মুজিববর্ষকে সামনে রেখে দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় পরিবার পর্যায়ে খাদ্যশস্য সংরক্ষণ সক্ষমতা বাড়াতে তিন লাখ পারিবারিক সাইলো (মটকা) তৈরি ও বিতরণ করবে সরকার। এরইমধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে। এর আগেও সরকার একই উদ্দেশ্যে দুর্যোগপ্রবণ ১৯ জেলার ৬৩ উপজেলার ৫ লাখ দরিদ্র পরিবারের মধ্যে মাত্র ৮০ টাকা মূল্যে পারিবারিক সাইলো বিতরণ করেছে।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৬ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঝালকাঠি জেলা সদর, কাঁঠালিয়া ও নলছিটি উপজেলায় পারিবারিক সাইলো বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এছাড়া পাঁচ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন আরও ২০০ সাইলো নির্মাণেরও উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
সংশ্লিষ্টরা জানান, মুজিববর্ষকে সামনে রেখে অনেক উদ্যোগই গ্রহণ করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। এরমধ্যে ডিজিটাল পদ্ধতিতে খাদ্য মজুত ও বাজার মনিটরিং কার্যক্রম বাস্তবায়নে কাজ শুরু হয়েছে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে খাদ্যের মজুত, সংরক্ষণ ও বাজার মনিটরিং কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে খাদ্য অধিদফতরের সাইলো, বিভিন্ন পর্যায়ের দফতরসহ এক হাজার ৬৪০টি স্থাপনায় আইসিটি যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হবে।
খাদ্য অধিদফতর থেকে জানানো হয়েছে, মাঠপর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ১৫টি স্থাপনায় ডিজিটাল ট্রাক ওয়েট ব্রিজ স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার প্রকল্পের আওতায় ৬টি বিভাগীয় শহর বরিশাল, খুলনা, সিলেট, রংপুর ও রাজশাহীতে একটি করে মোট ছয়টি ফুড টেস্টিং ল্যাবরেটরি নির্মাণের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। রাজশাহী ছাড়া অন্য ৫টি বিভাগীয় শহরে এরইমধ্যে এর কাজ শুরু হয়েছে। খাদ্য অধিদফতর পরিচালিত সাইলোগুলোর কার্যকরী ধারণক্ষমতা বজায় রাখার লক্ষ্যে মেরামত ও সংস্কারমূলক উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক সারোয়ার মাহমুদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সাইলোর কাজ চলছে। প্রজেক্টের একটু মেয়াদ বাড়াতে হবে। তারপরও আশা করি আগামী এক দেড় বছরের মধ্যেই শেষ হবে। আরও ২০০ সাইলো হবে। যেগুলো হবে ৫ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন। মুজিববর্ষকে সামনে রেখেই এর প্রাথমিক কাজ শেষ করতে চাই। এরপর মূল কাজটা শুরু করতে চাই।
উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশে ৫টি বড় সাইলো, ১৩টি সেন্ট্রাল সাইলো (সিএসডি) এবং ৬৩১টি লোকাল সাইলো (এলএসডি) আছে। এসব সাইলো বা খাদ্য গুদামের বর্তমান ধারণক্ষমতা প্রায় ২০ লাখ মেট্রিক টন। সারা দেশের কৌশলগত স্থানগুলোতে সাইলো, সিএসডি এবং দেশের প্রায় সব জেলা-উপজেলায় কমপক্ষে একটি এলএসডি, গুরুত্বপূর্ণ উপজেলায় দুই বা ততোধিক এলএসডি’র মাধ্যমে খাদ্য ব্যবস্থাপনার প্রশাসনিক ও অপারেশনাল কাজগুলো করা হয়।