স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জের স্বাস্থ্যখাতে অনিয়ম-দুর্নীতি, জনবল সংকট এবং ২০ দিনের মাথায় সিভিল সার্জনের বদলি নিয়ে কড়া সমালোচনা করে সংসদে বক্তব্য দিয়েছেন বিরোধী দলীয় হুইপ ও সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ।
ওই বক্তব্য জেলার শিক্ষক সংকটের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি শিক্ষকের শূন্যপদ দ্রুততম সময়ের মধ্যে পূরণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়েরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। পাশাপাশি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাওয়া সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় জেলা সদরে স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন এমপি মিসবাহ।
বুধবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এই বক্তব্য রাখেন।
জনগুরুত্বপূর্ণ এই দুটি খাতের জনবল সংকট ও অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা নিয়ে সংসদের দেওয়া পীর মিসবাহ’র গঠনমূলক বক্তব্য জেলার সর্বস্তরের মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে ইতিবাচকভাবে মতামত ব্যক্ত করেছেন নানা শ্রেণিপেশার মানুষ।
এমপি পীর মিসবাহ বলেছেন, আমার জেলা শহর সুনামগঞ্জের স্বাস্থ্যখাতের করুণ অবস্থা। আমি দশম সংসদ থেকে এ পর্যন্ত যতবার সংসদে কথা বলেছি ততবার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেছি। সেখানে ডাক্তার নেই। ৬২ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র ১৬ জন। সদর হাসপাতালে এক্স-রে হয় না, আল্ট্রাসনোগ্রাম হয় না, প্যাথলজিস্ট নাই, রেডিওলজিস্ট নাই, কার্ডিওলজিস্ট নাই, ডাক্তার নাই- এই হাসপাতালটিতে আছেটা কী? ভবন আর যন্ত্রপাতি আছে। এতে জনগণের লাভ নাই। ভবন করলে ঠিকাদারের লাভ হয়। যন্ত্রপাতি সরবরাহ করলে লাভ হয় ঠিকাদারের।
তিনি বলেন, ডাক্তার পাই না। কয়েকদিন আগে একজন নতুন সিভিল সার্জনকে পদায়ন করা হয়েছিল। উনি এসে হাসপাতালে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু ২০ দিনের মাথায় তাকে বদলিও করা হয়েছে। আজব এক অদ্ভুত কারবার। যেখানে দুই বছর ধরে ডাক্তার পাইনা, সেখানে পদায়নের ২০ দিনের মাথায় সিভিল সার্জনকে বদলি করে নিয়ে যাওয়া হয়। অদ্ভুত কারবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের। সুনামগঞ্জসহ দেশের স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি জন্যে সংসদের সিনিয়র পার্লামেন্টিরিয়ানদের নিয়ে তদন্ত কমিটি করে স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি তদন্ত করার দরকার বলে জানান এমপি মিসবাহ।
এসময় স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে পীর মিসবাহ সুনামগঞ্জের শিক্ষাখাতের বেহাল অবস্থা সম্পর্কে সমালেচনা করে বলেন, আমার সুনামগঞ্জে শিক্ষার অবস্থা ভালো না। শিক্ষক নেই। ফলে শিক্ষার গুণগত মানের ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে জেলাবাসী। জেলার প্রধান দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের সংকট। নেই প্রধান শিক্ষক। প্রধানমন্ত্রী সুনামগঞ্জে মেডিকেল কলেজ দিয়েছেন। মন্ত্রিসভায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন হয়েছে। যার জন্যে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। তবে যদি শিক্ষক সংকট দূর করে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি না করা হয় তাহলে এই সকল প্রতিষ্ঠানে আমাদের সন্তানরা পড়ার সুযোগ পাবে না। তাদের ভাত আর চায়ের দোকান দিতে হবে পাস করার পর। তাই সুনামগঞ্জের শিক্ষাখাতে উন্নয়নে বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।