স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জে একদিনে সুস্থ হলেন ৬ করোনা রোগী। আজ শনি্ার সকালে সদর হাসপাতালে আইসোলেশনে থাকা ৩জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। দুইজন করোনা রোগী শাল্লা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুস্থ হয়েছেন। আরেকজন রোগী শাল্লায় নিজ বাড়ি থেকে সুস্থ হয়েছেন। আজ শনিবার (৯ মে) দুপুরে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে তাদেরকে সুস্থতার ছাড়পত্র দিয়ে বিদায় জানানো হয়। এর আগে আরও দুইজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান। বর্তমানে সদর হাসপাতালে ১২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন আছেন।
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ১২ এপ্রিল দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার টাইলা গ্রামের হাফিজা বেগম (২০), একই উপজেলার মিজানুর রহমান (২১) এবং দিরাই উপজেলার রনি রায় (২৫) নামের এক তরুণের কোভিড-১৯ পজেটিভ ধরা পড়ে। রনি ঢাকার নারায়ণগঞ্জে কাজ করতেন। হাফিজা দিরাই হাসপাতালে তার অসুস্থ স্বজনকে দেখতে গিয়ে আক্রান্ত হন। মিজানুর রহমানও বহিরাগতদের সংস্পর্শে গিয়ে আক্রান্ত হন। তাদেরকে ১২ এপ্রিল সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে নিয়ে আসা হয়। সেখানে নিয়মিত তাদেরকে দুই বেলা সাধারণ জ্বর ও সর্দি কাশির চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাছাড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের প্রত্যেককে আপেল, কলা, ডিমসহ পুষ্টিকর খাদ্যসহ পান ও গার্গলের জন্য গরম পানি সরবরাহ করতেন। স্বজনরা হাসপাতালের আইসোলেশনের লোকদের মাধ্যমে লেবু, আদা সরবরাহ করতেন। হাসপাতালে আসার পর আরও দুইবার তাদের কোভিড-১৯ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এই দু’টি রিপোর্টে তাদের করোনা নেগেটিভ আসে।
সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়া তরুণী হাফিজা আক্তার বলেন, প্রথমে আমার হালকা সর্দি, জ্বর ও কাশি ছিল। পরীক্ষা করানোর পর করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসে। তারপর সরকারিভাবে আমাকে সুনামগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
তিনি বলেন, আক্রান্ত হওয়ার পর আমি মনোবল হারাইনি। রোগও আমাকে তেমন কাবু করতে পারেনি। তবে হাসপতালে একটি ওয়ার্ডে একা একা থাকতে খারাপ লাগতো। হাসপাতালে সকালে ৫ প্রজাতির এবং বিকেলে ২ প্রজাতির ওষুধ সেবন করানো হতো। আপেল, কলা, ডিম ও খাবার দেওয়া হতো। গরম পানিও দেওয়া হতো। আমার ভাই বাড়ি থেকে লেবু ও আদা নিয়ে আসতেন। গরম পানি দিয়ে আমি গার্গল করতাম এবং পান করতাম। লেবু ও আদা মিশ্রিত পানি খেতাম।
ওই তরুণী দ্বারা সংক্রমিত হয়ে তার বাবা ও এক চাচাতো ভাইও বর্তমানে হাসপাতালে আইসোলেশনে আছেন। নতুন করে গত মঙ্গলবার তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ করোনা আইসোলেশন সেলের প্রধান ডা. জিয়াউর রহমান বলেন, আজ আমরা তিনজনকে ছাড়পত্র দিয়েছি। বয়সে তারা সবাই তরুণ। তারা এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। আরও ১২ জনের মধ্যে ১০ জনের রিপোর্ট পজেটিভ। বাকি দুইজনের রিপোর্ট এখনও আসেনি। তবে দুই দফায় হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ৫ জন রোগী বাড়িতে ফিরে গেছেন।
সিভিল সার্জন ডা. শামসুদ্দিন বলেন, সুনামগঞ্জ জেলায় ৬ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন আজ। সদর হাসপাতাল থেকে ৩ জন এবং শাল্লা উপজেলা থেকে আরো ৩ জন।