1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০২:০৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
জামালগঞ্জে নবাগত জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভা সিলেটে শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসারকে অপসারণের দাবিতে গণস্বাক্ষর কার্যক্রম ২৫০ শয্যা হাসপাতালে সেবার মান বাড়ানোর দাবিতে মতবিনিময় সুনামগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ বন্যার্তদের সহায়তায় সুনামগঞ্জে শিল্পকলা একাডেমির ব্যতিক্রমী ছবি আঁকার কর্মসূচি জগন্নাথপুরে শিক্ষিকা লাঞ্চিত: দোষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী সকল কালাকানুন বাতিলের দাবি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পান্নার মরদেহ হস্থান্তর করলো মেঘালয় পুলিশ কাদের সিদ্দিকী বললেন: বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ আর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এক নয় বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বন্যায় ২০ লাখ শিশু ঝুঁকিতে : ইউনিসেফ

হাওরের ডেমি ধান হাসি ফুটিয়েছে গরিব কাঙালের মুখে।। শামস শামীম

  • আপডেট টাইম :: রবিবার, ৩১ মে, ২০২০, ১০.০৮ এএম
  • ৩৪১ বার পড়া হয়েছে

হাওরের বোরো ধান কাটা শেষ হলে এক মাসের মধ্যে ডেমি ধান (উপ ধান) গজায় ধানকাটা ক্ষেতে। ফলন হয় এক তৃতিয়াংশ। এই ধান ক্ষেতের মালিক কাটতে পারেনা। কাটলে অলক্ষী হয় এমন মিথ চালু আছে। তবে ক্ষেতের মালিকের অলক্ষীর এই ধান হাওরের গরিব কাঙালের কাছে লক্ষীর ধান হয়ে দেখা দেয়। এখন হাওরের লক্ষীর ডেমি ধান কাটছেন এলাকার গরিব ও শ্রমজীবী মানুষেরা। করোনায় অসহায় ও শ্রম বন্ধ হয়ে যাওয়া গরিব ও অসহায় পরিবারের কাছে এই ডেমি ধান আশির্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে। গরিব কাঙালের কাছে আশির্বাদের এই ডেমি ধান তাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।
কৃষকরা জানান, বোরো ধান কাটার এক মাসের মধ্যেই কাটা ধানের ক্ষেত থেকে গজায় ডেমি ধান। বছর ভালো হলে এবং প্রকৃতি সদয় থাকলে এই ধান গরিব মানুষেরা সংগ্রহ করেন। এ বছর করোনা ভয় জয় করে হাওরের সম্পূর্ণ বোরো ফসল গোলায় তুলেছেন হাওরের সংগ্রামী কৃষক। ধান কাটার মওসুমে বৃষ্টিপাত, পাহাড়ি ঢল, বন্যা, বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি না হওয়ায় স্বস্তিতে ধান কেটেছে সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় প্রায় আড়াই লাখ বোরোচাষী। ধান কাটার পরও প্রকৃতি ভালো ছিল। তাই ডেমিধান গজিয়ে পেকেও গেছে। এবারের চাষকৃত ২ লাখ ১৯ হাজার হেক্টর জমিতেও আবাদকৃত জমিতে ফলনও হয়েছে বাম্পার। গত মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই হাওরের পুরো ধানকাটা শেষ হয়েছে। এখন দিরাই, শাল্লা ও জগন্নাথপুর উপজেলাসহ বিভিন্ন উপজেলার হাওরে এলাকার গরিব ও অসহায় মানুষেরা ডেমি ধান কাটছেন।
সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই হাওরের বোরো ধান সম্পূর্ণ কাটা শেষ হয়েছে। ধান কাটা শেষ হলে বিআর ২৮ ও বিআর ২৯ ধানে মূলত বেশি ডেমি গজায়। তবে ধান কাটার পরপরই হাওরে পানি চলে আসায় ডেমি গজাতে পারেনা। কিন্তু এবছর অন্যান্য বছরের চেয়ে ভালো হওয়ায় কিছু কিছু এলাকায় ডেমিও গজিয়েছে।
হাওর এলাকার স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি ও প্রবীণ কৃষরা জানান হাওরের বোরা ধান কাটার পর ডেমি ধান গজায়। এই ধান জমির মালিক কেটে নিলে অমঙ্গল হয় বলে হাওরাঞ্চলে মিথ রয়েছে। তাই এই ডেমি ধানের প্রতি জমির মালিকের আগ্রহ থাকেনা। বিপরিতে ধানকাটার পর ডেমি ধানের স্বপ্নে বিভোর থাকেন এলাকার হতদরিদ্র ও অসহায় লোকজন। তারা জমি পছন্দ করে নিজের দখলে রাখতে ধান গজানোয় সময় থেকেই সময় দেন। ডেমি ধান পাকার পর সেই ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে যান। এখন ধান পেকে যাওয়ায় শাল্লা উপজেলার ছায়ার হাওরে শনিবার অনেক গরিব ও অসহায় পরিবারের লোকদের ধান কাটতে দেখা গেছে।
এদিকে গত সপ্তাহে হাওর পরিদর্শনে যান সিলেট সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট শামীমা শাহরিয়ার। এসময় তিনি হালির হাওর ও শনির হাওরে ডেমি ধান দেখতে পান। তখন মাছ ধরতে একটি মহল বাঁধ কেটে হাওরে পানি ডুকানোর চেষ্টা করছিল। তিনি গরিব মানুষের কথা ভেবে হাওরের বাঁধ কাটায় নিষেধ দিয়ে তাদেরকে ডেমি ধান তোলা পর্যন্ত অপেক্ষা করার আহ্বান জানান। পরে পুলিশও ঘটনাস্থলে গিয়ে জেলেদের বাঁধ না কাটতে নিষেধ দিয়ে আসে। তবে এই দুই হাওরের ডেমি ধান এখন পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে।
শাল্লা উপজেলার গুঙ্গিয়ার গাও গ্রামের শ্রমজীবী হরিধন দাস বলেন, ইবারের ভালো বছরের লাইগ্যা আমরা ধানও খাটছি ভালয় ভালয়। এখন আমরার মতো গরিবরা ডেমিও ধান খাটতে পারতাছি। ইতা ধানে ফলন কম অইলেও মন্দ না। একদিনে ২-৩ মন ধন তুলতাম পারতাছি।
একই গ্রামের শ্রমজীবী রবীন্দ্র দাস বলেন, ‘আমরার এলাকাত গরিব মানুষ বেশি। এর লাইগ্যা অনেকে ডেমি ধান খাটতো নামছে। ই ধান জমিনের মালিক খাটেনা। তারার অলক্ষী অয়। ইতার লাগি আমরার মতো গরিবর মানুষরা খাটে।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন বলেন, হাওরের বোরো ধান কাটা শেষে এক মাসের মধ্যেই বিআর ২৮, ২৯ ধানেই ডেমি ধান গজায়। এবছর মওসুম ভালো হওয়ায় এখন বিভিন্ন এলাকার হাওরে ডেমি ধান কাটছেন কৃষকরা।
সুনামগঞ্জ-সিলেট সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট শামীমা শাহরিয়ার বলেন, ডেমি ধান বা বাই প্রোডাক্ট ধান হাওরের লক্ষী বা সৌভাগ্য হিসাবে ধারনা করা হয়। মিথ আছে জমির মালিক যদি এই ধান কাটে তাহলে দুঃখ আসে। তাই পড়শি বা গরিব মানুষেরা এই ডেমি ধান কেটে ঘরে তুলে। প্রতি বছর বা এক যুগেও এমন সৌভাগ্যের বৈশাখ আসে না। এ বছর আল্লার রহমতে হাওরের মানুষ এই সৌভাগ্যের বছর পেলো। আমাদের নদী খনন এবং বাঁধ নিয়ন্ত্রণ যদি পরিকল্পিত উপায়ে করা যায় তাহলে প্রতিবছর এই ডেমি ধানও হাওরের গরিব কাঙালেরা ঘরে তুলতে পারবে।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!