বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জে করোনাভাইরাসের কারণে বাজারে প্রভাব পড়তে পারে এই আশঙ্কায় বৃহষ্পতিবার সকালে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জরুরি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন। সবাই আসন্ন এই দুর্যোগের কারণে বাজারে যাতে কোন প্রভাব পড়তে না পারে সে ব্যাপারে ঐক্যমত পোষন করলেও সুনামগঞ্জের ব্যবসায়ীরা প্রশাসন-জনপ্রতিনিধিদের এই আহ্বানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ৭০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি করেছে। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন করোনাভাইরাসের কারণে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে এই আশঙ্কায় সাধারণ ক্রেতারাও দোকানে ভিড় করায় এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত মজুদ করায় দোকানীরা এই সুযোগ নিয়ে পেয়াজের দাম দ্বিগুন করেছে। তাছাড়া ক্রেতার চাহিদার কারণে চতুর দোকানীরাও পেঁয়াজ লুকিয়ে দ্বিগুন দাম রাখছে ক্রেতাদের কাছ থেকে। এছাড়া অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে জেলায়। ফলে নি¤œআয়ের মানুষেরা বিপাকে পড়েছে।
সরেজমিন বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শহরের পুরাতন বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কোন মুদি দোকানেই কোন পেঁয়াজ নেই। সুরমা মার্কেটের মুখ থেকে পুরাতন কারাগারের মুখ পর্যন্ত বাজারে অন্তত ৩০টি মোদী দোকান সরেজমিন ঘুরে পেয়াজের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। তবে কিছু কিছু দোকানী পেঁয়াজ লুকিয়ে এই সুযোগে দ্বিগুন দাম রাখছেন বলে ক্রেতারা জানিয়েছেন।
জানা গেছে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির ফলে গত মঙ্গলবার ও বুধবার সুনামগঞ্জ শহরে পেঁয়াজের দাম ৩৫-৪০ টাকা ছিল। কিন্তু বুধবার বিকেলে করোনাভাইরাসে একজনের মৃত্যুর খবরের পরই সন্ধ্যা থেকে পেঁয়াজের দাম ৫০-৭০ টাকা হয়ে যায়। আজও এই দামে বিক্রি হয়েছে। তবে বৃহষ্পতিবার রাত ৮টার থেকেই বাজার থেকে পেঁয়াজ উধাও হয়ে যেতে দেখা গেছে। কোন কোন দোকানে স্বল্প পেঁয়াজের উপস্থিতি পাওয়া গেলেও দাম ছিল ৭০ টাকা। ক্রেতাদের অভিযোগ বেশি মূল্যে বিক্রি করতেই বাজার থেকে পেয়াজ উধাও করে ফেলেছেন ব্যবসায়ীরা।
বাজারের এক মোদী ব্যবসায়ী (নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, ভারত থেকে আমদানির ফলে ৩০ টাকা পেয়াজের মূল্য হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পাইকারের কাছ থেকেই আমরা বেশি মূল্যে ক্রয় করেছি। তাই আমাদেরকে বাধ্য হয়েই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাছাড়া অনেক ক্রেতা প্রয়োজনের অতিরিক্ত সংগ্রহ করার প্রবণতার কারণে ব্যবসায়ীরাও সুযোগটি নিচ্ছেন।
পৌর মেয়র নাদের বখত বলেন, আমি মোদী দোকানসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকানদারদের মূল্য বৃদ্ধি না করে ন্যায্যদামে বিক্রির জন্য মাইকিং করেছি। আগামীকাল বাজারে গিয়ে আমরা এ বিষয়ে প্রচারণা চালাবো।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, আজ সকালে আমরা ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ সুধীজনের সঙ্গে মতিবিনয় করে এই সংকট মোকাবেলা নিয়ে কথা বলেছি। সবাই সচেতন হলে এই দুর্যোগ মোকাবেলা সম্ভব। তবে এই দুর্যোগকে কাজে লাগিয়ে ও আমাদের প্রয়োজনাতিরিক্ত সংগ্রহের কারণে অসাধু মহল প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বিশেষ করে পেয়াজসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। আমরা বিভিন্নভাবে অভিযোগ পাচ্ছি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।