হাওর ডেস্ক ::
গর্ভে থাকা অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় রোধে নীতিমালা করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় রোধে নীতিমালা করতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা নিতে আসা অনাগত শিশুর তথ্য সংরক্ষণের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রুল জারি করেন। স্বাস্থ্য, নারী ও শিশু এবং সমাজ কল্যাণ সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সাতজনকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসানের করা এক রিট আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে এ রুল জারি করা হয়। রিট আবেদনকারীপক্ষে তিনি নিজে ও ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মো. গোলাম সারোয়ার পায়েল।
গর্ভবতী নারী ও অনাগত সন্তানের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে এবং গর্ভের শিশুর লিঙ্গ পরিচয় জানার উদ্দেশ্যে পরীক্ষা করা ও লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে গতবছর পহেলা ডিসেম্বর লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। স্বাস্থ্য, নারী ও শিশু এবং সমাজ কল্যাণ সচিবকে পাঠানো নোটিশের জবাব না পেয়ে রিট আবেদন করা হয়। রিট আবেদনে বলা হয়, চীন-ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পেটে থাকা সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ভারতে আলাদা আইন করা হয়েছে।
আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, আমাদের দেশে এখনও বেশির ভাগ মানুষের ছেলে সন্তানই কাম্য। তারা মনে করেন, ছেলেরা বংশের ধারক। ছেলে সন্তান ভবিষ্যতে তাদের সুরক্ষা দেবে। এ অবস্থায় যদি গর্ভের সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় জানা যায় এবং তা মা-বাবার কাঙ্খিত না হয়, তাহলে তা গর্ভবতী মায়ের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার ওপর প্রভাব ফেলে।
তিনি বলেন, মা যদি হতাশায় ভোগেন, তবে শিশুর মস্তিস্ক বিকাশ ঠিকভাবে হয় না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে পারিবারিক চাপে গর্ভপাত ঘটানো হয়। তাই বাংলাদেশে নারী ও শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পেটের শিশুদের লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ বন্ধ হওয়া জরুরি। তাই রিট আবেদন করা হয়। আদালত রুল জারি করেছেন।