1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৪ অপরাহ্ন

হাওরে ধানকাটা শুরু, পহেলা বৈশাখে কৃষকের পাশে গিয়ে সংহতি প্রশাসনের

  • আপডেট টাইম :: মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২০, ৩.০৬ পিএম
  • ৩৮৪ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি::
করোনার চোখরাঙানিতে গৃহবন্ধী মানুষ। মাথার উপরে রগচটা সূর্যটা বাণ নিক্ষেপ করছে। গ্রীষ্মের খরতাপে দগ্ধ হাওরে বাউরি বাতাস নেই। হলুদ ধানের ঝলকানিই বলে দিচ্ছে বাম্পার ফলনের কথা। এই অবস্থায় সুনামগঞ্জের হাওরের একমাত্র বোরো ফসল হাওরের ধান পাকতে শুরু করেছে। কষ্টের নোনাঘামে সিক্ত শ্রমিক সোনার ফসল হাওরে ফেলে রাখতে চায়না। ফসলের মায়ায় শ্রমিক সংকটের মধ্যেই ছুটছে হাওরের কৃষক। ১লা বৈশাখে ধানের আগ (ফসল কাটার শুরু) কেটে তোলতে পাকা ক্ষেতে নামতে দেখা গেছে অনেক কৃষককে। প্রশাসনও তাদের পাশে দাঁড়িয়ে শক্তি ও সাহস জুগিয়েছে।
মঙ্গলবার ১লা বৈশাখের রৌদ্রজ্জ্বল দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্টরা দেখার হাওরে গিয়ে কৃষকের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন। তারা কৃষক ও শ্রমিককে হাওরে নেমে পাকা ধান কাটতে আহ্বান জানিয়ে ধানকাটায় নামলে শ্রমিকদের ত্রাণ দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন। এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর আগামী ১৭-২১ এপ্রিল ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের পূর্বাভাস দিয়েছে। এই ঘোষণায় কৃষকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে দ্রুত ধান কাটার জন্য জেলায় কম্বাইন হার্ভেস্টর ও রিপার মিলিয়ে ৪৬৬টি যন্ত্র রয়েছে। তবে এ গুলো হাওরের নিচু অংশের জমির ধান কাটতে অক্ষম।
মঙ্গলবার দুপুরে দেখার হাওরের কান্দায় ধানকাটারত কৃষক ও শ্রমিকদের সঙ্গে শরিক হন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ সফর উদ্দিন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসমিন নাহার রুমা প্রমুখ।
এদিকে করোনার ভয়াল থাবার কারণে জনজীবন স্থবির হওয়া, বিভিন্ন জেলায় লকডাউন ও সব গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বাইরের শ্রমিকদের বিশেষভাবে নিয়ে আসতে নির্দেশনা দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। হাওরের ধান কাটতে আসা শ্রমিকদের লকডাউনের আওতার বাইরে রেখে তাদেরকে হাওরে আসতে প্রচারণাও চালনো হয়েছে। উত্তরাঞ্চল, দক্ষিণাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকার শ্রমিকদের হাওরে নিয়ে আসতে সেসব এলাকার প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, পাবনা, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ১ হাজার ৮৭০ জন শ্রমিক সুনামগঞ্জের হাওরে ধান কাটতে প্রবেশ করেছে বলে জানা গেছে। এ বছর বাইরের জেলা থেকে অন্তত ৮ হাজার শ্রমিক আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ক জেলায় এ বছর ২ লাখ ১৯ হাজার ৪০০ হেক্টর বোরো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে অর্জিত হয়েছে ২ লাখ ১৯ হাজার ৩০০ হেক্টর। বিআর ২৮, ২৯ সহ হ্ইাব্রীড, উফশীসহ কিছু স্থানীয় জাতের ধানও আবাদ হয়েছে। হাওরের ফসল রক্ষায় সরকার এবছর পানি উন্নয়ন বোর্ড এর মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি করে ১৩২ কোটি টাকায় ৬৪০ কি.মি ফসল রক্ষা বাধ নির্মাণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি একাধিকবার বক্তব্যে হাওরের ফসল যাতে ক্ষতির মুখে না পড়ে সেজন্য প্রশাসনকে দ্রুত ধান কেটে তোলার নির্দেশনা দিয়েছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ সফর উদ্দিন বলেন, হাওরের ধান কাটতে শ্রমিক ও কৃষককে প্রতিদিনই উৎসাহিত করছি। মাইকিং করা হচ্ছে। ত্রাণের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। তাছাড়া এরই মধ্যে বাইরের জেলা থেকে অন্তত ২ হাজার শ্রমিক জেলায় প্রবেশ করেছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, করোনাভাইরাস আমাদের স্বাভাবিক জীবন যাপনে ছন্দপতন ঘটিয়েছে। জীবন পরিচালনা আরো কঠিন হয়েছে। আমাদের খাদ্য উদ্ধুত্ত জেলার হাওরে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু শ্রমিক সংকট কৃষকদের চিন্তায়ঢ ফেলে দিয়েছে। এই অবস্থায় কৃষকদের সাহস ও শ্রমিকদের উৎসাহ দিতে হাওরে নেমে সংহতি প্রকাশ করেছি। হাওরের ধান তোলতে পারলে আমাদের কোন অভাব থাকবেনা।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!