হাওর ডেস্ক ::
স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতক-দালালদের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাম আসায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, এমন ভুলের দায় অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। একাত্তরের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। রাজাকারের তালিকা মন্ত্রণালয় নতুনভাবে করেনি। ভুল-ভ্রান্তি অনেক বেশি হলে এ তালিকা প্রত্যাহার করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী। আজ সোমবার সকালে শিল্পকলা একাডেমীতে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর রবিবার ১০৭৮৯ রাজাকারের তালিকা প্রকাশ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। কিন্তু এ তালিকা নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়। সেখানে অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের নাম চলে আসে। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক-গবেষক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ এই তালিকা প্রকাশের উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর প্রকাশিত তালিকাটি অগোছালো, অসম্পূর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণভাবে প্রকাশিত হওয়ায় তা সমালোচনার মুখে পড়েছে। গবেষকদের মতে, সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হলে একাত্তরের ঘাতক-দালালদের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করা এখনো সম্ভব। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী প্রতিটি রাজনৈতিক সংগঠন এবং ওই সব সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে গঠিত শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও মুজাহিদ বাহিনীর আলাদা তালিকা তৈরি করা উচিত বলে মনে করেন তাঁরা। তাঁদের মতে, ওই সব বাহিনী ও সংগঠনের অপরাধ ও দায়ও চিহ্নিত করা উচিত।
গতকাল সোমবার বিজয় দিবসে সারা দেশে ওই তালিকা ছিল প্রধান আলোচ্য বিষয়। প্রত্যেকেই যার যার এলাকার পরিচিত ও স্বীকৃত ঘাতক-দালালের নাম খোঁজেন তালিকায়। তা না পেয়ে হতাশ হয়েছেন অনেকেই। ৬৫৯ পৃষ্ঠার ওই তালিকা থেকে কোনো নাম সহজভাবে খুঁজে বের করারও উপায় নেই। ডিজিটাল যুগে এ রকম ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে তালিকা প্রকাশের কারণেও অনেকে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। তালিকায় অনেক নাম রয়েছে, যার কোনো ঠিকানা-পরিচয় নেই।
গত রবিবার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ‘একাত্তরের রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা প্রকাশ (প্রথম পর্ব)’ নামে তালিকাটি প্রকাশ করেছে মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে নোটিশ বোর্ডে। তালিকা প্রকাশকালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, নতুন কোনো তালিকা তৈরি করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘যাঁরা একাত্তরে রাজাকার, আলবদর, আলশামস বা স্বাধীনতাবিরোধী হিসেবে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন এবং যেসব পুরনো নথি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত ছিল, সেটুকু প্রকাশ করছি।’ তিনি জানান, এটি প্রথম ধাপ; এতে ১০ হাজার ৭৮৯ জনের নাম আছে। পরবর্তী তালিকা আগামী ২৬ মার্চ প্রকাশ করা হবে।