হাওর ডেস্ক ::
শিক্ষকদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট (আইডি) নিয়মিত মনিটরিং করে বিধি পরিপন্থি কনটেন্টের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। এছাড়াও আগামী বছর থেকে শিক্ষকদের ডিজিটাল হাজিরা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গুণগত শিক্ষা বাস্তবায়নে দেশের সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষক, ছাত্র এবং কর্মকর্তাদের বেশকিছু সিদ্ধান্ত পরিপালনের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা অধিদপ্তর।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে সম্প্রতি ঢাকায় আর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘মানসম্মত শিক্ষা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তের আলোকে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ এবং সংশ্লিষ্টদের চিঠি পাঠিয়েছে মাউশি।
গত ১৬ অক্টোবরের ওই সভা থেকে গুণগত শিক্ষা বাস্তবায়নে নির্বাচিত কলেজগুলোতে কনফারেন্স আয়োজন, পিয়ার রিভিউ জার্নাল প্রকাশ, সকল সরকারি কলেজে ছাত্র-শিক্ষক উন্নয়নের জন্য অ্যান্টি বুলিং কমিটি গঠন এবং শিক্ষার্থীদের বেতন অনলাইনে গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছে অধিদপ্তর।
শিক্ষকদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সদ্য যোগদান করা প্রভাষকদের ওরিয়েন্টেশন ট্রেনিং (চাকরি বিধিমালা, ক্লাসে পাঠদান পদ্ধতি, উত্তরপত্র মূল্যায়নসহ বিবিধ বিষয়), সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার, ক্লাসে শিক্ষক উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ ও একাডেমিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষক মূল্যায়ন পদ্ধতি চালুকরণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার এবং করণীয় সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়, মন্ত্রিপরিষদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের গাইডলাইন এবং চাকরির বিধানাবলী অনুসরণ করে শিক্ষকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করবেন।
অধ্যক্ষরা তার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সব কর্মকর্তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবেন। কোনো শিক্ষকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার বিধির ব্যত্যয় ঘটালে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রয়োজনে তদন্ত করে এর প্রমাণকসহ আঞ্চলিক অফিসের মাধ্যমে মাউশি অধিদপ্তরকে অবহিত করবেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মনিটরিংয়ে মাধ্যমিক শিক্ষার আঞ্চলিক পরিচালক, অধ্যক্ষদের এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশ দিয়েছে মাউশি।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নিশ্চিতকরণের নির্দেশনায় বলা হয়, আঞ্চলিক পরিচালক এবং অধ্যক্ষরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগামী ছয় মাসের মধ্যে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত এবং অননুমোদিত অনুপস্থিতি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। এ পর্যায়ে অধ্যক্ষরা বিভাগীয় প্রধানদের মাধ্যমে নিয়মিত হাজিরা সংরক্ষণ করবেন।
যদি হাজিবা নিশ্চিত না করা যায়, তাহলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল হাজিরা চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করবেন আঞ্চলিক পরিচালক এবং অধ্যক্ষরা।
শিক্ষক মূল্যায়নে বলা হয়, সরকারি কলেজে কর্মরত শিক্ষকদের একাডেমিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষক মূল্যায়ন পদ্ধতি চালুর লক্ষ্যে অবিলম্বে একটি ফরমেট তৈরি করে, তা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠাতে হবে। মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) এটি বাস্তবায়ন করবেন।
ছাত্রীদের যৌন হেনস্তা রোধে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক উন্নয়ন সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়, প্রতিটি কলেজে একটি করে অ্যান্টি বুলিং কমিটি থাকবে। কমিটিতে একজন নারী সদস্য থাকবেন।
এছাড়াও অভিযোগ বাক্স স্থাপন করতে হবে। কোথাও কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে অধ্যক্ষরা তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। প্রয়োজনে তদন্ত করে প্রমাণসহ আঞ্চলিক অফিসের মাধ্যমে মাউশি অধিদপ্তরকে অবহিত করবেন।
ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে মেন্টরিংয়ের ব্যবস্থা করবেন অধ্যক্ষরা। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বেতন অনলাইনে গ্রহণ করা হবে।
আঞ্চলিক পরিচালক এবং অধ্যক্ষরা ছাত্র-শিক্ষকদের সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করবেন।
শিক্ষকদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সদ্য যোগদান করা প্রভাষকদের ওরিয়েন্টেশন ট্রেনিংয়ের আয়োজন করতে হবে। যাতে চাকরি বিধিমালা, ক্লাসে পাঠদান পদ্ধতি, উত্তরপত্র মূল্যায়নসহ বিবিধ বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
সেমিনার সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে বলা হয়, সরকারি কলেজগুলোতে প্রতিটি বিভাগে বছরে দুটি করে সেমিনারের আয়োজন করবেন অধ্যক্ষরা।
এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন এবং প্রতি মাসে অগ্রগতি প্রতিবেদন অধিদপ্তরে পাঠানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছে মাউশি।