মধ্যনগর প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিম মাহমুদের বিরুদ্ধে কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্পের কাজে শ্রমিকের পরিবর্তে এক্সক্যাভেটর মেশিন দিয়ে মাটি কাটার অভিযোগ উঠেছে। চেয়ারম্যান প্রভাবশালী হওয়ায় তার এমন অনিয়মের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পাচ্ছেনা। এতে করে ওই কাজে নির্ধারিত শ্রমিকেরা তাদের পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
জানা যায়, কর্মসৃজন কর্মসূচির আওতায় উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধীদপ্তর থেকে চলতি অর্থ বছরে মোট ১৬ লাখ ৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বাসাউড়া ব্রীজ থেকে নোয়াবন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ ৮ লাখ ৮ হাজার, চাপাইতি বাজারের আরসিসি ঢালাই সড়ক থেকে মরতুজ আলীর বাড়ি পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা ও শাহপুর গ্রামের পূর্বপাশ থেকে পশ্চিমপাশ পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ ৪ লাখ ৮০ হাজার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্পে নির্ধারিত শ্রমিকেরা কাজ করার কথা থাকলেও চেয়ারম্যান আজিম মাহমুদ এক্সক্যাভেটর মেশিন দিয়ে কাজ করছেন। মেশিন আনা নেওয়ার জন্য সড়কের পাশের গাছ গুলোকে নিধন করছেন তিনি।
গত সোমবার বিকেলে বাসাউড়া ব্রীজ থেকে নোয়াবন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে মেশিন দিয়ে কাজ করার খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চেয়ারম্যানকে মুঠোফোনে কাজ বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দেন। তখন চেয়ারম্যান সেখানে উপস্থিত হয়ে কাজ বন্ধ রাখেন। কিন্তু ঘন্টা দুয়েক পরে চেয়ারম্যান আবারও খনন যন্ত্র দিয়ে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ করান। এছাড়াও মঙ্গলবার সকালেও মেশিন দিয়ে কাজ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘চেয়ারম্যান প্রভাব খাটিয়ে শ্রমিকের পরিবর্তে মেশিন দিয়ে কাজ করাচ্ছেন। মেশিন আনা নেওয়ার সুবিধার্থে সড়কের পাশে থাকা আমাদের গাছগাছালিও নষ্ট করছেন। সোমবার মধ্যরাত পর্যন্ত এবং মঙ্গলবার সকালেও মেশিন দিয়ে মাটি উত্তোলন করা হয়েছে।’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘এ সংক্রান্ত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে যদি সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আজিম মাহমুদ বলেন, ‘মেশিন দিয়ে কাজ বন্ধ রেখেছি। পরবর্তীতে শ্রমিক দিয়ে কাজ করা হবে। ওইদিন রাতে বা আজ (মঙ্গলবার) সকালে মেশিন দিযে কোনো কাজ করাইনি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবু তালেব বলেন, ‘মেশিন দিয়ে কাজ বন্ধ রেখে শ্রমিক দিয়ে কাজ করার জন্য চেয়ারম্যানকে বলেছি। কাজ বন্ধ রেখেছেন বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান। যদি পুনরায় তিনি মেশিন দিয়ে কাজ করেন তাহলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’