স্টাফ রিপোর্টার::
১৯৭১ সনের ভয়াল ২৫ মার্চ কালরাতের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে পাক হায়েনাদের বর্বরতার ও গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাড. সুরেশ চন্দ্র দাস শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টায় তার মরদেহ সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধার জন্য রাখা হয়। সেখানে মানুষের ঢল নামে। পুলিশের একটি দল তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা জানায়। রাষ্ট্রীয় সম্মাননা অনুষ্ঠানে আ.লীগের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। শহীদ মিনারে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তাঁর লাশ রাখা হয় সেখানে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ শেষ শ্রদ্ধায়। সর্বস্তরের মানুষের সম্মান জানানোর পর শহরের ধোপাখালি শ্মশানঘাটে সুরেশ দাসের শেষ কৃত্যানুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
উল্লেখ্য গত বৃহস্পতিবার রাতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে যাওয়ার পথে সিলেটে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান তিনি। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের নিবেদিতপ্রাণ, নিষ্টাবান ও সক্রিয় এক নেতা ছিলেন।
১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে বর্বরোচিত গণহত্যা চালানোর সময় তাকেও হত্যার জন্য লাইনে দাড় করানো হয়। ওই দিন কয়েক’শ ছাত্র শিক্ষক কর্মচারীকে নির্মমভাবে হত্যা করে পাকিস্তানী হানাদারার। ঐ হত্যাকা- থেকে যে কয়েকজন ভাগ্যবান বেঁচে গিয়েছিলেন সুনামগঞ্জের প্রখ্যাত আইনজীবী সুরেশ চন্দ্র দাস তাঁদের একজন। মধ্যরাতে পাকিস্তানী সৈন্যরা চারপাশ থেকে জগন্নাথ হলে মেশিনগানের গুলিবর্ষণ করতে থাকে। দক্ষিণ দিকে বাথরুমের লোহার রডের সিঁড়ি দিয়ে ছাদে উঠেন সুরেশ দাশ। ছাদের উপরে গিয়ে পান আরো কয়েকজন সহপাঠিকে। ওখানে তাদের তিনজনকে লাইন করিয়ে গুলি করে পাক বাহিনী। গুলি খেয়ে অন্য সকলে মারা গেলেও সৌভাগ্য ক্রমে বেঁচে যান সুরেশ দাশ পরে তিনি কোনমতে পালিয়ে এসে সুনামগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে কাজ শুরু করেন।