হাওর ডেস্ক::
ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনকে অসাংবিধানিক উল্লেখ করে সুপ্রিমকোর্টে মামলা দায়ের করেছে কেরালা সরকার। মঙ্গলবার রাজ্যটির সিপিএম নেতৃত্বাধীন এলডিএফ সরকার মামলাটি দায়ের করে। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবার কেন্দ্রীয় সরকারের করা আইনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলো কোনো রাজ্য সরকার।
ভারতীয় সংবিধানের ১৩১ নম্বর ধারা মেনে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়, সংবিধানের ১৪, ২১ ও ২৫ নম্বর ধারায় সকলের সমান অধিকার, বাঁচার অধিকার ও স্বাধীনভাবে ধর্ম মানার অধিকারের কথা বলা আছে। কিন্তু বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন এই তিনটি ধারার সম্পূর্ণ বিরোধী।
কেরালা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই আইন মূলত নির্দিষ্ট একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে (মুসলিম) টার্গেট করে করা হয়েছে। এর মাধ্যমে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুরা সুবিধা পাবে। কিন্তু শ্রীলঙ্কায় থাকা তামিল হিন্দু কিংবা নেপালের মাধেশি জনগোষ্ঠীর কথা ভাবা হয়নি।
এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর রাজ্য বিধানসভায় নাগরিকত্ব আইন বাতিলের প্রস্তাব পাশ করা হয়। তখন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন সাফ জানিয়ে দেন, কেরালায় এ আইন কার্যকর করতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, এটা হিন্দুরাষ্ট্র তৈরির একটি ষড়যন্ত্র। যা ভারতীয় সংবিধানের সাম্যবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতার পরিপন্থী।
রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেরালায় ধর্মনিরপেক্ষতার এক দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। যুগে যুগে গ্রিক, রোমান ও আরব দেশ থেকে মুসলিম এবং খ্রিস্টানরা এই রাজ্যে এসে বসবাস শুরু করে। তারা এখন রাজ্য ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত। তাই সংবিধান পরিপন্থী এ আইন কোনোভাবেই কেরালায় কার্যকর করতে দেয়া হবে না।
বিজেপি সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আরএসএসের স্বার্থ বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছে মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। তারা হিটলার ও মুসোলিনির কাঠামো অনুসরণ করছে। তাই একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ‘অভ্যন্তরীণ বিপদ’ বলে চিহ্নিত করেছে। কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা ৩৭০ ধারা বাতিল করাও সেই স্বার্থ বাস্তবায়নের অংশ।