1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০০ পূর্বাহ্ন

দশ দফা দাবিতে খাদ্যমন্ত্রী বরাবরে কৃষক সংহতির স্মারকলিপি

  • আপডেট টাইম :: বুধবার, ২২ মে, ২০১৯, ৬.২৩ এএম
  • ৩৫০ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার:: কৃষক সংহতি কৃষকের পক্ষে আজ ২২ মে খাদ্যমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে। স্মারকলিপির সম্পূর্ণ দাবি হাওর টুয়েন্টিফোর ডটনেটের পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো।

(কৃষক সংহতি
অস্থায়ী কার্যালয় : আয়ান কমপ্লেক্স (২য় তলা), সুনামগঞ্জ।
মোবাইল : ০১৭১২-৩২৯৯৯৭

তারিখ : ২২ মে, ২০১৯ খ্রি.
স্মারকলিপি

মাননীয়
খাদ্যমন্ত্রী
গণপ্রজাতন্ত্রী, বাংলাদেশ সরকার, ঢাকা।

মাধ্যম : জেলা প্রশাসক, সুনামগঞ্জ।

জনাব,
হাওরের সংগ্রামী কৃষকদের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা। সুনামগঞ্জ হাওর অধ্যুষিত সমৃদ্ধ কৃষি অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। খাদ্যউদ্ধৃত্ত এই অঞ্চলে হাওরের ধানই একমাত্র প্রধান ফসল। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জলবায়ু জনিত ক্ষতিসহ নানা কারণে এখানকার কৃষক ফসল নিয়ে উদ্বিগ্ন। দীর্ঘদিন ধরে তারা পূর্ণ ফসল গোলায় তোলতে পারছেনা। প্রাকৃতিক বৈরিতার পাশাপাশি সংগ্রামী কৃষক উৎপাদিত ফসলেরও ন্যায্যমূল্য থেকে বরাবরই বঞ্চিত। ধানের মূল্য না পেলেও কৃষি উপকরণের মূল্যবৃদ্ধিসহ প্রতিনিয়ত উৎপাদন ব্যয় বাড়ছেই। এ অবস্থায় কৃষিজীবন এখন প্রায় বিপর্যস্থ।
মহোদয়,
২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে সুনামগঞ্জে বড় দুর্যোগ ছাড়াই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ফসল তোলতে পেরেছে কৃষক। সরকারি হিসেবে এবছর ১৩ লাখ ১২ হাজার ৫০০ মে.টন ধান উৎপাদন হয়েছে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও কৃষি বিভাগ মওসুমের শুরুতে বলেছিল নদ-নদী খননের ফলে হাওরের দ্রুত পানি নিষ্কাশনের কারণে কৃষক বিআর-২৮ ধান আগাম লাগিয়েছে। এ কারণে এবছর ধানে চিটা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মত দিয়েছিলেন। প্রথমে চিটায় ধান আক্রান্ত ও ক্ষতির কথা স্বীকার করা হয়। মওসুম শেষে কৃষি বিভাগ চিটায় ক্ষতির তথ্য গোপন করেছে। আমাদের পর্যবেক্ষণে চিটায় প্রায় ২৫ ভাগ জমির বিআর ২৮ ধান আক্রান্ত হয়েছে। বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর নিয়ে বিস্তৃত আঙ্গারুলি হাওরের ৭০ ভাগ ধানই চিটায় আক্রান্ত ছিল। অন্যান্য উপজেলায়ও বিআর-২৮ ধানে চিটা ছিল উদ্বেগজনক। আমরা মনে করি এই বীজেই কোন হাওরের ফসল বিধ্বংসী ভাইরাস লুকায়িত। এই ধানে ২০১৮ সালে প্রথম বারের মতো হাওরে ‘ব্লাস্ট’ এবং ২০১৯ সনে ‘চিটা’ ভিন্ন ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিআর-২৮ ধানের ভাইরাস হাওরের জীববৈচিত্রের জন্য ক্ষতিকর কি না তাও ভাবা জরুরি। কোন বহুজাতিক কম্পানি কীটনাশক বিক্রির লোভে এই ধান চাষ করতে কৃষকদের বাধ্য করছে কি না খতিয়ে দেখা উচিত। কৃষকদের মতে এবছরই বিআর-২৮ ধানে চিটায় প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়েছে। মওসুমের শুরুতে কৃষিবিভাগের উপসহকারি কর্মকর্তারা মাঠে না যাওয়ায় কৃষকরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারেনি। ফলে ক্ষতি বেড়েছে। এই কর্মকর্তাদের মাঠপর্যায়ের কৃষকে সঙ্গে সম্পর্কও নেই। ঘরে বসেই তারা মাঠের প্রতিবেদন তৈরি করে।
চিটা ও শিলায় ক্ষতিগ্রস্ত হাজার হাজার কৃষক নিঃস্ব হলেও গত ১৯ মে ঢাকায় খামারবাড়িতে পাঠানো কৃষি বিভাগের প্রতিবেদনে চিটা ও শিলার ক্ষতির তথ্য গোপন করা হয়েছে। আমরা মনে করি কৃষি বিভাগ কৃষকদের সরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত করতেই সর্বনাশা চিটার তথ্য গোপন করেছে। চিটা ও শিলার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বর্গাচাষীরা আগামীতে বর্গাচাষ থেকে বঞ্চিত থাকার আশঙ্কা রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা উৎসাহ হারিয়ে ভিন্নপেশায় চলে গেলে হাওরের কৃষি অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়বে। তাই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহযোগিতা প্রয়োজন। বিশেষ করে স্থানীয় ব্যাংকগুলোতে সরকার পর্যাপ্ত কৃষিঋণ দেবার জন্য বরাদ্দ দিলেও রহস্যজনক কারণে ব্যাংকগুলো কৃষকদের ঋণ দিতে চায়না। কৃষকদের কৃষিঋণ প্রাপ্তি সহজ ও নিশ্চিত করা জরুরি।

