বিশেষ প্রতিনিধি::
সরকারি নিষেধ অমান্য করে ঐতিহ্যবাহী পলো নিয়ে সুনামগঞ্জের দৌলতা নদীতে মাছ ধরতে গেছেন হাজার হাজার এলাকাবাসী। নদীর তীরবর্তী লোকজন এ কাজে বাধা দেওয়ায় তাদের গ্রামে ডুকে হামলাও করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জামালগঞ্জের ফেনারবাক ইউনিয়নের রাজাপুর এ ঘটনা ঘটেছে শনিবার সকালে। পরে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ নিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে রাজাপুর গ্রামের পাশ দিয়ে দৌলতা নদী প্রবাহিত। এই মরা নদী ইজারা দেয় সরকার। তবে আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ যুগযুগ ধরে এই সময়ে নির্ধারিত একদিন পলো দিয়ে সম্মিলিতভাবে মাছ ধরে। শনিবার সকাল থেকে পলো ও হাতের ঠেলাজাল নিয়ে মাছ ধরতে নামেন তেরানগর, চান্দরনগর, ছেলাইয়া, মাহমুদপুর, ভা-া, মাখরখলা, শুকুর মাহমদপুরসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের হাজারো মানুষ। তারা দুপুরের দিকে এক পর্যায়ে রাজাপুর গ্রামের পাশে আসলে গ্রামবাসী এভাবে মাছ ধরতে নিষেধ করেন। তারা অনুরোধ করেন তাদের সীমানার পানি তারা দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করেন। তাই ঘোলা না করার অনুরোধ জানান। এতে উত্তেজিত হয়ে মাছ ধরতে থাকা লোকজন গ্রামবাসীকে ধাওয়া করেন। তারা এক পর্যায়ে গ্রামে ডুকে হামলাও করেন। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াঙ্কা পাল, থানার ওসি সাইফুল ইসলামসহ পুলিশ ও সেনাবাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তারা বিক্ষুব্দ লোকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে এভাবে সরকারি নির্দেশনা না মেনে ভিড় করে মাছ না ধরতে অনুরোধ জানান। প্রশাসন ত্বরিৎ ব্যবস্থা নেওয়ায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানান এলাকাবাসী।
রাজাপুর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা টিটো বলেন, আমাদের গ্রামের অংশে পানি ঘোলা করে এভাবে মাছ না ধরতে অনুরোধ করেন গ্রামবাসী। তারা এই অজুহাতে গ্রামে ডুকে হামলা করেছেন, আমাদের ধাওয়া দিয়েছেন। এতে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। তারা বাড়িঘরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে আতঙ্ক তৈরি করে। তবে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এলাকার বাসিন্দা ও সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিন্দু তালুকদার বলেন, এখন করোনা আতঙ্কে যেখানে করোনা মোকাবেলায় সরকার সবাইকে ঘরে বসে থাকার নির্দেশনা আছে সেখানে হাজারো লোক জমায়েত করে মাছ ধরেছেন। মাছ ধরতে বাধা দেওয়ায় একটি গ্রামের মানুষেরও উপরও হামলা করেছেন। অতীতে এই এলাকায় এমন ঘটনা ঘটেনি।
জামালগঞ্জ থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়েই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। আমরা পরিস্থিতি শান্ত করি। কিছু লোক সরকারি নদীতে জোরপূর্বক মাছ ধরতে ছিল। এতে অন্যরা বাধা দিলে উত্তেজনা দেখা দেয়।