সাইফ উল্লাহ:
অতীতের সত্য ঘটনা ও ইতিহাস। বঙ্গবন্ধু হাওরাঞ্চলের মানুষকে ভালবাসতেন, তিনি নিজেই নৌকাযোগে হাওরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে আওয়ামীলীগ দলীয় সংগঠনের কাজ করতেন। ইতিহাস থেকে খোঁজ নিয়ে জানাযায়, ১৯৭০ সালে নির্বাচনী সফরের দুই দিন, আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেই বৈঠক খানার ঘর ও নামাজের জন্য সেই মসজিদ। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে সুনামগঞ্জ থেকে নির্বাচিত প্রাদেশিক সদস্য (এমপিএ) গণ হলেন (সংগৃহিত) সুনামগঞ্জ মহকুমা আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল হেকিম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক, সুনামগঞ্জ মহকুমা, আওয়ামীলীগ নেতা এড. আব্দুর রইছ চৌধুরী, সুনামগঞ্জ মহকুমা, আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুর জহুর, সুনামগঞ্জ মহকুমা, আওয়ামীলীগ নেতা মো. শামসু মিয়া চৌধুরী, সুনামগঞ্জ মহকুমা ন্যাপ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, আওয়ামীলীগ নেতা, মহকুমা আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান মহারাজ মিয়া চৌধুরী, আওয়ামীলীগ নেতা, সাচনা বাজার, আব্দুর রহমান তালুকদার ছিলেন সক্রিয়। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিধন্য এই স্থানটি সংরক্ষণ ও জাদুঘরটি সমৃদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চল ধর্মপাশা উপজেলা সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে মহারাজ মিয়া চৌধুরী ও বঙ্গবন্ধু জাদুগর স্থাপিত করা হয়েছে প্রায় এক বছর আগে।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, ১৯৭০ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান সুখাইর রাজাপুর দক্ষীণ ইউনিয়নের মহারাজ মিয়ার বাড়ীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এসে আওয়ামী লীগের দলীয় সভা করেন। মহারাজ মিয়া বাংলোতে বৈঠক করেন। ধর্মপাশা উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নের মধ্যে সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নটি উপজেলার পুর্বাঞ্চলে অবস্থিত।
জানা যার, এ অত্র ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার গোলাম মোস্তফা ধন মিয়া (৭৫) বলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান মহারাজ মিয়ার বাড়ীতে উঠান বৈঠক করেছিলে। আমিও উঠান বৈঠকে ছিলাম, বারটি ছিল শুক্রবার, বৈঠক শেষে এই মসজিদে নামাজ আদায় করে তিনি ঢাকার উদ্দেশ্য রোওয়ান হোন। আমরা তখন থেকে বন্ধু বন্ধুর ভক্ত। মহারাজ মিয়া সুনামগঞ্জ মহকুমা আওয়ামী লীগের কার্যকরি কমিটির নেতা হিসেবে কাজ করতেন। এমপি হেকিম চৌধুরী আওয়ামী লীগের দায়িত্ব ছিলেন, ধর্মপাশা উপজেলার দুই জন সহ মোট সুনামগঞ্জ মহকুমায় ৭ জন দায়ীত্বে ছিলেন। সেই বাংলাতে দু জনের নামা স্মরণ রাখতে মহারাজ মিয়ার ছেলে সুখাইর রাজাপুর দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান মো: আমানুর রাজা চৌঃ (৫৬), বঙ্গবন্ধু ও মহারাজ মিয়ার স্মৃতিতে এই জাদুঘর তৈরী করেন ২০১৯ সালে। তিনি মহারাজ মিয়া চৌধুরীর ছেলে।
৮নং ওয়ার্ড মেম্বার সাদেকুর রহমান (৫৫) বলেন, আমরা ছোট কাল থেকেই জেনে শুনে এসেছি এই বাংলোতে বঙ্গবন্ধু এসে আওয়ামীলীগ দলকে সংগঠিত করার জন্য বৈঠক করেছেন, সেই থেকে বঙ্গবন্ধু বাংলা বলা হত, এখন এই বাংলাতে মহারাজ মিয়া ও বঙ্গবন্ধু জাদুগর স্থাপন করেন ইউপি চেয়ারম্যান মো: আমানুর রাজা চৌধুরী।
স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি মো. লাল মিয়া (৬৫) বলেন, আমাদের উপজেলায় ২ জন সক্রিয় বঙ্গবন্ধুর মনোনিত নেতা ছিলেন, সাবেক ৪ বারের এমপি মরহুম হেকিম চৌধুরী ও মরহুম মহারাজ মিয়া। জেলার ৭ জন নেতার মাঝে ২ জন আমাদের ধর্মপাশার।
ইউপি চেয়ারম্যান মো: আমানুর রাজা চৌঃ (৫০) জানান, আমার মরহুম পিতা মহারাজ মিয়া চৌধুরী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে স্মরনীয় করার লক্ষে মহারাজ মিয়া ও বঙ্গবন্ধু জাদুঘর স্থাপন করেছি। আমার পিতা ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা ও মক্তিযোদ্ধা সংগঠক, মরহুম এমপি আব্দুল হেকিম চৌধুরীর সাথে দুজন মিলে কাজ করতেন। আমি আশা রাখি এই জাদুঘর শুধু সমগ্র ইউনিয়নের জন্য নয়, ধর্মপাশা উপজেলার সব চেয়ে বড় এবং টেক সই জাদুঘর হবে ইনশাল্লাহ। এব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সেলবরষ ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুর হোসেন বলেন, মরহুম মহারাজ মিয়া বঙ্গবন্ধুর সহচর ছিলেন। মহারাজ মিয়া চৌধুরী শুধু আওয়ামীলীগ নেতাই ছিলেন না, তিনি মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক ছিলেন। আমি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক ও সাবেক এমপি মরহুম আব্দুল হেকিম চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক ও আওয়ামীলীগ নেতা মহারাজ মিয়া চৌধুরীকে।