মহোদয়,
খাদ্য উদ্বৃত্ত সুনামগঞ্জ জেলায় কৃষকদের সরকারি সহযোগিতায় বৈষম্যমূলক চিত্র লক্ষণীয়। জেলায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ চাষী পরিবার রয়েছে। প্রতি বছর উৎপাদিত প্রায় ৫ লাখ মে.টন চাল খাদ্য উদ্বৃত্ব থাকে। প্রতি বছর কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা উদ্বেগজনক হারে কমছে। বিপরীতে জ্যামিতিক হারে চালকল মালিকদের কাছ থেকে চাল কেনার প্রবণতা বাড়ছে। ২০১৯ সনে মাত্র ৬ হাজার ৫০৮ মে.টন সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। এ বছর কৃষক পরিবার প্রতি মাত্র ১৮.৫৯ কেজি ধান, যার ন্যায্যমূল্য মাত্র ৪৩২ টাকা কৃষক পরিবার প্রতি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এই বরাদ্দ কৃষকদের প্রতি চরম বৈষম্য ও প্রহসনমূলক। এর বিপরীতে ৩১ হাজার ৯৭৭ মে.টন চাল সংগ্রহের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এভাবে কৃষকদের বঞ্চিত করে মিল মালিকদের স্বার্থে ধানের বদলে চাল সংগ্রহের মাত্রা বাড়ছেই। কৃষকদের প্রতি এই বৈষম্য থামানো জরুরি। মাননীয় মন্ত্রী, আমাদের নি¤েœাক্ত দাবির প্রতি আশু দৃষ্টি দিতে আপনার সদয় মর্জি কামনা করছি।

আমাদের ১০ দফা দাবি
১। আগামীতে বিআর-২৮ ধানের বীজ শোধন করে কৃষককে সরবরাহ করতে হবে।
২। ২০১৮ সনে বিআর-২৮ ধানে ব্লাস্ট এবং ২০১৯ সনের চিটার কারণে হাওরের ফসলি ক্ষেত ও জীববৈচিত্রের দীর্ঘস্থায়ী কোন ক্ষতি করেছে কি না তাও গবেষণা করতে হবে।
৩। ২০১৮ ও ২০১৯ সনে চিটা ও শিলায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করে তাদেরকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৪। চলতি মওসুমে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার আলোকে কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বাড়াতে হবে।
৫। ধানসংগ্রহে হয়রানি বন্ধ করে দালালমুক্ত ও ফড়িয়ামুক্ত পরিবেশের সৃষ্টিসহ খাদ্য বিভাগের দুর্নীতি বন্ধ করে শক্তিশালী মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে।
৬। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে ধান সংগ্রহ শুরু করতে হবে।
৭। স্থানীয় ব্যাংকগুলোকে সহজ শর্তে ও হয়রানিমুক্ত পরিবেশে কৃষিঋণ দিতে হবে।
৮। চিটায় আক্রান্ত হাওরের চাষীদের মওসুমের শুরুতে যেসব উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা পরামর্শ প্রদানে উদাসীনতা দেখিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
৯। উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের সপ্তাহে ৫দিন কৃষকের মধ্যে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে।
১০। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য কৃষিবীমা চালুর উদ্যোগ নিতে হবে।

হাওরের কৃষকের পক্ষে

এডভোকেট রুহুল তুহিন
এডভোকেট এনাম আহমেদ
এডভোকেট কল্লোল তালুকদার চপল
শামস শামীম

অনুলিপি :
মাননীয় পরিকল্পনামন্ত্রী
মাননীয় কৃষিমন্ত্রী
মাননীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী
মাননীয় সংসদ সদস্য সুনামগঞ্জ-১
মাননীয় সংসদ সদস্য সুনামগঞ্জ-২
মাননীয় সংসদ সদস্য সুনামগঞ্জ-৪
মাননীয় সংসদ সদস্য সুনামগঞ্জ-৫
মাননীয় সংসদ সদস্য, সংরক্ষিত আসন সুনামগঞ্জ-সিলেট)

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!