সাইফ উল্লাহ:
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের মমিনপুর গ্রামে মসজিদের নামাজ নিয়ে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ৭ জন । এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ থানায় অভিযোগ দাখিল করেন উপজেলার মমিনপুর গ্রামের মকবুল হোসেন এর ছেলে মিয়াছিন মিয়া (৫০)। বিবাদী গণ একই ইউনিয়নের মমিন পুর গ্রামের নবী হোসেন, মো. মোনাহর আলী, মো. ছাত্তার মিয়া, মো. আব্দুল আলী, এসডু মিয়া সহ ২৪ জন আসামী করে জামালগঞ্জ থানায় অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। মিয়াছিন মিয়ার লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, বিবাদীগণ দাঙ্গাবাজ, জুলুমবাজ, পরধন লোভী ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক বটে। বিবাদীদের সাথে আমার পুর্ব হইতে মমিনপুর বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গা ও মমিনপুর জামে মসজিদের ইমাম সাহেবের পিছনে নামাজ পড়াকে কেন্দ্র করিয়া, বিরোধ চলিয়া আসিতেছে। ঘটনার আগের দিন এলাকার গন্যমান্য লোকজন জানেন যে, ঈদের নামাজ অন্য ইমাম সাহেব পড়াবেন। ঘটনার তারিখ ২৫ মে ঈদের নামাজের জন্য মমিনপুর জামে মসজিদে গেলে নতুন ইমাম সাহেব নামাজ না পড়াইয়া, সাবেক ইমাম সাহেব জুবায়ের আহমেদ ঈদের নামাজ পড়ানোর জন্য দাড়াইলে আমি বলি যে, আমি এই ইমাম সাহেবের পিছনে নামাজ পড়িব না। তখন গন্যমান্য লোক জন দুটি জামাতে বিভক্ত করিয়া দিয়ে দুজন ইমাম সাহেব দিয়ে ঈদের নামাজের ব্যবস্থা করেন। ঈদের নামাজ আদায় করার পর আমি বাড়ীতে যাওয়ার পথে সকাল অনুমানিক ১০ ঘটিকার সময় ঘটনাস্থল মমিনপুর উত্তর হাটি জৈনক নাছির মিয়ার বাড়ীর সামনে পাকা রাস্তায় পৌছা মাত্রই পূর্ব হইতে উৎপেতে থাকা বিবাদীগণ বেআইনী জনতাবদ্ধে হাতে রামদা, দা, লাঠি, লোহার রড নিয়া আমার পথ রোধ করিয়া দাড়ায় এবং আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করিতে থাকে। তখন আমি প্রতিবাদ করিলে ১নং বিবাদী হুমকি দিয়া বলে যে, শালার ভেটারে প্রাণে মারিয়া ফেল। উক্ত হুকুম পাওয়ার সাথে সাথে বর্ণিত সকল বিবাদীগণ আমাকে মারপিট করিতে আগাইয়া আসে, আমি বিবাদীদেরকে মারমুখি দেখিয়া প্রাণের ভয়ে ডাক- চিৎকার করিলে ১ নং থেকে ৭ নং সাক্ষীগণ আগাইয়া আসিলে ২নং বিবাদী মোনাহর আলী তার হাতে থাকা রামদা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ১ নং সাক্ষী মতলিব মিয়ার মাথা লক্ষ্য করিয়া কোপ মারিলে উক্ত কোপ তার মাথার মধ্যভাগে পড়িয়া গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম হয়। ১ নং বিবাদী নবী হোসেন তার হাতে থাকা সুলফি দিয়া প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে ১ নং সাক্ষী মতলিব মিয়ার বুক লক্ষ করিয়া ঘা মারিলে উক্ত ঘা মতলিব মিয়ার বাম হাতের দ্ধারা ফিরাইলে বাম হাতে কজ্বিতে পড়িয়া রক্তাক্ত জখম হয়। ৩নং বিবাদী ছত্তার মিয়া তার হাতে থাকা দা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ২নং সাক্ষী মোসলেম মিয়ার মাথা লক্ষ করিয়া কোপ মারিলে উক্ত কোপ মোসলেম মিয়ার মাথার মধ্যভাগে পড়িয়া গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম হয়। ১৫ নং বিবাদী আবুল হোসেন তার হাতে থাকা দা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ২ নং মোসলেম মিয়ার মাথা লক্ষ করিয়া কোপ মারিলে উক্ত কোপ মোসলেম মিয়া বাম হাত দ্বারা ফিরাইলে কোপটি তার বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলের নিছে পরিয়া রক্তাক্ত জখম হয়। ১২ নং বিবাদী শফিক মিয়ার হাতে থাকা দা দিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে ৩ নং সাক্ষী আব্দুল ওয়াহেদ এর মাথা লক্ষ করিয়া কোপ মারিলে উক্ত কোপ তার মাথার বাম পাশে পড়িয়া গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম হয়। অন্যান্য বিবাদীগণ ৪নং থেকে ৭নং সাক্ষীকে এলোপাথারিক লাটি, লোহার রড দিয়া বাইরাইয়া শরীরের বিভিন্নস্থানে নীলাফুলা জখম করে। আমি এবং জখমীদের ডাক- চিৎকারে সাক্ষী সহ আশপাশের লোকজন আগাইয়া আসিয়া বিবাদীর কবল হইতে আমাদের রক্ষা করে। পরবর্তী আমি আমার আত্নীয় স্বজনের সহায়তায় জখমীদের চিকিৎসার জন্য জামালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়া আসিয়া কর্তব্যরত ডাক্তার জখমী সাক্ষী ৪নং থেকে ৭নং সাক্ষীকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন এবং ৩নং সাক্ষীকে ভর্তি রোগী হিসেবে চিকিৎসা প্রদান করেন। জখমী ১নং সাক্ষী মতলিব মিয়া, ২ নং সাক্ষী মোসলেম মিয়ার গুরুত্বর অবস্থা দেখিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। চিকিৎসার কাজে ব্যস্ত থাকার থানায় আসিয়া অভিযোগ দায়ের করিতে বিলম্ব হইল। মহোদয় আমার অভিযোগের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে আপনার মর্জি হয়।
মঙ্গলবার ২ জুন বিকেল আড়াই ঘটিকায় এব্যাপারে জানতে চাইলে জামালগঞ্জ থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা মো. সাইফুল আলম বলেন, তদন্ত ক্রমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।