হাওর ডেস্ক ::
সদ্য অনুষ্ঠিত ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন বাতিল চাওয়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ফখরুল সাহেব কেন এত ক্ষেপে গেলেন জানি না।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে দফতর প্রধান এবং প্রকল্প পরিচালকদের সঙ্গে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালাচনা ও নাগরিক সেবা প্রদান বিষয়ক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের এ কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকা সিটি নির্বাচন বাতিল এবং পুনরায় নির্বাচন চেয়ে বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থা নেই।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব হিসেবে পারফরমেন্সের ব্যর্থতাই বোধহয় তার এসব কথা বলার কারণ। তিনি তো কোনো সাফল্য দেখাতে পারেননি। আমি মনে করি, বিএনপি বর্তমানে যে অবস্থায় আছে নেতৃত্ব সংকটে এবং নিজেদের মধ্যে যে অবস্থা, তাতে তারা যে ভোট পেয়েছে, শতাংশের দিক থেকে অনেক ভালো করেছে। এটা আমি অবশ্যই বলব, স্বীকারও করব। তবে এই নির্বাচনে কারচুপি বা জালিয়াতি হয়েছে-এমন কোনো প্রমাণ মনে হয় পর্যবেক্ষরাও দিতে পারেননি বা বলতে পারেনি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বড় দাগের সংঘাতও হয়। কিন্তু এবার বিচ্ছিন্ন দু- একটা ঘটনা ছাড়া নির্বাচন ছিল মোটামুটি শান্তিপূর্ণ। নির্বাচন ছিল কারচুপি, জালিয়াতি মুক্ত। কারচুপির কোনো সুযোগ ছিল না। কিন্তু ফখরুল সাহেব কেন এত ক্ষেপে গেলেন জানি না।’
‘কেন্দ্র দখল, কারচুপি, জালিয়াতি করে নির্বাচনে জেতার কি কোনো সুযোগ ছিল? সেটা এখানে সম্ভব না। কোথাও কোথাও ইভিএম মেশিনে সমস্যা হয়েছে। কিন্তু এ মেশিনে কারচুপি করা কারও পক্ষে সম্ভব না। এই মেশিনে জালিয়াতি করার কোনো সুযোগ নেই। আসলে ইভিএম করা হয়েছে জালিয়াতি ও কারচুপিমুক্ত নির্বাচন করার জন্য। এটা তাদের কেন পছন্দ হয় না আমি সেটা জানি না।’
নির্বাচনের আগে বিএনপি ভোটকেন্দ্রে সন্ত্রাসী ও ঢাকার বাইরে থেকে সন্ত্রাসী এনে জড়ো করবে এমন আশঙ্কার কথা বলেছিলেন। কিন্তু সেটা তো হয়নি-এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি অবাক হচ্ছি নির্বাচনের দিনতো তাদের লোকই দেখলাম না। তাদের যথেষ্ট লোক এসেছিল, মেয়র প্রার্থীদের বড় বড় মিছিল হয়েছিল। তারা এত লোক নিয়ে মিছিল করল সে লোকগুলো ভোটের দিন গেল কোথায়? সেটা তো আমিও ভাবছি। অনেকেরই ভাবনার বিষয়?’
আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থীরা বলেছেন, ভোটের ফলাফল পাল্টে দেয়া হয়েছে-এই বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যেভাবে আশঙ্কা করা হয়েছিল এই নির্বাচনে বিদ্রোহীদের জয়জয়কার…সে অবস্থা কিন্তু হয়নি। আমাদের হিসাব মতো ১৩ জন বিদ্রোহী প্রার্থীর জয় হয়েছিল। বিদ্রোহীরা যে সুবিধা করতে পেরেছে তা কিন্তু নয়। আমরা দল থেকে যাদের মনোনয়ন দিয়েছি বেশিরভাগ তারাই কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হয়েছে।’
‘হেরে গেলে কতজন কত কথা বলে। এসব চিন্তা করতে গেলে অনেক কিছুই ভাবতে হবে। যিনি হেরে যান তিনি কি হার মেনে নেন? বিএনপিও মানছে না। যারা হেরে গেছেন তারা কেউই মানছেন না। তার কাছে মনে হবে সে আরও ভালো করত, নির্বাচনে জয়ী হতো। তাই ফলাফল পাল্টে দেয়ার সুযোগ ইভিএম পদ্ধতিতে নেই। ইভিএম করা হয়েছে কারচুপি ও জালিয়াতি ঠেকাতে। সেদিক থেকে নির্বাচন কমিশন সফল আমি বলতে পারি।’
এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘তারা (বিএনপি) নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে, আর জনগণ তাদের ফলাফল প্রত্যাখ্যানের হরতালকে প্রত্যাখ্যান করেছে। যে নেতারা ঢাকা শহরে হরতাল ডেকেছে তাদের একজন নেতাকেও মাঠে কোথাও দেখা যায়নি।’