স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে জলমহাল দখল নিয়ে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতার লোকদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, প্রেসক্লাব সেক্রেটারিসহ নিরপরাধ মানুষকে আসামী করায় বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে দিরাই পৌর এলাকার দলমত নির্বিশেষে ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশ থেকে অবিলম্বে নিরপরাধ মানুষদের মামলা থেকে অব্যাহতি দানের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে জানানো হয়, গত ১৭ জানুয়ারি দখলবাজ ও মৎস্যজীবীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় তিন নীরিহ ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা যুবলীগ নেতা একরার হোসেন দিরাই উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তালুকদার, দিরাই পৌর মেয়র মোশারফ মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়, দিরাই প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক যুগান্তর প্রতিনিধি জিয়াউর রহমান লিটনসহ নিরপরাধ কিছু মানুষকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ও ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে হত্যা মামলার আসামী করা হয়েছে। এ ঘটনায় সাধারণ মানুষ ও জনপ্রতিনিধিরা ক্ষুব্দ হয়ে উঠেছেন।
তিনদিন আগে দিরাই-উপজেলার সকল ইউনিয়নের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা নিরপরাধ মানুষদের মামলা থেকে অব্যাহতিদানের জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। জনপ্রতিনিধিরা এর প্রতিবাদে উপজেলা শহরে মানববন্ধন করেছেন। অবশেষে গতকাল বুধবার দুপুরে পৌর শহরের ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা তাদের মেয়রসহ উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাংবাদিকসহ নিরপরাধ মানুষদের মামলায় জড়ানোয় বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করেছে।
এলাকার মুরব্বী আবুল উল্লার সভাপতিত্বে ও দিরাই বাজারের ব্যবসায়ী মতিউর রহমান মতির পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দিরাই পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র হাজী আহমদ মিয়া, দিরাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল হক মিয়া, পৌর কাউন্সিলর মিয়াধন মিয়া ইধন, উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি রফিকুল ইসলাম সরদার, উপজেলা কৃষকলীগের আহবায়ক তাজুল ইসলাম প্রমুখ। এসময় সমাবেশে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল কুদ্দুস, দিরাই বাজার মহাজন সমিতির সভাপতি সিরাজ উদ দৌলা তালুকদার, পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র বিশ্বজিৎ রায়, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রঞ্জন রায়, উপজেলা খেলাফত মজলিশের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আমিরুল ইসলাম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা শরীফ উদ্দিন, কাউন্সিলর এবিএম মাসুম প্রদীপসহ বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠনের লোকজন।
এলাকার বিতর্কিত ও একাধিক মামলার জনৈক আসামী নিজের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য নিহত পরিবারগুলোর আবেগকে কাজে লাগিয়ে তাদের বদলে নিজে বাদী হয়ে এলাকার নিরপরাধ মানুষদের মামলায় আসামী করেছেন। বক্তারা বলেন, সত্যসংবাদ প্রকাশ করায় ঘটনার দুইদিন পর সাংবাদিকের উপর মামলায় আসামী করা হয়েছে। অবিলম্বে ষড়যন্ত্রমূলক এই মামলা থেকে নিরপরাধ লোকদের বাদ দিয়ে প্রকৃত আসামীদের খুজে বের করার আহ্বান জানান।