স্টাফ রিপোর্টার::
দিরাই উপজেলার রফিনগর ইউনিয়নস্থিত মাছিমপুর গ্রামের নৌ-দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সাথে সাক্ষাত করে তাদেরকে সহায়তার পাশাপাশি শান্তনা দিয়েছেন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ। শুক্রবার সকালে ওই গ্রামে গিয়ে তাদের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি নৌ-দুর্ঘটনায় নিহতদের অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেন। নিহতদের পরিবারের মধ্যে শুকনা খাবারসহ নগদ সরকারি সহায়তা হিসেবে প্রদান করেন জেলা প্রশাসক। তিনি নিহতদের আত্নার শান্তি কামনা করে পরিবারের সদস্যদের শোক কাটিয়ে ওঠার অনুরোধ জানান। পাশাপাশি তিনি নৌ দুর্ঘটনা রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।
এ সময়ে দিরাই উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) বিশ্বজিত দেব, জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা মোঃ ফরিদুল হক, ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর আবু হানিফা তালুকদার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, রফিনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ রেজুয়ান হুসেন খান, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যগণ এবং এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক নৌ দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য সকল নৌকায় লাইফ জ্যাকেট ব্যাবহার নিশ্চিত করা, হাওরে দুর্যোগকালীন সময়ে আশ্রয় গ্রহণের জন্য টাওয়ার/বজ্র নিরোদক দন্ড স্থাপন ও নৌ দুর্ঘটনা এরানোর জন্য সকলের সচেতনতা বৃদ্ধির অনুরোধ জানান। পরে তিনি রফিনগর ইউনিয়নের বাংলাবাজার জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন এবং নৌ-দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন। এ সময়ে তিনি মসজিদে উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র ১০টি বিশেষ উদ্যোগ, বাল্য বিবাহ নিরোধ এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে সচেতনতামূলক বক্তব্য প্রদান করেন। জেলা প্রশাসকের এই বক্তব্যে উজ্জীবিত হন উপস্থিত মুসল্লিগণ।
উল্লেখ্য সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার রফিনগর ইউনিয়নস্থিত কালিয়াকুটা হাওরে গত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখ বিকাল ০৫:৩০ ঘটিকায় ৩১ জন যাত্রী বোঝাই ইঞ্জিনচালিত একটি নৌকা কালিয়াকুটা হাওরের আইনুল বিলের পাশে ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। নৌকা ডুবির ঘটনায় ২১ (একুশ) জন আরোহীকে জীবিত উদ্ধার করা হয় এবং ১০ (দশ) জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতদের মধ্যে ৭জন শিশু এবং ৩জন মহিলা রয়েছেন। মৃত উদ্ধারকৃতরা হচ্ছেন (১) জনাব সোহান মিয়া (২ বছর), পিতা-আফজল মিয়া, সাং-নোয়ারচর (২) শামীম (২ বছর), পিতা-বাবুল মিয়া, সাং-মাছিমপুর, (৩) আবির মিয়া (৩ বছর), পিতা-বদরুল মিয়া, সাং-মাছিমপুর, (৪) শহিদুল (৪বছর), পিতা-ফিরোজ আলী, সাং-পেরুয়া, (৫) আসাদ (৪ বছর), পিতা-আবজল মিয়া, সাং-নোয়ারচর (৬) শান্তা (৩ বছর) পিতা-জাসদ আলী, সাং-মাছিমপুর, (৭) তাছমিনা বেগম (১১) পিতা-আজর আলী গ্রাম-মাছিমপুর, (৮) আজিরুন (৩০ বছর), স্বামী-আবজল মিয়া, সাং-নোয়ারচর, (৯) রহিতুন ন্নেছা (৩৪ বছর) স্বামী-আরজ আলী, সাং-মাছিুমপুর, (১০) করিমা (৬৫ বছর) স্বামী-নছিবুল্লা, সাং-হাসনাবাদ, উপজেলা-দিরাই, জেলা-সুনামগঞ্জ। আজ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখ জেলা প্রশাসন, সুনামগঞ্জের পক্ষ থেকে নৌ দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারকে ২০,০০০/-(বিশ হাজার) টাকা করে নগদ মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে এবং পরবর্তীতে অন্যান্য সহায়তা প্রদানেরও আশ্বাস প্রদান করেন।