স্টাফ রিপোর্টার:
সৌদি আরব সরকার কোরবানীর পশু (দুম্বা) প্রতি বছর বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থায় পাঠিয়ে থাকে। বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ মন্ত্রণায় স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের দুম্বার মাংস বিতরণের জন্য পাঠায়। হতদরিদ্র, গরিব ও নি¤œ আয়ের মানুষকে খাবারের জন্য দুম্বার মাংস পাঠানো হলেও ক্ষমতাসীন দলের নেতা, ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বার ও প্রশাসনের কিছু লোকজনই কেবল সেই মাংস খেয়ে থাকেন। গরিব কাঙ্গালের পেটে পড়েনা দুম্বার মাংস। সুনামগঞ্জ জেলায় এই প্রথম বারের মতো উপজেলা পরিষদের বরাদ্দের দুম্বার মাংস দিয়ে কাঙ্গালিভোজ করা হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান নিজে রান্না করে সেই মাংস খাইয়েছেন গরিব লোকদের।
জানা গেছে সরকারের ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ প্রায় ১২টি প্যাকেট দুম্বার মাংস বরাদ্দ পায়। অন্যান্য সময় সেই মাংস উপজেলা পরিষদের সংশ্লিষ্টরা নিয়ে যেতেন। কিন্তু এবার ব্যাতিক্রম হয়েছে। সেই মাংস যাতে প্রকৃত দরিদ্র লোকজন খেতে পারেন সেই লক্ষ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল গতকাল শনিবার ব্যাতিক্রমধর্মী উদ্যোগে নেন। তিনি মাংস দিয়ে কাঙ্গালিভোজের আয়োজন করেন। শনিবার সকাল থেকে উপজেলা শহরে মাইকিং করে কাঙ্গালিভোজে অংশ নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। নিজে পরিষদ চত্বরে উফরি চুলা তৈরি করে তার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে রান্না করেন। তার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে রান্নার জন্য তেল চাল মশলা ও রান্নার আনুষঙ্গিক জিনিষ দেওয়া হয়। বিকেল ৩টায় থেকে প্রায় সহ¯্রাধিক দরিদ্র লোক উপজেলা চত্বরে এসে ক্রমান্বয়ে সেই মাংসের রান্না খান। ব্যতিক্রমধর্মী এই আয়োজন করায় উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার পরিষদকে অভিনন্দন জানিয়েছেন হতদরিদ্র লোকজন। প্রথমবারের মতো দুম্বার সুস্বাদু মাংস খেয়ে তারা তৃপ্তির ঢেকুর তোলেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, আমি ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি প্রতি বছরই সৌদি আরব থেকে প্যাকেটজাত করে দুম্বার মাংস আসে। কিন্তু যাদের জন্য সেই মাংস আসে তারা সেটা চোখেও দেখেননা। ক্ষমতাসীন কিছু নেতাকর্মী এবং স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিরাই সেই মাংস নিজেরা খেয়ে থাকেন। আমি এবছর সেই সুযোগ দেইনি কাউরে। আমার পরিষদের বরাদ্দের পুরো মাংস রান্না করে গরিব কাঙ্গালদের খাইয়েছি। তারা খুশি হয়েছেন।