স্টাফ রিপোর্টার::
জলমহাল সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সুনাগঞ্জের বড়ধই বিলে আলীম তালুকদার নামে এক যুবক খুন হয়েছেন ইজারাদারের লোকদের হাতে। নিহত যুবক সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের দরিয়াবাজ গ্রামের হানিফ খানের ছেলে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা যায়, জলমহাল নিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী ও বড়ধই বিলের মালিক মনোয়ার হোসেনের সঙ্গে বিরোধ চলছিল আলীম তালুকদারের। গত বৃহষ্পতিবার জোরপূর্বক আলীম তালুকদারের মালিকানাধীন বড়ধই বিলের হিঙ্গিদাইড় খাল শুকিয়ে মাছ ধরে নিয়ে যায় বড়ধই বিল তদারকিতে থাকা দরিয়াবাজ গ্রামের কয়েকজন লোক। এ নিয়ে আলীম তালুকদারের সাথে বড়ধই বিলের মালিক পক্ষ ও গ্রামের কিছু লোকের সাথে বিরোধ বাঁধে। ঘটনাস্থল থেকেই তাকে ধরে নিয়ে এসে বড়দই বিলের ইজারাদারের খলাঘরে বেদম মারধর করা হয়।
শনিবার সকাল ৭ টায় সিলেট ওসমানি মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় আলীম তালুকদারের।
এদিকে এ ঘটনায় শনিবার সকালে সদর থানা পুলিশ আব্দুল্লাহপুর গ্রামের বর্তমান ইউপি সদস্য জহুর আলী, দরিয়াবাজার গ্রামের যশু মিয়া এবং মমিনুল ইসলামকে আটক করে নিয়ে এসেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
নিহত আলীম তালুকদারের ভাবী ফুলবানু বলেন, আমার দেবর আমাকে বলেছে মনোয়ার সাবের অর্ডারে আলীমকে ধরে নিয়ে খলায় তার নিদের্শে মারপিট করা হয়। মনোয়ার সাব নিজে বুটপায়ে তার উপরে ওঠে লাতি দিয়ে রক্তাক্ত করেন। মনোয়ারই আমার দেবরের খুনি। আমরা তার ফাসি চাই।
আলীম তালুকদারের খালাতো ভাই উম্মর আলী বলেন, মনোয়ার সাব অর্ডার দিছইন আলীমরে মাইরা ২ কোটি টাকা খরচ করতে। তাইনের অর্ডারে বিলের লোকজন আমার ভাইরে খলায় এনে জানে মারছে। তারা মারার পর চিকিৎসা নিতেও দেয়নি। আমরা এ ঘটনায় খুনিদের ফাঁসি চাই।
এদিকে বড়দই বিলের ইজারাদার মনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন তারা চারদিন আগে বিল ফিশিং করে চলে এসেছেন। তারা এসব ঘটনায় জড়িত নন। তারা এ বিষয়ে কিছু জানেন না।
সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, দুইদিন আগে যুবক আলীমকে ধরে এনে নির্যাতন করা হয়েছিল। ভেতরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তিনি হয়তো ওসমানীতে শনিবার সকালে মারা গেছেন। আমরা এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছি। স্বজনরা বলেছেন, বড়দই বিলের ইজারাদার ও তার লোকজন এরসঙ্গে জড়িত। তাছাড়া তাদের সঙ্গে আলিম তালুকদারের পরিবারের বিরোধ ও মামলা মোকদ্দমাও চলছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।