স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জ সিলেট সড়কে মামা ভাগ্নে পরিবহনে দুষ্কৃতিকারী কর্তৃক চেতনানাশক ওষুধে অজ্ঞাতনামা সংজ্ঞাহীন যুবকের পরিচয় মিলেছে। সাংবাদিক শামস শামীম ফেইসবুকে ওই অচেতন যুবকের ছবি ছড়িয়ে দিলে বৃহষ্পতিবার সকালে তার স্বজনরা বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের পূর্ব রাজনগর গ্রাম থেকে তার কাছে ছুটে আসেন। তার চেতনা ফিরলেও এখনো পুর্ণ জ্ঞান ফিরেনি বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান।
জানা যায়, গত বুধবার সিলেট থেকে মামা ভাগ্নে পরিবহনে সুনামগঞ্জে আসার পথে সদরপুরে এসে অচেতন হয়ে পড়েন বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মো. মোস্তফা (৩০) নামের এক শ্রমিক। তিনি জাফলং কোয়ারিতে কাজ করে বাড়ি ফিরছিলেন। সিলেট থেকে তাকে টার্গেট করে অজ্ঞান পার্টির সদস্য। তার পাশে বসে চেতনা নাশক ওষুধ প্রয়োগ করে। এক পর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে গেলে তার সর্বস্ব নিয়ে পাগলা বাজারে নেমে যায় ওই দুষ্কৃতিকারী। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নতুন বাসস্টেশনে এনে যাত্রী নামানোর সময় যাত্রীরা এই সংজ্ঞাহীন যুবককে হাসপাতালে নেওয়ার আহ্বান জানান মামা ভাগ্নে পরিবহনের চালক-হেল্পারকে। কিন্তু চালক ও হেল্পার অস্বীকার করে তাকে রাস্তায় নামিয়ে দেয়। এসময় একাত্তর টিভি ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক শামস শামীম যাত্রী ও অন্য একটি পরিবহনের তার পরিচিত এক কর্মীকে একটি সিএনজি ম্যানেজ করে সদর হাসপাতালে পাঠানোর অনুরোধ করেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি সদর থানার ওসি মো. শহিদুল্লাহকে ঘটনা অবগত করে মোটর সাইকেলে হাসপাতালে গিয়ে সংজ্ঞাহীন যুবকের চিকিৎসা নিশ্চিত করেন। হাসপাতালের ভর্তি রেজিস্টারে অজ্ঞাতনামা যুবককে এন্ট্রি করে বাহক হিসেবে সাংবাদিক শামীম তার নাম লেখান। পরে সঙ্গে যাওয়া যুবক ও হাসপাতালের সংশ্লিষ্টদের নিয়ে ৫ তলায় নিয়ে যান তিনি। ৫ তলায় যাওয়ার পর পুলিশের সঙ্গে হাসপাতালে যান পরিবহন শ্রমিক নেতা ফারুক আহমদ ও মিসবাহ মিয়া। তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ওই যুবকের চিকিৎসার জন্য অনুরোধ করেন এবং সঙ্গে যাওয়া যুবককে রাতে তার সঙ্গে থাকার অনুরোধ করেন। এসময় সাংবাদিক শামীম পরিবহন শ্রমিক নেতা ফারুক আহমেদকে মামা ভাগ্নে পরিবহনের চালক ও হেল্পারের অসহযোগিতার কথা উল্লেখ করে মানবিক বিষয়ে পরিবহন শ্রমিকদের সচেতন করার অনুরোধ জানান। ওই সময় তিনি ওই যুবকের কয়েকটি ছবি ফেইসবুকে পোস্ট করে উপস্থিতিদেরও ফেইসবুক একাউন্ট থেকে এই যুবকের ছবি ছড়িয়ে দিয়ে স্বজনদের দৃষ্টি গোচরের জন্য অনুরোধ জানান। বৃহষ্পতিবার বিশ্বম্ভরপুরের জনৈক ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া অজ্ঞাতনামা যুবকের ছবিটি তার পরিবারকে দেখালে যুবক মো. মোস্তফার মা ও খালু শামসুল ইসলাম হাসপাতালে ছুটে আসেন।
হাসপাতালের ব্রাদার মো. বুরহান বলেন, দুই যুবক সংজ্ঞাহীন যুবককে বুধবার রাতে নিয়ে আসেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই সাংবাদিক শামস শামীম ছুটে এসে কর্তব্যরত ডাক্তারকে চিকিৎসা শুরু করার অনুরোধ জানান। অজ্ঞানতানা যুবকের ভর্তি রেজিস্টারে বাহক হিসেবে সাংবাদিক শামীমের নাম এন্ট্রি করা হয়। সাংবাদিক শামীম, আমি, সঙ্গে আসা যুবক ও হাসপাতালের দুই কর্মীকে নিয়ে আমরা ৫ তলায় গিয়ে তার চিকিৎসা শুরু করি। এখন তার পরিচয় মিলেছে। স্বজনরাও এসেছেন। তার অবস্থা কিছুটা ভালো।