সাজ্জাদ হোসেন শাহ : টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানি এসে তাহিরপুর উপজেলার অর্ধ্ব শতাধিক গ্রামের মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জে ৪১৫ মি.মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সুনামগঞ্জের সুরমা নদীসহ বিভিন্ন নদীর পানি বিপদসীমার ৬৮ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তাহিরপুর উপজেলার বাগলী থেকে চানঁপুর ও তাহিরপুর সদর থেকে সুনামগঞ্জ সড়ক যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ ব্যাবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আনোয়ারপুর ব্রীজের এপ্রোচের পূর্বাংশের রাস্তাটি পানির তোড়ে কয়েক স্থানে ভেঙ্গে গেছে। এছাড়াও তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়কের পাশর্^বর্তী বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ারখলা ১০০ মিটার ব্রীজ থেকে দূর্গাপুর পর্যন্ত সড়ক সম্পূর্ণ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে করে জেলা সদও বিশ^ম্ভরপুর ও তাহিরপুর উপজেলায় যাতায়াতকারী হাজার হাজার লোক চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। এ সড়কে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শুক্রবার রাত পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। পাহাড়ী ছড়া, যাদুকাটা ও মাহারাম নদীর বালি পাথর উত্তোলনকারী প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছে। অপরদিকে উপজেলার চানঁপুর, বড়ছড়া, লাকমা, চারাগাও, কলাগাও, লামাকাটা ও বাগলী ছড়া দিয়ে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ছড়ার তীরবর্তী শতাধিক ঘরবাড়ী ধ্বংস করেছে। উপজেলার ৩০টিরও বেশী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করায় ক্লাস বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, টানা কয়েকদিনে বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা আকস্মিক পাহাড়ী ঢলের পানি এসে উপজেলার ইসলামপুর, পাতারগাও, টাকাটুকিয়া, জামালগড়, রাজধরপুর, রামজীবনপুর, সাহেব নগর, পৈন্ডুব, গোপালপুর, মারালা, নোয়ানগর, নোয়াগাঁও, ইক্রামপুর, জগদীশপুর, সাহসপুর, সুলেমানপুর, উমেদপুর, আনন্দনগর, পাটাবুকা, ভবানীপুর, দুমাল, লামাগাঁও, বিনোদপুর, ইন্দ্রপুর, পানিয়াখালী, জয়পুর, গোলাবাড়ী, ছিলানি তাহিরপুর, ভোরারঘাট, কামালপুর, জামালপুর, মাটিয়াইন, তরং, নয়াবন্ধ, বালিয়াঘাট, দুধের আইউটা, জামলাবাজ, রসুলপুর, কাউকান্দি, কামারকান্দি, ধরুন্দ, কাঞ্চনপুর, ইউনুছপুর পাতারগাঁও, মাহতাবপুর, বড়দল সহ প্রায় ৫০টি গ্রামের অধিক মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে। এছাড়া উপজেলার উজান এলাকার আমন ধানের প্রায় দু’শ একর জমির বীজতলা ও শাকসব্জির ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে বলে স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল ও শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খসরুল আলম জানান, টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা অশস্মিক পাহাড়ী ঢলের পানি এসে উপজেলার অর্ধ্বশতাধিক গ্রামের মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে। সীমান্তবর্তী পাহাড়ী ছড়ার তীরবর্তী ঘরবাড়ীর ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। সাধারন খেটে খাওয়া মানুষজন মানববেতর জীবন যাপন করছেন।