হাওর ডেস্ক::
শরীরে করোনা নিয়ে শনিবার রাতে মসজিদে তারাবির নামাজে ইমামতি করায় মাগুরার শালিখা ও তার পার্শ্ববর্তি যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা দু’টি গ্রাম লকডাউন করা হয়েছে। একই সাথে লক ডাউন করা হয়েছে শালিখা-বাঘার পাড়ার স্থানীয় একটি সড়ক।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মাগুরা শালিখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ তানভীর রহমান বলেন, করোনা নিশ্চিত হবার পর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে আদাডাঙ্গা গ্রামটি লকডাউন করা হয়েছে। এছাড়া এলাকা সংশ্লিষ্ট দেড় কিলোমিটারের স্থানীয় একটি সড়ক লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে।
পাশাপশি ওই মসজিদে যারা নামাজ পড়েছেন তারাসহ নমুনা সংগ্রহে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার আওতায় আনাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
ইউএনও তানভীর রহমান জানান , ইমামসহ ১৩ জন নিয়ে তারাবি শুরু হলেও মসজিদটিতে পরবর্তিতে ২০ থেকে ২৫ জন নামাজ পড়েছে বলে আমারা জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে তালিকা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্য ঝুকি বিবেচনায় নামাজে অংশ গ্রহণকারীদের সঠিক তালিকা করা ও সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি খুবই গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা । তবে স্থানীয় কারও কারও দাবি এ সংখ্যা কমপক্ষে ৫০ জন।
করোনা সনাক্ত ইমামের বাড়ি যশোরের বাঘারপাড়ার পশ্চিমা গ্রামে। বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দুরে মাগুরার শালিখার আদাডাঙ্গা গ্রামের একটি মসজিদে গতকাল শনিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে তারাবির নামাজে ইমামতি করেন তিনি। একই দিন সকালে শালিখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাশি থাকায় করোনার নমুনা দেন তিনি।
আজ রবিবার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণাগার থেকে তার নমুনায় করোনা পজেটিভ হয়। যা জানার পর ইমামের নিজ গ্রাম পশ্চিমা ও মাগুরার ওই মসজিদ সম্পৃক্ত গ্রাম মাগুরার শালিখার আদাডাঙ্গা লকডাউন করা হয়।
এদিকে এ বিষয়ে মাগুরা সিভিল সার্জন অফিসের শিক্ষা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বলেন, ওই ইমামের শরীরে করোনা নিশ্চিত হবার পর শুধু শালিখার আদাডাঙ্গা গ্রাম নয়। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সাথে কথা বলে ইতিমধ্যে ওই ইমামের নিজ গ্রাম যশোরের বাঘারপাড়ার পশ্চিমা লকডাউন ঘোষণার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া উভয় এলাকায় স্বাস্থ্য সতর্কতার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
মাগুরা করোনা পরিস্থিতি বিষয়ে তিনি জানান, পশ্চিমা গ্রামের এই ব্যক্তিসহ রবিবার মাগুরার শ্রীপুরের জারিয়া গ্রামে ২৫ বছর বয়েসী আরও এক গার্মেন্টস কর্মীর শরীরে করোনা সনাক্ত হয়েছে। শনিবার ওই ইমাম ও ওই গার্মেন্টস কর্মীর নমুনা মাগুরা থেকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণাগারে পাঠানো হয়। এ নিয়ে মাগুরা থেকে যশোরে পাঠানো নমুনার মধ্যে ৪ জনের শরীরে করোনা সনাক্ত হলো।
তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত মোট পাঠানো ১৫৫ টি নমুনার মধ্যে ১৪৪ টি নমুনার ফল মাগুরায় এসেছে। যার মধ্যে পজেটিভ ৪ জন। বাকিরা নেগেটিভ। মাগুরার পজেটিভদের মধ্যে ৩ জন মাগুরার মৃগি ডাঙ্গা, জ্যোত শ্রীপুর ও মৃগি ডাঙ্গা গ্রামের। বাকি একজন ওই ইমামের বাড়ি যশোরের পশ্চিমা গ্রামের। প্রতিটি গ্রামই এখন লকডাউনের আওতায়। করোনা সনাক্ত প্রত্যেককে হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।