স্টাফ রিপোর্টার::
শিক্ষার্থী ও নানা পেশার প্রায় প্রায় ৩ লাখ মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহনে ২৯৯টি পৃথক ভেন্যুতে একযোগে লালকার্ড প্রদর্শনের মাধ্যমে ভাটির জনপদ সুনামগঞ্জকে বাল্যবিবাহমুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ২৩ জানুয়ারি সোমবার দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্থানীয় শহীদ আবুল হোসেন মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ঐতিহাসিক এ ঘোষণাটি প্রদান করেছেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ জামাল উদ্দীন আহমেদ। তিনি উপস্থিতদের বাল্যবিয়ে বিরোধী শপথবাক্য পাঠ করান। সংশ্লিষ্টরা জানান, এই উদ্যোগটি গিনিসবুকে স্থান পাবার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইতিমধ্যে সুনামগঞ্জ জেলার ১১টি উপজেলাকে পর্যায়ক্রমে বাল্যবিবাহমুক্ত ঘোষণা করা হয়। ১৩ জানুয়ারী প্রথমে ছাতক উপজেলা থেকে যাত্রা শুরু করে ২৯ সেপ্টেম্বর তাহিরপুর উপজেলাকে বাল্যবিবাহমুক্ত উপজেলা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে সুনামগঞ্জ জেলাকে বাল্যবিবাহমুক্ত করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২৩ জানুয়ারী সুনামগঞ্জের প্রত্যেকটি উপজেলায় একসাথে ১ লক্ষ ৬ হাজার ৫ শত ছাত্র ছাত্রী ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার ৩ লক্ষাধিক জনগন একযোগে লালকার্ড প্রদর্শনের মাধ্যমে বাল্যবিবাহকে না বললেন। উক্ত অনুষ্ঠানটি বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ জনসচেতনতামূলক লালকার্ড প্রদর্শন অনুষ্ঠান হিসেবে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড এ স্থান করবে বলেও বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানটি সুনামগঞ্জের শহীদ আবুল হোসেন মিলনায়তন হতে ১১টি উপজেলায় একযোগে পরিচালিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সুনামগঞ্জ জেলাকে বাল্যবিবাহ বিরোধী শপথবাক্য পাঠ করান সিলেট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার।
জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে এ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন,জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আশুতোষ দাস,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ কামরুজ্জামান,অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাবেরা আক্তার,নারী নেত্রী শীলা রায়,ছাতক উপজেলা চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুল,ডিডিএলজি বাবর আলী মীর,জেলা কাজী সমিতির সেক্রেটারী শফিকুল ইসলাম,সেবাইত সুবিমল চক্রবর্তী চন্দন ও সরকারী সতিশ চন্দ্র উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী ফারজানা আলী সুচি প্রমুখ।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার মোঃ জামাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, একটি নারী ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত তার গর্ভ জরায়ু মা হওয়ার সামর্থ অর্জন করতে পারেনা। এই সামর্থ শুধু শারীরিক বা মানসিকই নয় আর্থিক ও আত্মিক বটে। তাই সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত কোনক্রমেই বিবাহ বরদাশত করা যাবেনা। বাল্যবিাহমুক্ত সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিষ্টার এই গৌরবের অংশীদার হওয়ার জন্য আমি সুনামগঞ্জ জেলাবাসীকে অভিনন্দন জানাই। এই গৌরব দিকে দিকে আলোকবর্তিকা হয়ে সকলকে উৎসাহিত করবে। এই উদ্যোগ সকলকে সংস্কারের দিকে আলোর দিকে নিয়ে যাবে।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, শুধু ঘোষনার মধ্যে এটিকে আবদ্ধ রাখলে চলবেনা। কথায় ও কাজে সত্যিকার অর্থে বাল্যবিবাহমুক্ত সমাজ ও রাষ্ট্র কায়েম করতে হবে।