হাসান বশির::
সুনামগঞ্জের বিশ^ম্ভরপুর উপজেলায় পাহাড়ি ঢলে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সীমান্ত নদী ধোপাজানের এ ঢলে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে উপজেলা প্রশাসন। রোববার রাতে হঠাৎ পানি বেড়ে গিয়ে ভাদেরটেক মনিপুর হাটি এলাকার প্রায় ৩ কিলোমিটার সড়কের উপর দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবাহিত হয়ে দুটি আধাপাকা ও ১টি কাচা বাড়ি সহ ধোপাজানের শাখা নদীর পাড় সংলগ্ন প্রায় দু’শ ফুট রাস্তা ভেঙ্গে গেছে। স্থানীয়রা জানান, রাতের প্রথম প্রহরে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে হঠাৎ ফুলে উঠে ধোপাজান নদী এবং চার দিক শনশন শব্দ হয়, মুহুর্তেই রাস্তাঘাট ও ঘর বাড়ি ভেঙ্গে যায়, খুলে দেওয়া হয় বোরো ফসলরক্ষাকারী গজারিয়া রাবার ড্যাম, স্থানীয়দের তথ্য ও সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায়, রাস্তার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে রাস্তায় ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ঢলের প্রবলবেগে ৩টি আধাপাকা ও কাচাঘর সর্ম্পূন্ন নিশ্চিন্ন হয়ে গেছে। আশ পাশ এলাকার ২০ একরের বেশি মৌসুমী সবজি ফসল বিনষ্ট হয়েছে। অন্যদিকে রাবারড্যাম খুলে দেওয়ায় এবং রাস্তার একটি অংশে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়ে প্রায় চার কিলোমিটার রাস্তার উপর দিয়ে ধোপাজান চলতি নদীর পানি প্রবাহিত হয়ে হাওরের উচু অংশ-চালবন গুলিকিত্তা, জগন্নাথপুর এলাকায় প্রবেশ করে সেচজমির বোরোধান পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের কারণে এক দিকে রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়া আর রাবারড্যাম খুলে দেওয়া নিয়ে অন্যদিকে নিচু এলাকার বোরোজাতের সেচজমির ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়া নিয়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সলুকাবাদ ইউপির সংরক্ষিত আসনের সদস্য মনোয়ারা বেগম বলেন গজারিয়া রাবারড্যাম ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সলুকাবাদ ইউপির সাধারণ সদস্য শাহ পরান রাতে রাবার ড্যাম খুলে দেওয়ায় জগন্নাথপুর. চালবন, গুলিকিত্তা সহ আশ পাশের ৪০ থেকে ৫০ একর জমিরি ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অপরদিকে ভাদেরটেক এলাকার সাধারণ লোকজন বলছেন রাবারড্যাম খুলে না দিলে ঢলের আঘাতে রাস্তার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো বেরে যেতো এবং ইউপি সদস্যকে চাপের মুখে পড়তে হতো। আরেকটি পক্ষ বলছে ব্যক্তিসার্থের কারণে ইউপি সদস্য দেরি করে রাবারড্যাম খুলে দেওয়ায় রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া অপরদিকে একই উপজেলার বাদাঘাট দক্ষিণ ইউপির যাদুকাটা নদীর উপর নির্মিত রাবারড্যাম উপচে পানি প্রবাহিত হয়ে আঙ্গারুলি হাওরের উচু অংশে সেচকৃত বেরোরকম ফসলের আংশিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার দাস জানান, শক্তিয়ারখলা এলাকায় ৮ বিঘা জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তবে গজারিয়া রাবারড্যাম সংলগ্ন রাস্তা ভেঙ্গে ও নদীরপাড় বা রাস্তা উপচে গিয়ে খরচারহাওরে যে পানি প্রবেশ করেছে এতে করে ফসলের কোন ক্ষতি হবে না। কয়েক দিনের মধ্যে এ ধান কেটে উঠানো সম্ভব। এখানে খরচার হাওরের উচু অংশে সেচরকম ১শ বিঘার কম জমি রয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন ঢলের কারণে সব মিলিয়ে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় সমাজকর্মী ও উপজেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল কাদির বলেন প্রতিবছর ঢলের কারণে ভাদেরটেক মনিপুর হাটি গ্রামের মানুষ আশঙ্কায় থাকেন। রোববার তাৎক্ষনিকভাবে রাবারড্যাম খুলে না দিলে ব্যপক্ষ ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। বাঘবেড় বাজার সংলগ্ন খাল সহ ইউনিয়নের সব ক’টি খাল খনন করা হলে ঢলে ক্ষতির আশঙ্কা কমবে এবং ফসলি জমিও রক্ষা পাবে। গজারিয়া রাবার ড্যাম ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শাহ পরান বলেন ঢলের কারণে ক্ষতির আশঙ্কা দেখে রাবার ড্যাম পথে পানি প্রবাহের তাৎক্ষনাৎ সুযোগ করে দিয়েছি। এ ইউনিয়নের নিচু এলাকার কিছু বোরোকম জমির ধান কাটা শেষ না হওয়ায় আগে রাবার ড্যাম খুলে দেওয়া হয়নি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সমীর বিশ^াস জানান, রোববার সরেজমিন পরিদর্শন করে এসেছি ঢলের কারণে রাস্তা ও ঘরবাড়ির বেশ ক্ষতি হয়েছে।