ধ করে দেয়।
অধ্যক্ষের কাছে এ নিয়ে বিচার প্রার্থী হলে সে কোন বিচার পায়নি, বরং তাকে উল্টো শাসান জামায়াত নেতা মাদানী। এজন্য লেখাপড়া বন্ধ করে দেয় মেয়েটি। অভিযোগ রয়েছে এ কারণে জামায়াতি সিন্ডিকেট মেয়েটিকে পরীক্ষায় অংশ নিতে দেয়নি।
এদিকে যৌন হয়রানির বিচার না পেয়ে ওই ছাত্রী বাদী হয়ে শনিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। ছাত্রীর পিতা সিলেট সদর উপজেলার বাসিন্দা থানায় অভিযোগ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মাদ্রাসার ইংরেজী শিক্ষক রাজিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগের বিষয় অস্বীকার করে জানান, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ছাতক থানার ওসি আতিকুর রহমান আটকের বিষয় নিশ্চিত করেছেন। ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবেদা আফসারী জানান, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীসহ অধ্যক্ষের বক্তব্য শুনেছি। শিক্ষার্থীকে সকলপ্রকার আইনি সহযোগিতা দেয়া হবে।