সাজ্জাদ হোসেন শাহ্, :
তাহিরপুরে মুক্তিপনের ৮০ হাজার টাকা না পেয়ে ৭ বছরের এক শিশুকে খুন করে বস্তাবন্ধি করে শিশুর লাশ বাড়ীতে রেখে গেছে অপহরণকারীরা। খুন হওয়া শিশুটির নাম মো. তোফাজ্জল হোসেন (৭)। সে উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বাশতলা গ্রামের জোবায়েল মিয়ার ছেলে। শনিবার ভোরে স্বজনরা বস্তার মধ্যে লাশ দেখতে পেয়ে তাহিরপুর থানায় বিষয়টি জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বস্তার ভিতর থেকে তোফাজ্জলের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ মর্গে পাটিয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন, সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) মো. মিজানুর রহমান পিপিএম, তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ দুইজনকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলেন, একই গ্রামের পার্শ¦বর্তী কালা মিয়া ও তার ছেলে সেজাউল মিয়া। ঘাতকরা শিশুটির একটি চোখ উপড়ে ফেলে এবং একটি পা ভাঙ্গাসহ শরীলের বিভিন্ন স্থানে মারাত্বক আঘাত করে নৃশংস ভাবে হত্যা করেছে।
পুলিশ ও পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৮ জানুয়ারি বিকেলে অপহরণকারী চক্রটি বাশতলা গ্রামে শিশুটির দাদা জয়নাল আবেদীনের বাড়ির সামনে থেকে হঠাৎ নিখোঁজ হয় তোফাজ্জল। এরপর তার আত্মীয় স্বজন ও প্রতিবেশীদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে খোঁজ নিয়েও তাকে পাওয়া যাচ্ছিলনা। এ ঘটনায় শিশুটির দাদা জয়নাল আবেদীন ৯ জানুয়ারি তাহিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ৯ই জানুয়ারী রাতের কোন এক সময়ে অজ্ঞাত পরিচয়ে ৮০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবী করে শিশুটির পিতার বসত ঘরের বারান্দায় শিশুটির পায়ের এক জুড়া জুতাসহ একটি চিঠি ফেলে রেখে যায়। চিঠিতে লিখা ছিল শুক্রবার রাতে শিশুরটির পিতার গোয়াল ঘরে ৮০ হাজার টাকা রাখলে রাতের কোন এক সময় শিশুটিকে তারা অক্ষত অবস্থায় ফেরত দিবে এবং বিষয়টি থানা পুলিশ বা অন্য কাউকে অবগত করলে শিশুটিকে তারা মেরে ফেলবে।
শিশুর পিতা জোবায়েল মিয়া এবং মা রিয়া বেগম জানান, প্রায় ১ বছর আগে তার ননদ শিউলি বেগম কে বিয়ে দেন একই গ্রামের কালা মিয়ার ছেলে সেজাউল মিয়ার কাছে। বিয়ের ১ মাস পর তার ননদ শিউলি বেগম কে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় সেজাউল মিয়া। এ নিয়ে প্রায় সময় সেজাউলদের সঙ্গে ঝগড়া ভিভেদ লেগে থাকতো তাদের। তারা বলেন, ঘটনার কিছুদিন আগেও তার ননদ কে মারপিট করে আম গাছের নিছে বেঁধে রাখে সেজাউল। তোফাজ্জলের পরিবারের লোকজন উপস্থিত সাংবাদিকদের অভিযোগ করে বলেন, কালা মিয়া, সেজাউল চক্ররাই তার ছেলেকে অপহরণ করে খুন করেছে। এসময় তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন তারা। তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে কয়েকজন কে পুলিশ আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এখনেই কিছু বলা যাচ্ছেনা, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।