স্টাফ রিপোর্টার::
গত ১১ জুন বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথপরিক্রমা’ শিরোনামে বাজেট প্রস্তাব পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। এই বাজেটকে করোনাকালীন সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথপরিক্রমা মূলক, সময়োপযোগী ও জনকল্যাণমুখী বাজেট হিসেবে আখ্যায়িতক করে প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খায়রুল হুতা চপল। দুর্যোগ সময়ে এই বাজেট প্রণয়নের জন্য গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী, অর্থসচিবসহ বাজেট প্রণয়নে সংশ্লিষ্টদের সুনামগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও অভিন্দনন জানান। চেম্বার সভাপতি তার বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বলেন, করোনা মোকাবিলার পাশাপাশি মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা নিশ্চিত করা, মানুষ যেন কষ্ট না পায়, সেদিকে লক্ষ রেখেই সব প্রতিকূলতাকে জয় করে বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে। মেগা প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের গতিশীলতা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। এটি একটি জনবান্ধব ও জীবনঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক পরিকল্পনা। তাছাড়া তিনি প্রতিক্রিয়ায় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ডলুড়া শুল্কস্টেশন চালুর দাবিও জানান। এটি চালু হলে সুনামগঞ্জ জেলায় কর্মসংস্থানসহ সরকার বিপুল রাজস্ব আদায়ের সুযোগ পাবে।
প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন,
এবারের বাজেটে মোট আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। বাজেটে শিক্ষায় সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হলেও স্বাস্থ্য খাতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। গত অর্থবছরের তুলনায় স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বেড়েছে ২৩ শতাংশ। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলে তা দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশে আনার পরিকল্পনাও বাজেট প্রস্তাবনায় রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও কৃষি উন্নয়ন, পল্লী উন্নয়ন, খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা সম্প্রসারণ, ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প রক্ষ্যা, কর্মসংস্থানসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের, রেল পথ ও সড়ক পথ নির্মাণ এর ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে, খাদ্যনিরাপত্তাসহ সামাজিক নিরাপত্তাব্যবস্থা বিস্তৃত ও জোরদার করা হয়েছেএবং কৃষি ও কৃষিবহির্ভূত বিভিন্ন ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য নানা ধরনের ভর্তুকি ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পোশাক শিল্পে উৎস কর কমানো হয়েছে, মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর ঘোষণা মাফিক বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক ব্যাবসায়ী ও শিল্প খাতে আর্থিক প্রণোদনা দিচ্ছে।
ভ্যাট/শুল্ক/কর কমানোর কারণে যে সকল পণ্যের দাম কমবে: স্বাস্থ্য উপকরণের দাম কমবে, চিকিৎসা সামগ্রী ও ঔষদের দাম কমবে, সারের দাম আরও কমবে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উৎসে আয়কর কমানোর কারণে চাল, আটা, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, চিনি ইত্যাদির দাম কমবে। পোল্ট্রি ও ডেইরি শিল্পের কাঁচামালের দাম কমবে, কৃষি যন্ত্রপাতি যেমন পাওয়ার রিপার, পাওয়ার টিলার অপারেটেড সিডার, কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার, রোটারি টিলারের ওপর ব্যবসায়ী পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
ভ্যাট/শুল্ক/কর বৃদ্ধির কারণে যে সকল পণ্যের দাম বাড়বে: বিলাস দ্রব্যের দাম বাড়বে, গাড়ির মালিকদের খরচ বাড়বে, কার ও জিপ এর দাম বাড়বে, প্রসাধনসামগ্রীর, বিমান ও হেলিকপ্টার ভাড়া, তামাক পণ্যের, /সিগারেটের, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত টিকেটের ইত্যাদির।
স্বল্প আয়ের ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতার আয়কর কমবে। এত কঠিন সময়ে এবং এত অনিশ্চয়তা ও দ্বিধাদ্বন্দ্ব নিয়ে জাতীয় বাজেট তৈরির কোনো নজির বাংলাদেশের আর নাই। তাই আমি মনে করি, এটা দুঃসময়ের আশাবাদী বাজেট, এই বাজেট কৃষক বান্ধব, যুগান্তকারী, অভূতপূর্ব, সময়োপযোগী, জনকল্যাণমুখী, ব্যবসাবান্ধব ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অনুকূল বাজেট। দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করতে প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারের অর্জন ও উদ্ভূত বর্তমান পরিস্থিতির সমন্বয়ে টেকসই ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কৃষক বান্ধব, সাধারণ জনগণের উন্নয়নমূলক ও ব্যবসাবান্ধব সুপরিকল্পিত কর্মপন্থা ও ব্যবস্থাপনা কৌশল বাজেটে প্রস্তাব করা হয়েছে বলে মনে করি।