বিশেষ প্রতিনিধি, শাল্লা:
সুনামগঞ্জের শাল্লায় করোনায় কর্মহীন নিম্নমধ্যবিত্ত ও হতদরিদ্রদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আর্থিক সহায়তার তালিকায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
আর এসব অনিয়ম সংশোধনে মাঠে নেমেছে উপজেলা প্রশাসন।
অভিযোগের আলোকে উপজেলার ৪ নং শাল্লা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের তালিকাটি তদন্ত করে দেখা যায় স্বজনপ্রীতি অনিয়মে ভরপুর ।
স্থানীয় সংবাদকর্মীরা নিজ উদ্যোগে উপজেলার ৩৬ টি ওয়ার্ডের মধ্যে একটি ওয়ার্ডের তালিকা যাচাই করে অনিয়মের সত্যতা পায়।
অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায় ওয়ার্ডের ৫৫ জন ভুক্তভোগীর নামের মধ্যে কয়েকজনের নাম সঠিক থালেও তাদের নামের পাশের মোবাইল নাম্বারটি মেম্বারের আত্মীয়ের। তালিকায় অধিকাংশ বিত্তশালীরা স্থান পেয়েছে।স্থান পেয়েছে হবিগঞ্জ জেলার
আজমিরিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মেম্বারের আত্মীয় স্থান পেয়েছে শাল্লার তালিকায় ।
উক্ত ওয়ার্ডের
মনুয়া গ্রামের মেম্বারের স্বজন ধনীব্যক্তি সেমল হোসেন ও আবুল কাশেম আপন দুই ভাইয়ের নাম রয়েছে। এছাড়া মেম্বারের আপন দুই ভাই দিলোয়ার হোসেন ও ওয়াহাবুল মিয়াসহ হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মেম্বারের আপন বোনের ছেলে নয়ন মিয়ার নাম তালিকায় রয়েছে। গ্রামে বেশ কয়েকটি অসহায় পরিবার থাকার পর ও ভিত্তশালী আপন তিন ভাই আতাবুর মিয়া,ও বায়দুর রহমান,বিশাল মিয়া রয়েছে তালিকায়। আরো দেখা যায় আপন দুই ভাই একরামুল এবং কামরুল ইসলামসহ মহফুজুর রহমান চৌধুরী,সাজেদা বেগম চৌধুরী,ছামিয়া চৌধুরীর মত ধনীব্যক্তিদের নাম বাদ যায়নি তালিকা থেকে।
এসব অনিয়মের কারণে ঈদের আগে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ সহায়তা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় উপজেলার ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। সারা দেশের ন্যায় শাল্লার এই তালিকা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে উপজেলা জুড়ে।প্রশ্ন উঠেছে ৫৫ জনের একটি তালিকায় যদি এত অনিয়ম হয় তাহলে সারা উপজেলার চিত্র কি সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।
অনেকেই বলছেন যেহেতু, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এই অর্থ প্রদান করার কথা, তাই এই সুযোগে এক শ্রেণির ইউপি সদস্যগন তাদের সার্থ হাসিলের জন্য নিজের কিংবা স্বজনের মোবাইল নম্বার জুড়ে দিয়েছে সুবিধাভোগীদের নামের পাশে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মনুয়া গ্রামের একজন বলেন,তালিকায় অধিকাংশ মানুষ মেম্বার সাজু মিয়ার আত্মীয় স্বজন। আর এসব অনিয়ম ধামাচাপা দিতেই গ্রামের বেশ কয়েকজন বিত্তশালীর নাম তালিকায় দেওয়া হয়েছে বলে জনান।
এব্যপারে প্রশাসন কর্তৃক মনোনীত
তদন্তকারী কর্মকর্তা মখন্দ দাস বলেন, আমরা তদন্ত করে অনেক ভুল পেয়েছি ফোন নাম্বার ঠিক করে দিয়েছি।আর একজনের বাড়ি অন্য উপজেলায় পেয়েছি। তবে ভিত্তশালীদের নাম পরিবর্তনের কোন নির্দেশনা পাইনি বলে জানান।
এব্যপারে শাল্লা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জামান চৌধুরী ফুলমিয়া বলেন ৫ নং ওয়ার্ডের তালিকায় কিছু অনিয়মের খবর পেয়েছি এইগুলা সংশোধনের কাজ চলছে।
শাল্লা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল মুক্তাদির হোসেন বলেন কিছু কিছু অনিয়মের সংবাদ পাচ্ছি। তালিকা যাচাই বাচাই করার জন্য তদন্তকারী অফিসা নিয়োগ করা হয়েছে। যেখানে যে অনিয়ম পাবে তারা সেই বিষয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।