হাওর ডেস্ক::
২০১৭ ও ২০১৮ সালের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয় এটি প্রকাশ করে।
চলচ্চিত্র ‘সত্তা’র ‘না জানি কোন অপরাধে’ গানটির রচয়িতা হিসেবে ২০১৭ সালের শ্রেষ্ঠ গীতিকার নির্বাচিত হয়েছেন সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামের সন্তান সেজুল হোসেন। গানটি সুর করার জন্য বাপ্পা মজুমদারকে শ্রেষ্ঠ সুরকার নির্বাচিত করা হয়। সেরা গায়িকা হয়েছেন মমতাজ। একই ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ গায়ক নির্বাচিত হয়েছেন জেমস। আগামী ৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন।
সেজুল হোসেন ২০০১ থেকে সাহিত্যের ছোট কাগজে লেখা শুরু করেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থ : ফুলপাখির জন্মমৃত্যু, শুদ্ধস্বর স্মৃতিমেঘ স্বপ্নজলরেখা, স্বপ্নসিঁড়ি দখিন দুয়ারের হাওয়া, ভাষাচিত্র কবিতা। এছাড়াও নিয়মিত লিখছেন গান, টিভি নাটক। নির্মাণের সঙ্গেও যুক্ত। স্বপ্নসিঁড়ি অডিও ভিজুয়াল নামের একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী তিনি। সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত হন ২০০৪ সালে। ২০১৪ সালের শেষের দিকে যোগ দেন বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন নিউজে। লেখাটাকেই নিজের জীবনের একমাত্র গভীর প্রয়োজন মনে করেন।
সেজুল হোসেন তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, শ্রোতাদের গান ‘না জানি কোন অপরাধে’র জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৭ এর শ্রেষ্ঠ গীতিকারের নামটা আমার। আমি নিতান্তই ছোট মানুষ, সামান্য মানুষ, অনেকদিন পর কাকতালীয়ভাবে একটা বড়ো খুশির খবর নিয়ে যাচ্ছি মায়ের কাছে। ‘আমি ছাড়া কেউ নাই আমার দুখের পরিজন/আমারে পুড়াইতে তোমার এতো আয়োজন।’ এই গানের বক্তব্য আমার হয়েও যেমন আপনাদের, ‘গীতিকার ক্যাটাগরিতে’ পুরস্কারের সরকারি ঘোষণার আনন্দটাও আমার হয়েও আপনাদের। অভিনন্দন জানবেন কোটিপ্রাণ শ্রোতা। আপনারা হৃদয়ের কান দিয়ে গান শুনেন বলেই এই গানের কথায় অস্তিত্বের বিপন্নতা টের পেয়েছেন আর নানারকম সংশ্লিষ্টতার ফাঁদে পড়ে, নানাবিধ অভিঘাতের যাপন যন্ত্রণায়, শ্বাসকষ্টের মধ্যে থেকেও মনে মনে প্রশ্ন জারি রেখেছেন- ‘মায়া ঘেরা ভবের জালে আমায় কইরা বন্দি/না জানি কী করছো উদ্দেশ, কিবা করছো ফন্দি।’ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৭ সেরা গায়িকা ও সেরা সঙ্গীত পরিচালক মনোনীত হওয়ায় অভিনন্দন জানাই গানটির কণ্ঠশিল্পী মমতাজ আপা ও বাপ্পা দাকেও। অভিনন্দন জানবেন সত্তা চলচ্চিত্রের পরিচালক, প্রযোজক। সিনেমাটি না বানালে, গানটি হয়তো এই পুরস্কারের জন্য প্রাসঙ্গিক হতো না, পৌঁছতোনা কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ের কান পর্যন্ত।
অপরদিকে, ২০১৭ সালের জন্য আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনয়শিল্পী এটিএম শামসুজ্জামান ও সালমা বেগম সুজাতা এবং ২০১৮ সালের জন্য পেয়েছেন অভিনেতা প্রবীর মিত্র ও এমএ আলমগীর। এবার দুই বছরের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ‘ঢাকা অ্যাটাক’ (২০১৭) ও ‘পুত্র’ (২০১৮)।
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা যৌথভাবে শাকিব খান- সত্তা (২০১৭) ও আরেফিন শুভ- ঢাকা অ্যাটাক (২০১৭)। অন্য বছরের শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ফেরদৌস-পুত্র (২০১৮) ও সাইমন- জান্নাত (২০১৮)। ২০১৭ সালের শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা (হালদা) ও ২০১৮ সালের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হয়েছেন জয়া আহসান (দেবী)। সেরা হলেন যারা ২০১৭ সালে ‘গহীন বালুচর’ সিনেমার পরিচালক বদরুল আনাম সৌদ আর ২০১৮ সালের সেরা পরিচালকের পুরস্কার পেয়েছেন ‘জান্নাত’ সিনেমার পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান মানিক।
২০১৮ সালে শ্রেষ্ঠ গায়ক হলেন রাতুল (পুত্র), শ্রেষ্ঠ গায়িকা যৌথভাবে সাবিনা ইয়াসমিন (পুত্র) ও আঁখি আলমগীর (একটি সিনেমার গল্প)। শ্রেষ্ঠ গীতিকার পুরস্কার যৌথভাবে পেলেন জুলফিকার রাসেল (পুত্র) ও কবির বকুল (নায়ক)। শ্রেষ্ঠ সুরকার রুনা লায়লা (একটি সিনেমার গল্প)।