বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের হাওরের বোরো ধানে এখন বাউরি বাতাস খেলছে। সবুজের খোলস ভেঙ্গে হাল্কা হলুদাভ হয়ে ওঠছে বিস্তৃত ধানখেত। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ধানের ফলনও হয়েছে ভালো। সরকারের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন পয়লা বৈশাখ থেকেই ধানকাটার ধুম পড়বে হাওর জেলা সুনামগঞ্জে। কিন্তু করোনার এই সংক্রমণের সময়ে বাইরের ও স্থানীয় শ্রমিকদের ধানকাটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে প্রশাসন ও কৃষক। তাছাড়া হাওরের উচু এলাকার জমি (ইরি প্রকৃতির) জমির ধান কাটতে যে মেশিন সরকার ৭৫-৫০ ভাগ ভর্তুকিতে বরাদ্দ দিয়েছিল তাও অধিকাংশই নষ্ট। এ নিয়ে উৎকণ্ঠা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে কৃষি বিভাগ ও কৃষকরা জানিয়েছেন এখন শ্রমিক পাওয়া দুষ্কর হবে। সরকারি ভর্তুকির ধানকাটার অর্ধেক যন্ত্র বিকল হয়ে পড়ে আছে বলে জানা গেছে। ধানকাটা শুরুর আগে যন্ত্রগুলো সচল করা হলে কৃষকরা সহজে ধান কাটতে সক্ষম হতেন বলে মনে করেন তারা। সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে সুনামগঞ্জ জেলায় এ বছর ২ লাখ ১৯ হাজার ৪০০ হেক্টর বোরো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে অর্জিত হয়েছে ২ লাখ ১৯ হাজার ৩০০ হেক্টর। বিআর ২৮, ২৯ সহ হ্ইাব্রীড, উফশীসহ কিছু স্থানীয় জাতের ধানও আবাদ হয়েছে। এবার হাওরের ফসলরক্ষার জন্য ৬৪০ কি.মি ফসলরক্ষা বাধ নির্মাণ, সংস্কার করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সরকার প্রাথমিক ৬৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৩২ কোটি টাকার মোট বাজেট চেয়েছে।
কৃষি বিভাগ আরো জানিয়েছে জেলায় সরকারি ভর্তুকি ও অনুদানে ১৩১টি কম্বাইন হার্ভেস্টর ও ২৮৫টি রিপার ধানকাটা ও মাড়াইয়ের যন্ত্র রয়েছে। এছাড়াও সম্প্রতি আরো ৩৩টি কম্বাইন হার্ভেস্টর ১৭টি রিপার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ধানকাটা মেশিন দিয়ে হাওরের উঁচু অংশের কিছু জমির ধান কাটা সম্ভব। তবে এই মেশিনের মধ্যে ৪১টি কম্বাইন হার্ভেস্টর ও ৯২টি রিপার মেশিন নষ্ট আছে। এগুলো সচল থাকলে হাওরের ধানকাটায় কিছুটা সুবিদা পেতেন কৃষকরা।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, করোনার কারণে সারাদেশের মানুষই এবার আতঙ্কিত। এই অবস্থায় হাওরের ধানকাটায় প্রভাব পড়তে পারে। আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালককসহ স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাওরে ধান কাটায় পাঠানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছি। তাছাড়া যন্ত্রগুলো মেরামত করতে ওয়ার্কসপগুলো চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে।